Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

কাল থেকে বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১২, ২০২২, ১২:৩৭ এএম


কাল থেকে বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসছে আগামীকাল। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিইআরসির সদস্য মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে নতুন দাম ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পাইকারিতে দাম বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে এখনই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না। চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পিডিবি ভর্তুকি তুলে দিয়ে বিইআরসির কাছে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবে বর্তমান দর ইউনিটপ্রতি পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে আট টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব করে বিপিডিবি।

গত ১৮ মে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে গড়ে প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে জ্বালানি খাতের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শুনানির রায় ঘোষণা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ১৩ অক্টোবরের মধ্যেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে হবে।

বিইআরসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না। কারণ বিদ্যুৎ বিতরণকারী সব কোম্পানি বর্তমানে মুনাফায় রয়েছে। তাই বাল্ক বিদ্যুতের দাম ২০-২৫ শতাংশ বাড়ালে তাদের খুব একটা সমস্যা হবে না। বিইআরসির একাধিক সূত্র জানায়, কমিশন ১৫-২৫ শতাংশের মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত করে রেখেছে। এরই মধ্যে তা বিদ্যুৎ বিভাগে জমাও দেয়া হয়েছে।

সরকার চাইলে এটি কিছুটা বাড়াতে বা কমাতেও পারে। এক্ষেত্রে সরকার কতটা ভর্তুকি দেবে তার ওপর নির্ভর করবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর হার। বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা। গত ১৮ মে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে ইউনিটপ্রতি ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে আট টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল পিডিবি।

এর আগে যে কোনো দিন বিদ্যুতের দাম বাড়ার ঘোষণা আসতে পারে বলে গত রোববার বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেছিলেন।

শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়াবে সরকার : শিল্প খাতের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল মঙ্গলবার এফবিসিসিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে ‘বন্ড মার্কেট : দ্য আল্টিমেট লং টার্ম সল্যুশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

সালমান এফ রহমান বলেন, আগে ২৬ থেকে ৩০ টাকায় গ্যাস কিনে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ক্যাপটিক পাওয়ারের জন্য ১৬ টাকায় বিক্রি করেছে। এখন গ্যাস কেনা পড়ছে ৭৫ টাকা। এমন সময় ১৬ টাকায় গ্যাস বিক্রি করা সম্ভব নয়। তারপরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসতে এই গ্যাসের দাম কত টাকা করা যায় তা নির্ধারণ করার জন্য। আমি ইতোমধ্যে বিকেএমইএ, বিজিএমইএ এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। এখন ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেবেন গ্যাসের দাম কত টাকা করা যায়।

তিনি বলেন, সরকার কত টাকা সর্বোচ্চ ভর্তুকি দিতে পারবে আর ব্যবসায়ীরা কত টাকায় কিনতে পারবেন এ রকম একটা পর্যায়ে এনে আমরা মূল্য নির্ধারণ করতে পারলে গ্যাস সরবরাহ করতে পারব। কারণ আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা এলএনজি কিনতে পারছি কিন্তু দাম বেশি পড়ছে। প্রাইসের কারণে সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎ গ্যাসের সংকট এটা দেশের বড় সমস্যা। ইতোমধ্যে লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে। তবে এসব সমস্যা শুধু আমাদের একার নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে। এত বড় দেশ তারাও চাপে আছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে আমাদেরকেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের কিছু সমস্যা আছে যেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আরও কিছু সমস্যা রয়েছে যেগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। যেমন- আমাদের বন্দরে সমস্যা আছে, ট্যাক্স ভ্যাটের সমস্যা আছে, অবকাঠামোগত সমস্যা, রেগুলেটরি সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে; এগুলো আমরা ইচ্ছা করলেই সমাধান করতে পারি। এ বিষয়ে আমাদের নজর দেয়া দরকার।

বন্ড মার্কেট সম্পর্কে সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের বন্ড মার্কেট বিষয়ে একদিকে প্রচারের অভাব রয়েছে অন্যদিকে এ মার্কেটটার বিষয়ে অনেক বিজ্ঞ লোকও বুঝেন না। এই দুইটা বিষয়ে এখন জোর দিতে হবে। মানুষকে বুঝাতে হবে শেয়ারে বিনিয়োগের চেয়ে বন্ডে বিনিয়োগ বেশি ঝুঁকিমুক্ত। এসব বন্ডে বিনিয়োগ করলে আসল টাকা খোয়া যাওয়ার কোনো ভয় নেই। সরকারি বন্ড লেনদেন চালু হয়েছে এটা আমাদের জন্য একটি নতুন মাইলফলক।

উল্লেখ্য, গত সোমবার দেশের পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মতো ২৫০টি সরকারি সিকিউরিটিজ বা ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়েছে। যার বাজার মূলধন তিন লাখ ১৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা।

Link copied!