ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

সঞ্চয়ের অর্ধশত কোটি টাকা লোপাট

ইয়ামিনুল হাসান আলিফ

ইয়ামিনুল হাসান আলিফ

জুন ২৫, ২০২৪, ০১:১৯ এএম

সঞ্চয়ের অর্ধশত কোটি টাকা লোপাট

তানোরে এক কোটি ৮৪ লাখ, চট্টগ্রাম জিপিওতে ২৯ কোটি, নোয়াখালীতে সাড়ে ৯ কোটি, বরিশাল মেডিকেল কলেজ পোস্ট অফিসে দুই কোটি, পটুয়াখালীতে দুই কোটি, যশোরে এক কোটি ৮৪ লাখ, শ্যামপুরে ৭৩ লাখ এবং দিনাজপুরে  
১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ

দিনাজপুরে প্রতারিতদের টাকা ইতোমধ্যে ফেরত দেয়া হয়েছে
—মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক
ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল, দিনাজপুর

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আট কোটি ৬২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ 
ওঠে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং মামলা চলমান আছে
—শংকর কুমার চক্রবর্তী
ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল, নোয়াখালী

সারা দেশের পোস্ট অফিসে গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের ৫৫ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তারা কেউ কেউ জেল খেটেছেন, কারো কারো বিরুদ্ধে চলছে মামলা। অবসরে গিয়েও জনসাধারণের টাকা অভিনব কায়দায় আত্মসাতের ঘটনাও ঘটেছে। আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের থেকে সঞ্চয়পত্রের নাম করে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া সাধারণ জনগণের সঞ্চয়পত্রের টাকাও আত্মসাৎ করেছেন বিভিন্ন পোস্টমাস্টার।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা সম্পর্কে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে হওয়া সে ঘটনা তদন্তে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

গত ২৩ মে রাজশাহীর তানোর পোস্ট অফিসে নিজের জমাকৃত দুই লাখ টাকার হদিস না পেয়ে আত্মহত্মার চেষ্টা করেন পারুল বেগম নামে স্থানীয় এক ভুক্তভোগী। সে সময় তানোর পোস্ট অফিসে পারুল বেগমসহ আরও ৩০০ গ্রাহকের জমাকৃত টাকা গায়েব হয়ে গেছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করলে দৃষ্টিগোচর হয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের। পরবর্তীতে সারা দেশে এমন আর কোনো ঘটনা আছে কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী। তার নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত করে ডাক অধিদপ্তর। তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সারা দেশের বিভিন্ন পোস্ট অফিস থেকে একইভাবে ৫৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন কয়েকজন পোস্টমাস্টার। তদন্তে দেখা গেছে, পারুল বেগমসহ ৫১ জনের কাছ থেকে এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার মোকসেদ আলী। 

পারুল বেগম তানোর উপজেলা ডাকঘরে দুই লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেছিলেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় মুনাফা লাভের আশায় উপজেলা পোস্টমাস্টার মোহাম্মদ মোকসেদ আলীর কাছে দুই লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন এবং মাসে মাসে যথারীতি আগের মতোই মুনাফা গ্রহণ করতেন। কিন্তু দ্বিতীয়বারে দুই লাখ টাকা জমা রাখার সময় তিনি অফিসিয়ালি কোনো সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেননি অথবা পোস্ট অফিসে এফডি, এসবিতে টাকা জমা রাখেননি। সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাৎ করেন অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার। সারা দেশে এমন অভিনব উপায়ে সঞ্চয়পত্রের অর্ধশত কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন বিভিন্ন পোস্টমাস্টার। তদন্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম জিপিওতে ২৯ কোটি টাকা, নোয়াখালী পোস্ট অফিসে সাড়ে ৯ কোটি, বরিশাল মেডিকেল কলেজ পোস্ট অফিসে দুই কোটি, পটুয়াখালী পোস্ট অফিসে দুই কোটি, যশোরে এক কোটি ৮৪ লাখ, শ্যামপুর পোস্ট অফিসে ৭৩ লাখ, দিনাজপুর পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।

২৩ জুন ডাক অধিদপ্তরের এক সভায় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক  ‘রাজশাহীর তানোর পোস্ট অফিসে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় করণীয়’ সংক্রান্ত বৈঠকে তদন্তে উঠে আসা এসব তথ্য জানান। এ সময় সারা দেশের ৯ হাজার ৩০০ পোস্ট অফিস এলাকায় এ বিষয়ে মাইকিং এবং সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে গ্রাহককে জাতীয় হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে অভিযোগ জানাতে পরামর্শ দেন তিনি। 

এদিকে সঞ্চয়ের টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। তবে পারুল বেগমসহ যাদের টাকা খোয়া গেছে, তা ফেরত দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। 
এ বিষয়ে দিনাজপুরের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক আমার সংবাদকে বলেন, ‘অভিযুক্ত কর্মকর্তা অবসরে থেকে এ প্রতারণা করেছেন। তিনি তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে।’ প্রতারিতদের টাকা ইতোমধ্যেই ফেরত দেয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

নোয়াখালীর ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল শংকর কুমার চক্রবর্তী আমার সংবাদকে বলেন, ‘যিনি আত্মসাৎ করেন, তিনি খিলপাড়া সাব-পোস্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালে আত্মসাতের ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। ৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তিনি পুলিশের কাছে আটক হন ও প্রায় ছয় মাস জেল খাটেন। এখনো ওই মামলা চলমান।’
 

Link copied!