Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

বিজয়ের ৫১ বছর

স্বপ্নজয়ের উপমা বাংলাদেশ

নুর মোহাম্মদ মিঠু

ডিসেম্বর ১৬, ২০২২, ০১:০৭ এএম


স্বপ্নজয়ের উপমা বাংলাদেশ

আজ মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন-মুক্ত ভূখণ্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। সেই স্বাধীন-মুক্ত বাংলাদেশের বয়স এখন ৫১ পেরিয়ে ৫২ বছর। স্বাধীনতার এই পরিসরে দেশ ও জাতি অনেক ঘটন-অঘটন, চড়াই-উৎরাইয়ের সাক্ষী হয়েছে। কখনো জাতির জীবনে এসেছে হতাশা-অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়।

আবার সেই আঁধার ফুঁড়েই এগিয়ে গেছে দেশ। আজ উন্নয়ন-অগ্রগতির এক নতুন বাংলাদেশ। সামনে আরও সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় উজ্জীবিত বাংলাদেশ। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত দিয়ে আঁকা লাল-সবুজের মানচিত্র। শূন্য থেকে যাত্রা শুরু, যা এরই মধ্যে বিশ্বদরবারে উন্নয়নের বিস্ময় নামে পেয়েছে পরিচিতি। বন্যা, দুর্যোগ ও নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন অর্থনীতি ও আর্থসামাজিকসহ বেশির ভাগ সূচকেই উদীয়মান রাষ্ট্র।

নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও ডিজিটালাইজেশনের স্বপ্ন অতিক্রম করে ইতোমধ্যেই নতুন স্বপ্ন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ জয়ের টার্গেটেও এগিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত সোনার বাংলা। যে বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অর্জনের নেপথ্যেই রয়েছে কঠোর পরিশ্রম আর নানামুখী ষড়যন্ত্র ও বহুমুখী বাধা।

সর্বশেষ গেল দুটি বছরেও বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধারূপে আবির্ভুত হয়েছিল বৈশ্বিক সংকট করোনা মহামারি। করোনার ভয়াবহতার মধ্য দিয়েই ২০২০ সালে জাতিকে কাটাতে হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। এরপরের বছর ২০২১ সাল; আগের বছরের মতোই করোনার দাপটের মধ্যেই উদযাপন করতে হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।

এরই মধ্যে স্বাধীনতার ৫২ বছরে পা রেখে অতিক্রমও করতে যাচ্ছে বহু দুর্লভ স্বপ্নজয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিশ্বের বুকে বুক উচিয়ে দাঁড়ানো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। একান্ন বছর আগে সবুজের সমারোহ সোনার বাংলাকে শ্মশান করে গিয়েছিল পাকিস্তানিরা। ব্রিটিশদের চেয়েও লুটেরা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত যুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামে অধিষ্টিত করা হয়। শোষক, ঘাতক, নির্যাতনকারী, অত্যাচারী, সামপ্রদায়িক ও নৃশংস শাসক পাকিস্তান।

তবে একান্ন বছরের ২৯ বছর বাংলাদেশের পাকিস্তানিরা দেশটি শাসন করেছে ও এই দেশটিকে পাকিস্তান বানানোর সর্বাত্মক অপচেষ্টা চালিয়েছে। বস্তুত একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পরও পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এখনো যুদ্ধ করতে হচ্ছে আমাদের। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা দেশটি পরিচালনা করেছেন মাত্র ২২ বছরের মতো।

স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধেকেরও অনেক কম সময়। এই সময়ে বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লব সম্পূর্ণ মিস করার পর বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার হাত ধরে তৃতীয় শিল্পবিপ্লবে শরিক হওয়া ও  শেখ হাসিনার হাত ধরে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব-পঞ্চম শিল্পবিপ্লব বা ডিজিটাল যুগে নেতৃত্ব দেয়ার জায়গাটাও একটু আলোচনা করব। স্বপ্নজয়ের এ যাত্রা অতীতের পথ ধরে নয়, নতুন দিগন্তের পথে ডিজিটাল সভ্যতায় সব পশ্চাৎপদতা অতিক্রম করে সারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে চাই। এরই মধ্যে ২০৪১ সালের ঠিকানা— ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ঘোষিত হয়েছে। একই সাথে ২০৭১ ও ২১০০ সাল নিয়েও রয়েছে মহাপরিকল্পনা। ২০২২ সালের অর্জনটাকে মূল্যায়ন করেই সামনের পথ চলা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতি : দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির প্রধান সূচক বিবেচনা করা হয় অর্থনীতিকে। অর্থনীতির উন্নতি মানেই দেশের উন্নয়ন। উন্নত অর্থনীতি ছাড়া ইচ্ছা থাকলেও দেশকে এগিয়ে নেয়া যায় না। অর্থনীতি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বর্তমান সরকার আগামী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এশিয়ার পঞ্চম টাইগারে পরিণত হবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অর্জন অনেক বেশি।

গত ১০ বছর করোনার আগে পর্যন্ত অসাধারণ গতিশীলতায় এগিয়েছি। ১৯৬০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চারটি দেশকে এশিয়ান টাইগার ধরা হয়। তারা ৬, ৭, ৮ এই অনুপাতে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আর আমরা একই ধারাবাহিকতায় ৬, ৭, ৮-এ চলে গেছি। আমরা যদি আর পাঁচ বছর থাকি তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা পঞ্চম এশিয়ান টাইগার হিসেবে আসতে পারব।’ করোনাকালেও অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন করেছি। এমনকি করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন টিকা দিতে সক্ষমতা দেখাতে পারেনি বা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারেনি, তখন বাংলাদেশ তাদের কাছে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, বলেন তিনি।

২০০৫-০৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা। সেটি এখন সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। মানুষের গড় আয়ু ২০০৫-০৬ সময়ে ছিল ৫৯ বছর। এখন সেটি ৭৩ বছর। এখন শিশু মৃত্যুহার কমে প্রতি হাজারে ৮৪ থেকে ২৮ এবং মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখে ৩৭০ থেকে ১৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে। ওই সময় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৭৩ কোটি টাকা। এই খাতে চলতি অর্থবছরে এক লাখ সাত হাজার ৬১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। যা ভাবনার অতীত। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা চার হাজার ৯০০ মেগাওয়াট থেকে ২৪ হাজার ৪২১ মেগাওয়াটে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৪৭ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী. গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। ২০০৮-০৯ বছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ১৫.৫৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করবে বলে আশা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০০৮-০৯ বছরের ৭ দশমিক চার-সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে এ হার প্রায় সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয় ও মাছ-মাংস, ডিম, শাকসবজি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে এবং ইলিশ উৎপাদনকারী ১১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি বিশেষ ধাপ।

ইতোমধ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। টেকসই উত্তরণের লক্ষ্যে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন কৌশল। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২, দেশব্যাপী ডিজিটাল সংযুক্তি, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এসবের কোনোটা চালু হয়েছে এবং কতকটা চলতি বছরেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

এছাড়া সারাদেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, দুই ডজনের বেশি হাই-টেক পার্ক ও আইটি ভিলেজ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। কাজ চলছে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এবং দেশব্যাপী মোবাইল ও ওয়াইফাই সংযোগের। ফোর-জি প্রচলনের পর বাংলাদেশ এখন ফাইভ-জির যুগেও প্রবেশ করেছে। এসব হিসাবে ২০২১ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান— কে কেমন আছে এমন প্রশ্নে এক কথায় বক্তব্য— একুশ সালে অর্থাৎ স্বাধীনতার ৫১ বছরেই অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে। ৫২তম বছরটিই পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকার বছর।

জাতীয় আয় : বাংলাদেশ ৪১ হাজার ৮০ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান ২৯৬ বিলিয়ন ডলার। যা তুলনাযোগ্যও নয়। মাথা পিছু আয় বাংলাদেশ দুই হাজার ৫৫৪ ডলার, পাকিস্তান এক হাজার ৫৪৩ ডলার। প্রায় অর্ধেক। রপ্তানি আয় বাংলাদেশ তিন হাজার ৭৮৮ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান দুই হাজার ৫৬৩ বিলিয়ন ডলার। এক দশকে গড় প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশ শতকরা ৬.৭৬,  পাকিস্তান শতকরা ৩.৯৬।

দারিদ্র্যের হার : বাংলাদেশ ২০.৫, পাকিস্তান ৩৯.২০ (প্রায় দ্বিগুণ)  বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ : বাংলাদেশ ৪৮ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান ২৪ বিলিয়ন ডলার। একদম দ্বিগুণ। মুদ্রামান : বাংলাদেশের এক টাকা সমান পাকিস্তানের দুই টাকা ১২ পয়সা। গড়

আয়ু : বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর আর পাকিস্তানের ৬৭ বছর।

শিশুমৃত্যু : পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু মৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ২৫ জন, পাকিস্তানে প্রতি হাজারে মারা যায় ৫৯ জন।

শিশু শিক্ষা : বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাপর্ব শেষ করছে ৯৮ শতাংশ শিশু, পাকিস্তানে ৭২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক অর্থনৈতিক পরামর্শ সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল (ডব্লিউইএলটি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে জিডিপির আকারের ভিত্তিতে বৃহৎ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ৪১তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের অবস্থান যেখানে ৪৪তম।

বাংলাদেশ ও ভারত : আগামী পাঁচ বছর মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। অনেক সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ এখন ভারতের চেয়ে এগিয়ে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছে এবং সোমালিয়াকে দেয়া ঋণ মওকুফ করে দিয়েছে। খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, ভারতের সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান বলেছেন, কয়েক দশক ধরে এই বাংলাদেশ ছিল অবজ্ঞার পাত্র, কিন্তু এখন আর নয়। এটি এখন উন্নয়নের একটি উজ্জ্বল মডেল। দেশটির যেভাবে জন্ম হয়েছে, এর কাছ থেকে অন্য দেশগুলোর অনেক শেখার আছে।

দারিদ্র্য : দরিদ্র দেশ হিসেবেও বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের এক সময় একটি পরিচয় ছিল। বিশ্বের মোট দরিদ্র জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৩২ শতাংশ মানুষ বাস করত এই বাংলাদেশেই। তবে দারিদ্র্য পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে গত ১৩ বছরে। স্বাধীনতার পরপর ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে দেশে দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করত সাড়ে ৮২ শতাংশ মানুষ। ১৯৯১ সালে এই হার ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ। আর ২০১০ সালে এই হার কমে দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৮ সালের জুন মাস শেষে এই হার ছিল ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৯ সালের জুন মাসের শেষে দেশের দারিদ্র্যের হার সাড়ে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। এদিকে একই বছর জুন শেষে অতি দারিদ্র্য হার নেমেছে সাড়ে ১০ শতাংশে। এর এক বছর আগে এর হার ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। এই বাংলাদেশেরই অগ্রগতির ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সোনার বাংলা বানানোর যে অদম্য বাসনা নিয়ে তিনি দূরদর্শী সিদ্ধান্তসমূহ নিয়ে সেগুলো বাস্তবায়নও করেছেন। এখন এগিয়ে নিচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজয় দিবসের কর্মসূচি : জাতীয় পর্যায়ে এদিন ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিক, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।

Link copied!