Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

ঢাকায় আসছে কোরবানির পশু:

প্রস্তুত হাটে ক্রেতার অপেক্ষা

রায়হান উদ্দিন তন্ময়

জুলাই ৪, ২০২২, ০৩:১৫ এএম


প্রস্তুত হাটে ক্রেতার অপেক্ষা

ঈদুল আজহার আর কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে প্রস্তুত রাজধানীর পশুর হাট। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসছে নানা জাতের গরু, ছাগল ও ভেড়া। প্রস্তুত হাটে ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন বেপারীরা। 

এবার স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে রাজধানীর দুই সিটিতে বসছে ২১টি পশুর হাট। দুই সিটি জানিয়েছে, ৬ জুলাই থেকে পুরোদমে শুরু হবে বেচা-বিক্রি, চলবে ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এবারো ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ হাটগুলোতে রয়েছে পশু চিকিৎসার ব্যবস্থাও। 

এছাড়া উত্তর সিটির ছয় হাটে মিলবে ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা। ইজারাদার ও বেপারীরা বলছেন, এখনো সব হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু আসেনি। তবে দু-একদিনের মধ্যে হাটগুলো কোরবানির পশুতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। বিক্রি পুরোপুরি শুরু হলেই চাহিদা অনুযায়ী চাঁদ রাত পর্যন্ত পশু আনা হবে বলে জানান তারা। 

গাবতলীর স্থায়ী হাট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে পর্যাপ্ত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া রয়েছে। দিন দিন বাড়ছে ক্রেতার উপস্থিতি। বেপরীরা জানান, ঈদের তো আরও কয়েকদিন দিন বাকি আছে। এ কারণে ক্রেতারা হাটে আসছেন, ঘুরে ঘুরে দেখছেন। তবে বিক্রির পরিমাণ অনেক কম। 

এছাড়া কমলাপুর, নতুন বাজার সাঈদ নগর ও আফতাব নগরসহ রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলো ঘুরে দেখা যায়, সব হাটের প্রস্তুতিও যেমন শেষ, তেমনি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সকাল বিকাল কোরবানির পশু আসছে। 

এদিকে হাটগুলোতে কোরবানির পশু অনেক থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। যারা আসছেন তারা দাম-দর করে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ গরুর দাম যাচাই করতেও হাটে এসেছেন। এর মধ্যে অনেকে পরিবারের ছোট বড় সদস্যদের নিয়ে গরু দেখাতে নিয়ে আসছেন। বাজারের অবস্থা ও চাহিদা মোতাবেক ঈদের আগের দিন পর্যন্ত কোরবানির পশু হাটে আনা হবে বলে জানান বেপারীরা।

ইজারাদাররা বলছেন, দু-একদিনের মধ্যে পশুর হাট পুরোপুরি জমে উঠবে। ৬ জুলাই থেকে পুরোদমে বেচাকেনাও শুরু হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি তাদের থেকেও সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হাটে মাইকে প্রচার-প্রচারণাও করা হচ্ছে। এছাড়া গরুর চিকিৎসার ব্যবস্থাও হাটে রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে হাটগুলোর প্রবেশপথে সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে।

বেপারীরা জানান, রাজধানীর হাটগুলোতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে গরু আনা হয়েছে। স্থায়ী হাটগুলোতে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। আর অস্থায়ী হাটগুলোতেও পশু রয়েছে, আরও আসছে। তবে এখনো সব হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু আসেনি। দু-একদিনের মধ্যে হাটগুলো পশুতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। বেপারীরা ক্রেতা আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে স্থায়ী হাটে ক্রেতার উপস্থিতি কম। আর অস্থায়ী হাটে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। বিক্রি শুরু হলে অবস্থা বুঝে আরও কোরবানির পশু আনা হবে। 

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, দুই সিটিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ২১টি হাট বসানো হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটিতে স্থায়ী হাট বসেছে গাবতলীতে। এছাড়া উত্তর সিটিতে ৯টি অস্থায়ী হাট এবং দক্ষিণ সিটিতে ১০টি অস্থায়ী হাটসহ একটি স্থায়ী হাট বসেছে। 

পাশাপাশি ডিজিটাল হাটের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দুই সিটিতে হাটগুলোতে ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন পশু বেচাকেনা চলবে। এদিকে প্রথমবারের মতো উত্তর সিটি কর্পোরেশন ছয়টি পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থাও করেছে। বিক্রেতারা ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পশু বিক্রির টাকা গ্রহণ করতে পারবেন। পশু বিক্রির টাকা গ্রহণ করতে তাদের হাতে থাকবে পয়েন্ট অব সেলস যন্ত্র। যার মাধ্যমে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিক্রয়মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন ক্রেতারা।

 পাশাপাশি গরু বিক্রির টাকা উত্তোলনে ব্যাপারীদেরও কোনো মাশুল গুনতে হবে না। ডিএনসিসির আওতাভুক্ত গাবতলী, বছিলা, আফতাবনগর, ভাটারা সাঈদ নগর, উত্তরা ও কাওলা পশুর হাটে এ ডিজিটাল লেনদেন বুথ বসানো হবে। বুথগুলো পরিচালনা করবে ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক ও মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ। 

কমলাপুর হাটে কুষ্টিয়া থেকে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন দিপু রহমান। তিনি বলেন, আমি ২০টি গরু নিয়ে আসছি। ক্রেতা আসছে। দাম দরও হচ্ছে। ঈদের দু-একদিন আগ থেকে পুরোদমে বেচা-বিক্রি শুরু হবে বলে প্রত্যাশা তার। নতুন বাজার সাঈদ নগর হাটে নাটোর ও ময়মনসিংহ থেকে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন বেপারী লতিফুল ইসলাম ও বেপারী হালিম মিয়া। তারা জানান, পশু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় আছি। এখন ক্রেতা আসছে। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই ঈদের আগের দিন বেশি গরু বিক্রি হয়ে থাকে। 

গাবতলী হাটের বেপারীরা জানান, কোরবানির পশু তো যথেষ্ট আছেই। ক্রেতাও আছে, গরুর দামদরও হচ্ছে। তবে বিক্রি এখন কম হলেও ঈদের আগে সব বেচাকেনা হয়ে যাবে। নতুন বাজার (ভাটারা) সাঈদ নগর হাটের ইজারাদার মো. সুরুজ্জামান বলেন, আমাদের হাটে অনেক কোরবানির পশু ইতোমধ্যে এসেছে। আরও আসছে। বেপারীদের জন্য নিরাপত্তাসহ সব ধরনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের লোকজনও কাজ করছে।   

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে আমাদের মোট ১০টি হাট বসেছে। হাটগুলো প্রস্তুতও রয়েছে। সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়া ছয় হাটে ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থাও রয়েছে। ৬ জুলাই থেকে পুরোপুরি কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হবে।
 

Link copied!