Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা

গৌরীপুরে ১৫ টির মধ্যে ১১ টি লেভেলক্রসিং অরক্ষিত

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর

আগস্ট ১০, ২০২২, ০৫:৩৭ পিএম


গৌরীপুরে ১৫ টির মধ্যে ১১ টি লেভেলক্রসিং অরক্ষিত

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে অরক্ষিত রয়েছে ১৫ টির মধ্যে ১১ টি লেভেলক্রসিং। আর যেগুলোর মধ্যে ব্যারিয়ার রয়েছে সেগুলোর মধ্যে নেই কোন গেটম্যান। তাই প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তাদের মধ্যে উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের উপর দিয়ে রেললাইনে শ্যামগঞ্জ স্টেশনের আগে লেভেলক্রসিং ঝুকিপূর্ণ। এখানে নতুন বাজার থাকায় সব সময় ভিড় লেগেই থাকে।

এ লেভেক্রসিং দিয়ে চলাচল করে নেত্রকোণা, জারিয়া,দুর্গাপুরগামী যানবাহন। এখানে একজন গেইটম্যান নিয়োজিত থাকলেও তার দায়িত্বে তাকে দেখা যায় না এমন অভিযোগ স্থানীয়রা করেছেন। বেশীর ভাগ সময়ই লেভেলক্রসিংটি থাকে অরক্ষিত।

গৌরীপুর জংশন থেকে শ্যামগঞ্জ জংশন রেলপথে পশ্চিম ভালুকায় ১, গজন্দর গ্রামে ১, নন্দুরায় ১,কাউরাট গ্রামে ২, ঝিনাইকান্দি গ্রামে ১ ও মইলাকান্দা গ্রামে ২ টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। তার মধ্যে শাহবাজপুর ও কাউরাটে ১ সহ মইলাকান্দায় ২ টি রেলক্রসিংয়ের অনুমোদন রয়েছে।

বাকীগুলোর কোন অনুমোদন নেই এমন তথ্যই পাওয়া গেল সরজমিন ঘুরে। অন্যদিকে গৌরীপুর ভৈরব রেলপথে পৌর শহরের বাড়িওয়ালাপাড়া, পশ্চিম দাপুনিয়ায়,বাসষ্ট্যান্ড, সতিষা ও রামগোপালপুর ইউনিয়নে ভবামীপুর ১ টি করে রেলক্রসিং রয়েছে। তার মধ্যে সতিষা রেলক্রসিংয়ের অনুমোদন নেই। পৌরশহরের বাসষ্ট্যান্ড 
অপরদিকে গৌরীপুর-ময়মনসিংহ রেলপথে অনুমোদনহীন সদর ইউনিয়নের শালিহর ও চান্দের সাটিয়া গ্রামে ১ টি করে রেলক্রসিং রয়েছে।

বাড়িওয়ালাপাড়া, সতিষা,বাসষ্ট্যান্ড,ভবানীপুর রেলক্রসিংয়ের গেইটম্যান নিয়োজিত থাকলে বাকিগুলোর গেইটম্যান না থাকায় সেগুলো রয়েছে অরক্ষিত ও ঝুকিঁপূর্ণ। ভবানীপুর রেলক্রসিংয়ের গেইটম্যান নিয়োজিত থাকলেও তাকে তার দায়িত্বে কখনও দেখা মিলে না এমন অভিযোগ রয়েছে।

রেলসূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর রেলজংশন হয়ে ভৈরব,চট্রগ্রাম,শ্যামগঞ্জ রেল জংশন হয়ে নেত্রকোণা, মোহনগঞ্জ,জারিয়া-জাঞ্জাইল লোকাল,আন্তনগর,কমিউনিটি ট্রেন যাতায়াত করে। এ পথে আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস,হাওর এক্সপ্রেস,বলাকা এক্সপ্রেস, দুইটি কমিউটারসহ ২৪ ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু করোনার পর থেকে ভৈরব-ময়মনসিংহ লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আকবর আলী বলেন, শ্যামগঞ্জ বাজারের ভিতর মইলাকান্দা গ্রামে কয়েক হাতের ব্যবধানে দুটি লেভেলক্রসিং রযেছে পাশাপাশি। একটি মোহনগঞ্জ  ও অপরটি জারিয়া রেলপথ। লেভেলক্রসিং দুইটি বাজারের মধ্যে হওয়ায় সড়কের ব্যস্ততা থাকে অনেক বেশী। তাই সব সময় ভিড় লেগেই থাকে।

গত ইউপি নিবার্চনের সময় এই রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সাথে অটোরিক্সার ধাক্কা লাগায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। সম্প্রতি এখানে একজন গেইটম্যান দিলেও তিনি তার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেন না বলে জানান স্থানীয়রা। একজন অটোরিক্সা চালক তার নাম হাসিম মিয়া।

তিনি বলেন, রেললাইনের উভয়পাশে দোকান-পাট হওয়াতে দুর থেকে ট্রেন আসা চোখে পড়ে না। এখানে ব্যারিয়ার থাকলেও গেইটম্যান থাকে না তাই সব সময় দুর্ঘটনা ঘটে। গৌরীপুর থেকে ঈশ্বরগঞ্জ স্টেশান পযর্ন্ত ৫টি, শ্যামগঞ্জ রেলপথে ৮টি, ময়মনসিংহের পথে ২টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। তার মধ্যে অনুমোদন রয়েছে ঈশ্বরগঞ্জ রেলপথে ৪ ও শ্যামগঞ্জ রেলপথে ৪টি। আর বাকীগুলো অনুমোদনহীন। এমন তথ্যই দিয়েছেন গৌরীপুর রেলজংশনের কেবিন মাষ্টার আতাউল করিম।

এক প্রশ্নের উত্তরে স্টেশন মাষ্টার অখিল চন্দ্র দাস জানান, দুইভাগে বিভক্ত রেলের লেভেলক্রসিং। একটি ট্রাফিক ও অন্যটি ইঞ্জিনিয়ারিং। লেভেলক্রিসং রয়েছে গৌরীপুের ১৫ টি। ৮টি হলো অনুমোদিত লেভেলক্রসিং। গেইটম্যান  আছে চারটিতেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং যেন মৃত্যুফাঁদ। সারা দেশে রেলপথে মোট ক্রসিং আছে ২ হাজার ৮৫৬টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬১টিরই অনুমোদন নেই। আবার ১ হাজার ৪৯৫টি বৈধ ক্রসিংয়ের মধ্যে ৬৩২টি ক্রসিংয়েই গেটম্যান নেই। রেলসূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এআই 

Link copied!