Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

অবস্থান কর্মসূচিতে সংঘাত

মো. মাসুম বিল্লাহ

এপ্রিল ২, ২০২৩, ১১:৪৪ এএম


অবস্থান কর্মসূচিতে সংঘাত
  • আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে নাটোরে একজন ‘গুলিবিদ্ধ’
  • খুলনায় পুলিশ বিএনপি সংঘর্ষ আহত ১২
  • রাজশাহীতে বিএনপি আহ্বায়কসহ সাতজন আটক

বিএনপির পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বিএনপির সংঘর্ষের  ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে শত শত। আটকে সংখ্যাও অনেক। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

নাটোরে আ. লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে ‘গুলিবিদ্ধ’ ১ : নাটোরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে স্থানীয় এক যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি হলেন কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ। গতকাল শনিবার দুপুর ২টায় শহরের উপশহরে একই স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সভা আহ্বান করে। এর সূত্র ধরে এই সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। তারা হলেন যুবদল কর্মী শৈবাল ও রনি ব্যাপারী এবং জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগেরও দুই কর্মী আহত হয়েছেন।

তারা হলেন জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন ও পৌর যুবলীগ আহ্বায়ক সায়েম হোসেন উজ্জ্বল। গুরুতর আহত অবস্থায় শরিফকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু গুলিবর্ষণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গুলি চালিয়েছে। গুলি চালানোর মতো কোনো উসকানি দেয়নি বিএনপি। নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপি কর্মীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় রাস্তার দুই দিকে চলাচলকারী মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

খুলনায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ১২ : খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বিকেলে খুলনা মহানগরের কেডি ঘোষ রোডের বিএনপি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সড়কটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির নেতারা। একই সঙ্গে বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন—  জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এবাদুল হক রুবায়েত, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইশতিয়াক হোসেন ইস্তি ও রূপসা উপজেলা ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমেদসহ ১২ জন। সংঘর্ষের পর পুলিশ কেডি ঘোষ রোডের বিএনপির অফিস ঘেরাও করে রাখে। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ শতাধিক নেতাকর্মী আটকা পড়েন। এ ঘটনার পর বিকেল ৪টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেছে বিএনপি। প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। নিতাই রায় চৌধুরী দাবি করেন, পুলিশ বিনা কারণে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে বিএনপির ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে বিএনপির দুটি দল দুই দিক থেকে আসে, স্লোগান দিতে থাকে। এদের মধ্যে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলে হঠাৎ করে আমাদের ইটপাটকেল মারা শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য গ্যাসগান ও শর্টগান মারতে বাধ্য হই। তাদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়েছেন।

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ আটক ৭ : রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদসহ দলটির সাত নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে বিএনপির পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় গণকপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। পুলিশ বলছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু দাবি করেছেন, তারা ২০ নেতাকর্মীর সন্ধান পাচ্ছেন না।

ধারণা করছেন, পুলিশ তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করছে না। পুলিশের হামলায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। মিনু বলেন, আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাসহ স্থানীয় চারটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম ও পরিচয় দিতে পারেননি। পুলিশ যাদের আটক করেছে তারা হলেন— জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, পবা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোজাফফর হোসেন, চারঘাটের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মৃধা, চারঘাট শলুয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক এমদাদুল হক, যুবদল নেতা ও বাঘা উপজেলার হরিরামপুর এলাকার স্বপন, যুবদল নেতা ও উপজেলার রামরামা গ্রামের মনির মণ্ডল, গোদাগাড়ী উপজেলার ছাত্রদল নেতা আমিনুল ইসলাম।

জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ও চাঁদের ব্যক্তিগত সহকারী শামীম সরকার এদের নাম-ঠিকানা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া জোনের উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল  বলেন, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির জন্য ভুবন মোহন পার্কে অবস্থানের অনুমতি ছিল। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীরা সেটি না করে বাটার মোড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছিলেন। এ কারণে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক চাঁদসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে।’
 

Link copied!