Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫,

৩ দফা দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা, রাত পেরোলেও সড়ক ছাড়েনি জবি

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

মে ১৫, ২০২৫, ১১:১৭ এএম


৩ দফা দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা, রাত পেরোলেও সড়ক ছাড়েনি জবি

তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে রাতভর অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় পাঁচশত শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করছিলেন। এর ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করলে পুলিশ কাকরাইল মসজিদ মোড়ে তাঁদের বাধা দেয়। শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড অতিক্রমের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, ব্যবহার করে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান। এতে অন্তত শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন বলে আন্দোলনকারীদের দাবি।

এরপর শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়েই অবস্থান নেন। রাত গড়িয়ে গেলেও তাঁরা সড়ক ছাড়েননি। কেউ সড়কে বসে, কেউবা শুয়ে অবস্থান করছেন। তাঁরা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।

আন্দোলনকারীদের তিনটি প্রধান দাবি হলো—
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা।
২. একই অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দেওয়া।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করা।

এদিকে গতকাল বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন। তাঁদের উপস্থিতিতে নতুন করে উদ্দীপ্ত হন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যায় উপাচার্যের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের শিক্ষক প্রতিনিধি দল যমুনা ভবনে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেন।

রাত ১০টার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় আসেন প্রধান উপদেষ্টার তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে বক্তব্য চলাকালে ভিড় থেকে কেউ তাঁর দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারলে তিনি আহত হন এবং তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ ঘটনার পর জবি ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “এই ঘটনার দায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”

এ বিষয়ে কাকরাইল মোড়ে দায়িত্বরত রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল কাদির বলেন, “রাতভর শিক্ষার্থীরা এখানে অবস্থান করেছেন। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আশপাশে যানজট তৈরি হয়েছে।”

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শুধু দাবির জন্য নয়, ন্যায়ের জন্য লড়ছি। আমরা বাড়ি ফিরব, কিন্তু দাবি আদায়ের পর।’

একই সুরে কথা বলেন শিক্ষক প্রতিনিধিরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকব।’

বিআরইউ

Link copied!