ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
ফেনী জেনারেল হাসপাতাল

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার ১০ গুণ বেশি রোগী

এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী

এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী

সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার ১০ গুণ বেশি রোগী

শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনীর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, জ্বরসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব।

আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক। স্থানীয় ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার প্রায় ১০ গুণ বেশি রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। শয্যা সংকটে মেঝে ও ওয়ার্ডের বাহিরে এবং গাছতলাসহ সিএনজি অটোরিকশায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই।

সোমবার সরেজমিনে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ওই ওয়ার্ডে ১৭ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৬ জন। শূন্য থেকে ৩০ বছরের রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন সেখানে। অন্য আরেকটি ভবনে তদূর্ধ্ব রোগীরা সেবা নিচ্ছেন। সেখানেও ২১ শয্যার বিপরীতে রোগীর সংখ্যা ৮০ জন।

অতিরিক্ত রোগীর চাপে হাসপাতাল আঙিনা ও গাছতলায় বিছানা পেতে খোলা আকাশের নিচে ও সিএনজি অটোরিকশায় চিকিৎসা নিতে নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডেও ২৬ শয্যার বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছে ১৩৬ জন।

এর মধ্যে জেলা সদর উপজেলার ধলিয়া এলাকা থেকে ৪ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন পায়রা আক্তার। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে সামনের গাছতলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, এখানে এতো বেশি রোগীর চাপ, ওয়ার্ডে থাকার মতো কোনো অবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে গাছতলায় খোলা আকাশের নিচে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছি। এ পরিস্থিতিতে রোদের মধ্যে আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে।

শর্শদি এলাকা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে এসেছেন সালমা রিয়া। একঘণ্টা অপেক্ষা করার পর নার্সরা স্যালাইন লাগিয়ে গেলেও ভেতরে জায়গা না পেয়ে রাস্তার পাশে মাদুর পেতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

সালমা রিয়া বলেন, হাসপাতালে এসেও খোলা আকাশের নিচে বসে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আমার মতো এমন অসংখ্য মানুষ জায়গা না পেয়ে রাস্তায় ও বাগানে এবং সিএনজি অটোরিকশায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুরের বাসিন্দা আলী আহম্মদ বলেন, গত ৩ দিন ধরে নাতনিকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। পরীক্ষায় নিউমোনিয়া শনাক্ত হয়েছে। এখানে এতো বেশি গরম যে সঙ্গে থাকা স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

পরশুরাম উপজেলার টেটেশ্বর এলাকার বাসিন্দা স্বপ্না আক্তার বলেন, গত দুইদিন কষ্ট করে বাইরে ছিলাম। এতো রোগীর চাপ ঠিকমতো কাউকে কাছে পাই না ডাকলে। কোনোভাবে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। পুরোপুরি সুস্থ না হয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা সাথী আক্তার বলেন, ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি রোগীর চিকিৎসা স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে ও জনবল বৃদ্ধি করে তাহলে রোগীরা বেশি উপকৃত হবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত আরেক জ্যেষ্ঠ সেবিকা বলেন, আগের সব সংখ্যা ছাপিয়ে রেকর্ড সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে। নিজেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কাজ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগীকে এ জনবল দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ শ্যামলী রানী বলেন, এ ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ১৩৬ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। সে তুলনায় নার্স নেই। রোগীর চাপ সামলাতে রীতিমতো তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সাম্মী বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে ফেনীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে বাড়তি ২১ শয্যার আলাদা ডায়রিয়া ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে এ সময়ে ফিল্ড হাসপাতাল (তাঁবুর তৈরি অস্থায়ী হাসপাতাল) করে সেবা দিতে সুবিধা দিতে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন জানান, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তদারকি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে। এছাড়া দাগনভূঞা, সোনাগাজী, ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় কমিউনিটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন অনেক রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

ইএইচ

Link copied!