Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪,

গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতি নেই: হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এপ্রিল ৯, ২০২৪, ১১:৪২ এএম


গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার অগ্রগতি নেই: হামাস

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনের দক্ষিণ গাজা থেকে ইতিমধ্যে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। আর এই সুযোগে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া খান ইউনিস নগরীতে ফিরে যেতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনিরা। এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার কোন অগ্রগতি নেই বলে মন্তব্য করেছে হামাস।

কয়েকমাস ধরে ইসরায়েলের বোমা হামলার কারণে খান ইউনিস ও এর আশেপাশের এলাকায় এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ফিলিস্তিনিরা চারিদিকে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তাদের বাড়িঘরও খুঁজে পাচ্ছে না। রোববার থেকেই খান ইউনিস থেকে সেনা সরাতে শুরু করে ইসরায়েল। খবর পেয়ে সেদিনই নগরীর নিজ বসতভিটায় ফিরতে শুরু করেন ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু অনেকেই বলেছেন, তারা বাড়িঘর কিছু খুঁজে পাননি।

গাজার যুদ্ধ শুরুর ছয়মাস পর দক্ষিণাঞ্চল থেকে একটি ব্রিগেড বাদে সব স্থল সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। তবে এই সেনা সরানোর মানেই যুদ্ধ শেষ হতে চলার লক্ষণ নয়। বরং যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ের জন্য নতুন করে সংগঠিত হতে দক্ষিণ গাজায় সেনা সংখ্যা কমানো হয়েছে বলেই জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)।

তবে দক্ষিণ থেকে সেনা প্রত্যাহারের ফলে গাজার রাফাহ নগরীতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বিলম্বিত হবে কি না তা স্পষ্ট জানা যায়নি। রাফাহে অভিযান চালানোর বিষয়ে ইসরায়েল এখনও বদ্ধপরিকর। তবে কবে নাগাদ এই অভিযান পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে রাফাহ নগরীতে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছে বহু ফিলিস্তিনি।

দক্ষিণের খান ইউনিস থেকে ইসরায়েলি সেনা চলে যাওয়ার কথা শুনে রাফাহে বাস করা এক ফিলিস্তিনি বিবিসি-কে বলেন, খান ইউনিসের আশ্রয় শিবিরে থাকা তার এক প্রতিবেশির বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে তিনি আশান্বিত। খান ইউনিসে বাড়িঘরে ফিরতে থাকা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কথা বলেছে  সাংবাদিকরা। এমনই এক ফিলিস্তিনি হামেদ ইয়াসির পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, এলাকা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। তিনি জানান, ৭ মাস ধরে কাপড় পাল্টাতে পারেননি। কেবল পোশাক রাতে খুলে রেখে সকালে পরেছেন। এখানে জীবন বলতে কিছু নেই, বলেন ইয়াসির।

এদিকে মিসরের রাজধানী কায়রোতে গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার কোনও অগ্রগতি হয়নি বলে দাবি করেছেন হামাসের এক কর্মকর্তা। সোমবার এক বিবৃতি এ কথা জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা। নতুন দফার আলোচনায় হামাস ছাড়াও ইসরায়েল, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে সোমবার মিসরের রাষ্ট্রীয় নিউজ টিভি চ্যানেল আল-কাহেরা জানিয়েছিল যে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। মিশরীয় ঊর্ধ্বতন সূত্রের বরাত দিয়ে চ্যানেলটি জানায়, অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনাধীন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার পরে একটি চুক্তি হতে পারে।

এরপরই হামাস কর্মকর্তা বলেন, সেনা প্রত্যাহার ও বন্দি বিনিময়ের অবস্থানে কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাই কায়রোতে নতুন করে আলোচনার কিছু নেই। শনিবার সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নসের আগমনের পর ইসরায়েল এবং হামাস রবিবার মিসরে প্রতিনিধিদল পাঠায়। গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্ত করতে এবং সেখানে মানবিক সঙ্কট কমাতে পারে কার্যকর একটি চুক্তিতে পৌঁছতে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। গাজা উপত্যকায় অক্টোবর থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল ও হামাস। তাদের প্রধান দাবি নিয়ে মতবিরোধ সমাধানে এখনও পর্যন্ত ব্যর্থ মধ্যস্থতাকারীরা।

গত অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রসনে অন্তত ৩৩ হাজার ১৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৭৫ হাজার ৮৮৬ জন। আর হামাসের আক্রমণে এক হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি নিহত হয়।

বিআরইউ

Link copied!