ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

বাংলাদেশি দুই ভাইয়ের পানি পরিশোধন প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

বাংলাদেশি দুই ভাইয়ের পানি পরিশোধন প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি

বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এক নতুন মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই কিশোর বাংলাদেশি ভাই, শাফি বিন সুলতান ও সাবিক বিন সুলতান, Diamond Challenge 2025-এর আন্তর্জাতিক ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের উদ্ভাবিত BLUESHIELD FILTER নামের পানি পরিশোধন প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই বিশ্ব মঞ্চে আলোড়ন তুলেছে এবং ব্যবসায়িক উদ্ভাবন (Business Innovation) ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ৫ দলের মধ্যে স্থান পেয়েছে।

বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ইতিহাস সৃষ্টি

  • প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি দল এই প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক ফাইনালে পৌঁছেছে।
  • ৪৭টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য ও ৭৩টি দেশ থেকে ৩৩৯৮ জন তরুণ উদ্যোক্তা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, যেখানে ১২০০+ দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।
  • শুধুমাত্র ৩৮টি ব্যবসায়িক উদ্ভাবন প্রকল্প ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশি দুই কিশোর ভাইয়ের টিম অন্যতম।
  • এই প্রতিযোগিতার ১২৬টি দেশের ২০,০০০+ অ্যালামনাই রয়েছে, যারা বিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক হিসেবে সফল হয়েছেন।
  • বাংলাদেশি দুই কিশোর ভাইয়ের টিম বর্তমান অবস্থানে শীর্ষ ৫ দলের মধ্যে রয়েছে এবং তাদের লক্ষ্য ১ম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের ইতিহাসে আরও একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করা।
  • এই টিমের উদ্ভাবন বাস্তবসম্মত প্রয়োগযোগ্যতা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক পরিকল্পনার কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে।

উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক স্বীকৃতি

দুই ভাইয়ের উদ্ভাবিত পানি পরিশোধন প্রযুক্তি সহজে বহনযোগ্য, পরিবেশবান্ধব এবং বিশেষভাবে বন্যাপ্রবণ ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে থাকা অঞ্চলগুলোর জন্য কার্যকর। প্রযুক্তির সুরক্ষার স্বার্থে এটি পেটেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শাফি ও সাবিক তাদের উদ্ভাবন Limitless World Summit 2025-এ উপস্থাপন করবে, যা মে ১-২, যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের সামনে তারা তাদের প্রকল্প উপস্থাপন করবে।

তবে এই প্রযুক্তির বিস্তারিত তথ্য এখনই প্রকাশ করা হচ্ছে না, কারণ শাফি ও সাবিক শিগগিরই এর পেটেন্টের জন্য আবেদন করতে যাচ্ছে। বর্তমানে তাদের গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং এটি সম্পন্ন হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পেটেন্ট আবেদন করা হবে।

প্রযুক্তির প্রতি দীর্ঘদিনের আগ্রহ ও প্রস্তুতি

তারা দুই ভাই প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের প্রতি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত। প্রথম শ্রেণি থেকেই তারা রোবটিক্স ও প্রযুক্তি বিষয়ক কাজ করছেন বলেও জানান, এছাড় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন। তাদের এই অর্জনের পেছনে রয়েছে রয়েছেন তাদের বাবা সুলতান মহিউদ্দিন ভূঁইয়ার  গুরুত্বপূর্ণ অবদান, যিনি প্রতিযোগিতার প্রতিটি ধাপে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান তারা।

তাদের বাবা, সুলতান মহিউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন,"আমার সন্তানেরা ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রতি আগ্রহী ছিল। তাদের নিষ্ঠা ও পরিশ্রম আজকে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। আমি আশা করি, এই সাফল্য বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নতুন কিছু উদ্ভাবনে উৎসাহিত করবে।"

শাফি বিন সুলতান বলেন,"আমরা শুধুমাত্র আমাদের ব্যক্তিগত স্বপ্ন নয়, বরং বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরার জন্য কাজ করছি। আমাদের উদ্ভাবন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।"

সাবিক বিন সুলতান  বলেন,"আমাদের উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তিগত উন্নয়নই নয়, বরং এটি পরিবেশ ও মানবতার জন্য একটি সমাধান। বিশুদ্ধ পানি সংকট মোকাবিলায় এটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। বিশ্ব আমাদের প্রযুক্তিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এবং আমাদের আরও উদ্ভাবনে উৎসাহিত করছে।"

তাদের সাফল্য দেশের তরুণ প্রজন্মকে নতুন কিছু উদ্ভাবনে অনুপ্রাণিত করবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বড় অর্জনের জন্য তারা দেশবাসীর দোয়া ও সমর্থন কামনা করছে।

শাফি বিন সুলতান বর্তমানে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির (ক্লাস ১১) একজন মেধাবী ছাত্র। ছোটবেলা থেকেই তিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, এবং রোবোটিক্সের প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিনগুলো থেকেই তিনি প্রযুক্তি-ভিত্তিক প্রকল্প এবং গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। তার নেতৃত্বে "ব্লুশিল্ড ফিল্টার" দলটি ডায়মন্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫-এর আন্তর্জাতিক ফাইনালে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক অর্জন।

তিনি ভবিষ্যতে একজন সফল উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করতে চান। তার লক্ষ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলোর উদ্ভাবনী সমাধান তৈরি করা।

সাবিক বিন সুলতান বর্তমানে সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির (ক্লাস ১০) শিক্ষার্থী। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, এবং ব্যবসায়িক কৌশলের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দক্ষতা অর্জন করেছেন।

ডায়মন্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫-এর বিজনেস ইনোভেশন বিভাগে ব্লুশিল্ড ফিল্টার দলের অন্যতম প্রধান সদস্য হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার লক্ষ্য ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধান করা।

সুলতান মহিউদ্দিন ভূঁইয়া একজন অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ এবং ফেলো চার্টার্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট (FCMA)। বর্তমানে তিনি SSRM (Shahriar Steel Mills Ltd.)-এ প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (CFO) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার ফলে তার দুই পুত্র শাফি বিন সুলতান ও সাবিক বিন সুলতান প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের পথে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ডায়মন্ড চ্যালেঞ্জ ২০২৫-এ তার মেন্টরশিপ ছিল অপরিসীম, এবং তিনি ছেলেদের গবেষণা ও ব্যবসায়িক কৌশলগত পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

তিনি বিশ্বাস করেন, "সঠিক দিকনির্দেশনা এবং অধ্যবসায় একজন তরুণ উদ্ভাবককে বিশ্বজয়ী করতে পারে। আমি গর্বিত যে আমার সন্তানেরা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিনিধিত্ব করছে।" 

আরএস

 

 

 

Link copied!