ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

চিকিৎসাব্যয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

মাহমুদুল হাসান

অক্টোবর ২৯, ২০২২, ১২:৫৪ এএম

চিকিৎসাব্যয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

দেশে ক্রমাগত বাড়ছে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর তৃতীয় কারণ স্ট্রোক। প্রতি ছয়জনে একজনের এই রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে স্ট্রোকে মৃৃত্যুর সংখ্যা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৫ হাজার ৫০২ জন। যা বেড়ে ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৩৬০ জনে।

সম্প্রতি সময়ে এই সংখ্যা নিশ্চয় আরও বেড়েছে। রোগী বাড়লেও বাড়েনি সরকারি চিকিৎসসেবাকেন্দ্রে স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা সুযোগ। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ১০০ শয্যার স্ট্রোক ডেডিকেটেড সেন্টার রয়েছে। ঢকা মেডিকেল কলেজে ২০ শয্যার  সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এছাড়াও দেশের টারশিয়ারি হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে অন্যান্য রোগীর সঙ্গে স্ট্রোকের চিকিৎসা করা হচ্ছে। শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভিড় করছেন। অথচ হাসপাতালটিতে মাত্র একটি ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) মেশিন চালু রয়েছে। মেশিনটি ১২ ঘণ্টা সচল থাকলেও মাত্র ১০ জনের এমআরআই করা সম্ভব। অন্য হাসপাতালের চিত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই বেশির ভাগ রোগীকে স্ট্রোক চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আর এতেই বছরে প্রায় ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। ডায়াগনোসিসের পর অর্থাভাবে অনেক প্রান্তিক রোগীরা চিকিৎসা কার্যক্রম অর্থাভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম. মোজাহেরুল হক বলেন, স্ট্রোকের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দেশে স্ট্রোক চিকিৎসায় সরকার ৩৭ শতাংশ খরচ করলেও রোগীর খরচ হয় ৬৩ শতাংশ। চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রতি বছর ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। দেশের এমন পরিস্থিতিতে আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘না না করলে সময় ক্ষেপণ, স্ট্রোক হলেও বাঁচবে জীবন।’ দিবসটিকে বেশ গুরুত্বের সাথে পালন করছে সরকারি, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ৫০ ভাগ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ধূমপান, নিয়মিত মদ্যপান, কায়িক পরিশ্রম না করা, ফাস্টফুড বা জাঙ্ক ফুড গ্রহণও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। কারো হঠাৎ স্ট্রোক হলে মুখ বেকে যাওয়া, হাত একদিকে ঝুঁলে যাবে বা শক্তি কম পাবে, চোখে ঝাঁপসা দেখা এবং রোগীর কথা জড়িয়ে যাবে। তীব্র মাথাব্যথা এবং রোগী হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারে। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিতে পারলে, শুধু ওষুধ দিয়েই রোগী একদিন পরই সুস্থ শরীরে হেঁটে বাড়ি ফিরতে পারে। কিন্তু দেশে অধিকাংশ সময় চিকিৎসকের কাছে আনতে দেরি হয় বলেই ক্ষতি বেশি হয়।

এদিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ২০১৮ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন ১১ দশমিক ৩৯ জন মানুষ। প্রায় ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে বাংলাদেশে। স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে সাতগুণ বেশি। নারীর চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশের মোট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর ৭১ শতাংশ পুরুষ আর ২৯ শতাংশ নারী। শহরের চেয়ে গ্রামে কিছুটা বেশি স্ট্রোকের প্রকোপ। শহরে ৪৭ শতাংশ আর গ্রামে ৫৩ শতাংশ। 

পরিসংখ্যান ব্যুরোর অপর এক তথ্য মতে, সবচেয়ে বেশি স্ট্রোক ঝুঁকি ব্যবসায়ীদের। মোট স্ট্রোকের ২৬ শতাংশ ব্যবসায়ী, ২০ শতাংশ চাকরিজীবী ও ১৭ শতাংশ গৃহিণী। পৃথকভাবে ১৩ শতাংশ শিক্ষক ও কৃষক। দিনমজুর ও যানবাহনের ড্রাইভারদের মধ্যে স্ট্রোকের সংখ্যা পৃথকভাবে ৩ শতাংশের কম। আর ছাত্রসহ অন্যদের মধ্যে এই হার মাত্র ৫ শতাংশ।

ঢামেকের স্ট্রোক চিকিৎসা চিত্র : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন নিউরোলজিক্যাল রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসপাতালটিতে মাত্র একটি ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) মেশিন চালু রয়েছে। মেশিনটি ১২ ঘণ্টা সচল থাকলে সর্বোচ্চ ১০টি এমআরআই করা সম্ভব। বাকি রোগীদের বাইরে এমআরআই করতে হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও দুই একটি এমআরআই মেশিন চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্সের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগ গণমাধ্যমকমীদের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, আমাদের দেশে স্ট্রোক রোগটি মহামারির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। সেই হিসেবে সেবার জায়গা বাড়েনি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ নিউরোসার্জারি বিভাগ রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে ১০০ শয্যার স্ট্রোক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার রয়েছে। ঢামেক হাসপাতালে রোগীর চাপ বিবেচনায় এখনেও ২০০ শয্যার স্ট্রোক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার চালু করা দরকার। কিন্তু এখানে মাত্র ২০ শয্যার চালু করা হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, গত বছর আমরা স্ট্রোক ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এখন এর জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। ঢামেক নিউরোসার্জারি বিভাগে আরও প্রায় ৫০টি বেড বাড়ানো হবে।

Link copied!