আমার সংবাদ ডেস্ক
জুন ৪, ২০২৫, ১০:০৫ এএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
জুন ৪, ২০২৫, ১০:০৫ এএম
মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রায় ৪০০ রাজনীতিবিদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মঙ্গলবার রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসেলেটিভ ও সংসদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
নতুন এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকার ও আরও চারটি শ্রেণির ব্যক্তিদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে নয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে তাদের পূর্বের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ পরিচয় আর বহাল থাকছে না।
কোন শ্রেণির স্বীকৃতি বদলানো হলো?
জারিকৃত অধ্যাদেশে যাদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তারা হলেন— প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) সংশ্লিষ্ট এমএনএ ও এমপিএরা।
বিদেশে অবস্থানরত পেশাজীবীরা, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রেখেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা, দূত ও সহকারীরা, যারা মুক্তিযুদ্ধকালে প্রবাসী সরকারের অধীনে কাজ করেছেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কলাকুশলী ও মুক্তিযুদ্ধপন্থী সাংবাদিকরা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ও সংগঠকরা।
এর আগে ২০২২ সালে প্রণীত ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’-এ এই সকল শ্রেণির ব্যক্তিদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। নতুন অধ্যাদেশে সেই আইন কার্যত বাতিল করে সংশ্লিষ্টদের পরিচয় বদলে দেওয়া হলো।
মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে থাকা রাজনীতিবিদদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবরে নানা মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর মতো মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের স্বীকৃতি প্রত্যাহার অনেকের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পুনর্লিখনের চেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিতর্কের প্রেক্ষাপটে গত ১৫ মে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনার শর্তে অনুমোদন করা হয়। পরে আইন মন্ত্রণালয় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ পরিচিতির বিষয়টি অনুমোদন দেয়। অবশেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর অধ্যাদেশটি কার্যকর হলো।
প্রভাব
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্টদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার আর থাকছে না। তবে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে তাদের নাম ইতিহাসে সংরক্ষিত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ও বিশ্লেষক মহলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপ মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় বিভাজন তৈরি করবে।
ইএইচ