ইবি প্রতিনিধি
আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত হাইয়ার এডুকেশন একসিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পে অনিয়ম এবং পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, দক্ষ এবং স্বীকৃত গবেষকদের বাদ দিয়ে কম পরিচিত ও কম সাইটেশনধারী শিক্ষকদের প্রজেক্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। একই ফিল্ডের শিক্ষক না রেখে অন্য ফিল্ডের শিক্ষকরা প্রজেক্ট মূল্যায়ন করেছেন। পাশাপাশি, নিষিদ্ধ সংগঠনের সমর্থক কিছু শিক্ষক বিকল্প পদ্ধতিতে রিভিউয়ার হিসেবে কাজ করে প্রজেক্ট পাওয়ার সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক ড. মোহা. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মাওলা, অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান, অধ্যাপক ড. এ.টি.এম. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক ড. মো. জাহিদুল ইসলাম ও ড. মুহা. শরিফুল ইসলাম।
তাদের অভিযোগসমূহের মধ্যে রয়েছে — রিভিউ প্রক্রিয়ায় স্বার্থের দ্বন্দ্ব, ইউজিসির ব্লাইন্ড পিয়ার রিভিউ দাবির মিথ্যা প্রতিপাদন, অপ্রকাশিত বিভাগভিত্তিক বৈষম্য, গবেষণা গুণগত মানে বিভ্রান্তি, শিল্প সহযোগী ছাড়া ইন্ডাস্ট্রি প্রজেক্ট অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয় ও অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য, নৈতিক সংকট, প্রকল্প জমাদানের সময় বাড়িয়ে অনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি, রাজনৈতিক প্রভাব, এবং অর্থের অপচয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়—
১. অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যমান সকল প্রকল্প বাতিল করতে হবে।
২. ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান ও পরামর্শক অধ্যাপক মোজাহার আলীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নতুন করে রিভিউ করে প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে।
বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. মিজানুর রহমান বলেন, প্রায় ৪০ শতাংশ লো প্রোফাইলধারী (মোট সাইটেশন ১০০ এর কম) গবেষকদের প্রজেক্ট নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া ৫০০ এর কম সাইটেশনধারী ৪০ শতাংশ গবেষকেরও প্রজেক্ট নির্বাচন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গবেষকদের বাদ দিয়ে কম পরিচিত গবেষক নির্বাচন করা যৌক্তিক নয়।
অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, অনেক লো-প্রোফাইল আবেদনকারী, যাদের পিএইচডি নেই বা আন্তর্জাতিক মানের প্রকাশনা নেই, অনুদান পেয়েছেন, অথচ উন্নত প্রোফাইলধারী গবেষকরা বাদ পড়েছেন।
শিক্ষকবৃন্দ আরও বলেন, রিভিউ কমিটিতে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে দক্ষ বিশেষজ্ঞদের রাখা হয়নি, এমনকি পিএইচডি না করা ব্যক্তিকেও রিভিউ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া অর্থায়নে বিচারহীনতা, স্বচ্ছতার অভাব ও রাজনৈতিক প্রভাব থাকার কারণে প্রকৃত গবেষকরা বঞ্চিত হয়েছেন, যা গবেষণা ক্ষেত্রে এক ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে।
ইএইচ