ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

৩১ শয্যার জনবলে চলে ৫০ শয্যার চিকিৎসা সেবা

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর

আগস্ট ২০, ২০২২, ০৫:১৬ পিএম

৩১ শয্যার জনবলে চলে ৫০ শয্যার চিকিৎসা সেবা

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চলে ৫০ শয্যার চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে নেই অপারেশন করার মত কোন ব্যবস্থা। তবে, হাসপাতালে চলে দালাল ও ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের দাপট। বিভিন্ন পরীক্ষা বাণিজ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন নেয়ার অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে।

এছাড়া হাসপাতালের খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর স্বজনরা। তাছাড়া নিরাপত্তার অভাবে রাতে কোনো নারী চিকিৎসক হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করতে চান না।

হাসপাতাল সুত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গত প্রায় ছয় বছর আগে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি চিকিৎসা সেবার মান। এছাড়া হাসপাতালে রয়েছে অ্যানালগ এক্সরে মেশিন। কোন সময় চলে আবার কোন সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এক্সরে প্রিন্ট ভাল আসে না। তবে, বর্তমানে এক্সরে মেশিন বন্ধ আছে ফিল্ম সঙ্কটে।

বর্তমানে হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল ভবনের চারপাশের ড্রেন থাকলেও ময়লা পানি অপসারণে হাসপাতালের বাইরে পৌরসভার কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। এতে চারদিকে জমেছে ময়লার স্তুপ। ফলে হাসপাতালের ড্রেনে জমে থাকা ময়লা পানি থেকে মশা মাছির ঝাঁক, প্রতিনিয়ত চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এদিকে, ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা সকাল থেকেই হাসপাতালের গেইটে লাইন ধরে দাড়িয়ে থাকে বিকেলে পর্যন্ত। জরুরি বিভাগে দেখা যায় ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির ভিরে জরুরি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা কঠিন হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা।

এছাড়া রোগী ডাক্তারের রুম থেকে বেরুলেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি করে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা, ওই প্রতিনিধরা স্থানীয় হওয়ায় হাসপাতালেন কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনা মানেন না তারা।

জানা গেছে হিমোগ্লোবিন, ইউরিন, আরইসহ অন্যান্য সাধারণ পরীক্ষা হাসপাতালে করানো হয়। তবে, হাসপাতালে নেই আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন। ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাইরের ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে করাতে হয় আল্ট্রাসনোগ্রাফি। হাসপাতালে মাঝে মাঝে নরমাল ডেলিভারী হয়। তবে, রোগীর অবস্থা খারাপ হলে পাঠাতে হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কারণ, হাসপাতালে নেই অ্যানেস্থেসিয়া, ওটি লাইট, ওটি টেবিলসহ অপারেশন থিয়েটারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।

হাসপাতালে ভর্তি দুলাল মিয়া জানান, ইনজেকশন মিংজেকশন লেইকা দেয় বাইরে তাইককা আনতে হয়, হাসপাতাল তাক’কা বড়ি টরি দেয় এই আরকি।

উপজেলার স্বল্প-পচ্চিম পাড়া থেকে আসা মোঃফারুক আহমেদ বলেন, আমার ছোট ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। এখানে সেবার মান আগের চাইতে কিছুটা ভাল হয়েছে। হাসপাতালে কিছু কিছু ওষুধ নিয়মিত দেয়। আবার কিছু ওষুধ বাইরে থেকেও কিনতে হবে।

উপজেলার মাওহা ইউনিয়ন থেকে আসা রহিমা বলেন, বোন অন্তঃসত্ত্বা তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ওষুধ বাহির থেকেই আনতে হইতেছে। কিন্তু হাসপাতালের খাবারের মান তেমন ভাল না। মাছ, ভাত ও ডাল দেয়। মাঝে মাঝে মাংস দেয়। আজ ডাল, ভাত ও এক টুকরা মাংস দিয়েছে। যা দিয়ে একজনের খাবারই হবে না।

পৌর এলাকার পূর্ব দাপুনিয়া এলাকা থেকে আসা আশ্রাব মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ভাবীকে নিয়ে হাসপাতালে আসছিলাম। আমরা বর্হিবিভাগে ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দিয়েছেন। তবে, হাসপাতাল থেকে কোন ওষুধ দেয়নি। বাইরের ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনতে হবে। কবির আহমেদ নামে একজন তার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল রোগীর ডায়রিয়া হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন রোগী আগের চাইতে ভাল। তবে, সব ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিচ্ছে না। কিছু ওষুধ বাইরে থেকেই আনতে হচ্ছে। ওষুধ কোম্পানীর একাধিক কর্মীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা কেউ কোন কথা বলেনি।

হাসপাতালের খাবারের ঠিকাদার ও স্থানীয় কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেন, আমি গত পাঁচ বছর যাবত হাসপাতালে খাবার দেই। তবে, এই পর্যন্ত খাবারের মান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলেনি। তবে সরকার একজন রোগীকে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য ১২৫ টাকা দেয়। এর মধ্যে ভ্যাট আছে। বর্তমান বাজারের যে অবস্থা ১২৫ টাকায় যা হয়। তাই আমি খাওয়াই। হাসপাতালে খাবার দিয়ে আমি কোন লাভ করি না। জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি মানুষের সেবা করি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল আহমেদ নাসের জানিয়েছেন ৫০ শয্যার চিকিৎসা সেবা চলছে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। চিকিৎসক কতজন কর্মরত রয়েছেন জানতে চাইলে তিনি সংখ্যা না জানিয়ে বলেন চিকিৎসকের কোন সংকট নেই, তবে বর্তমানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া, ওয়ার্ডবয় ও মালীর সংকট রয়েছে।

তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। টোকেন হাতে থাকলে রোগী থাকা পর্যন্ত সেবা দেওয়া হয়। প্রতিদিন বহির্বিভাগে কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালে জনবল কম বলেই কি হাসপাতালের চারপাশে ময়লা আবর্জনা জমেছে এমন প্রশ্নে করা হলে তিনি বলেন, এই দায়িত্ব পৌরসভার। তাদের সাথে কথা বলে ময়লা-আর্বজনা অপাসরণ করা হবে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের খাবারের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের রেটে ঠিকাদার হাসপাতালে খাবার দিচ্ছেন। সব প্রকার পন্যের দাম বেশি।তাই, হয়তো রোগীরা এমন অভিযোগ করছে। তবে, ঠিকাদারে সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে।হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির কারণে অনেক রোগীর সমস্যায় পড়েন বলে একাধিক রোগী অভিযোগ করেছেন। ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হাসপাতালের কোন নিয়ম কানুনই মানে না ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা। এই কারণে আমরা বিব্রত। তবে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এআই

Link copied!