জসীম উদ্দিন জয়নাল, পার্বত্যাঞ্চল
জুলাই ১৫, ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকার বেইলি রোডস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কেক কেটে উদ্বোধন করেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থার প্রসারে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও পিছিয়ে পড়া জনপদের উন্নয়নের প্রয়োজনে এই মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “পার্বত্য এলাকায় ‘Affirmative Action’ এবং মূলধারার সঙ্গে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। বাজেটের অতিরিক্ত বরাদ্দ ফেরত না দিয়ে সময়মতো ও যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।”
শিক্ষাখাতে গৃহীত নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা জানান, চলতি বছরের মধ্যে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ১০০টি স্কুলে ই-লার্নিং চালু করা হবে। ৪০টি হোস্টেলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে এবং দুর্গম এলাকায় স্কুল, কলেজ ও হোস্টেল স্থাপন করায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমেছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “এই শিক্ষাবিপ্লব একদিন দেশের অন্যান্য পশ্চাৎপদ অঞ্চলের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে। সকলে মিলে একটি শান্তিপূর্ণ, মর্যাদাসম্পন্ন ও উন্নত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”
সভাপতির বক্তব্যে সচিব মো. আব্দুল খালেক বলেন, “পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে বাস্তব ভিত্তিক পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। বাজেট বণ্টনের ক্ষেত্রে যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় আনা উচিত।”
তিনি পার্বত্য এলাকায় মন্ত্রণালয়ের নামে চাঁদা আদায়ের গুজব সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি তিনি স্থানীয়দের কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে চাঁদা না দেওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, অতিরিক্ত সচিব ড. রাশিদা ফেরদৌস এবং আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা।
ইএইচ