ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

সহিংসতায় রক্তাক্ত গোপালগঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

নিজস্ব প্রতিবেদক 

জুলাই ১৭, ২০২৫, ১২:১৪ এএম

সহিংসতায় রক্তাক্ত গোপালগঞ্জ
  • ৪ জন নিহত, কারফিউ জারি দেশজুড়ে বিক্ষোভ-অবরোধ 
  • ডিসির বাসভবন ও কারাগারে হামলা
  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ দফা 

এনসিপির ওপর হামলাকারীদের ছাড় নয়: সরকারের বিবৃতি 

ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে পুলিশ: আইজিপি

রাজনৈতিক সহিংসতায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গোপালগঞ্জ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া সহিংসতার ঘটনায় নিহত হয়েছে অন্তত চারজন। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ, যাদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে শহরজুড়ে গতকাল রাত ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার। 

পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। কারফিউ বাস্তবায়নে যোগ দিয়েছে কোস্টগার্ডও। গতকাল দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের জেল রোডে এনসিপির কেন্দ্রীয় সমাবেশ শেষ করে মাদারীপুর ফেরার পথে দলটির শীর্ষ নেতাদের বহনকারী গাড়িবহর শহরের কাশেম বাজার এলাকায় পৌঁছালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গাড়িবহর লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। এতে এনসিপির যুগ্ম মহাসচিব মনিরুল হক গুরুতর আহত হন। সে সময় পরিস্থিতি দ্রুতই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এনসিপি ও হামলাকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বিকেলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আদালত চত্বর, বঙ্গবন্ধু সড়ক, চৌরঙ্গী মোড় ও পুরাতন হাসপাতাল সড়ক পর্যন্ত। এর আগে এনসিপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা শুরু করলে তাদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে রাখা হয়। যেখানে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। এ সময় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় হামলাকারীরা। 

পূর্ব ঘোষিত সমাবেশে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভে উত্তাল দেশ। এনসিপি ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ফেনী, কুমিল্লা, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষ থেকে সারা দেশে ব্লকেড কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। যদিও এনসিপির নেতা নাহিদের আহ্বানে কর্মসূচি থেকে ফিরে আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তবে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করাসহ দেশের চলমান পরিস্থিতিতে তিন দফা দাবি জানিয়েছে তারা।

 তিন দফার মধ্যে রয়েছে, ১. অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। ২. আওয়ামী পুলিশি কাঠামো ভেঙে ফেলে পুরো ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। ৩. আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গোপালগঞ্জসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে সক্রিয় সব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যেই এনসিপি নেতাদের সেনাবাহিনীর এপিসি কারে করে মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে বের করে আনা হয়। তবে মাদারীপুরের সমাবেশ স্থগিত করে এনসিপি নেতারা চলে যান খুলনায়। এর আগে সংঘর্ষের শেষে বিকেল ৫টার দিকে উত্তেজিত জনতা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সরকারি বাসভবনেও হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় ভবনের প্রধান ফটক, জানালা ও আসবাবপত্র। বাইরে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠে তাতে দ্রুত ডিসিকে একটি সাঁজোয়া গাড়িতে করে সরিয়ে নিতে হয়। একই সময় হামলা হয় গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারেও। 

কারা সূত্র জানিয়েছে, হামলাকারীরা কারাগারের ক্যান্টিনে প্রবেশ করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কারাগারও সিল করে দেয়া হয়। এই সহিংসতার ঘটনায় পুরো গোপালগঞ্জ শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট, যানবাহন চলাচল। স্থানীয়রা আতঙ্কে ঘরবন্দি। নিকটবর্তী জেলা থেকেও অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গোপালগঞ্জের এই ঘটনা দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, তার আগে এমন সংঘর্ষ সরকার ও প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়েও দাঁড়াতে পারে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির ওপর হামলাকারীদের ছাড় নয় : এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এনসিপির সমাবেশে বাধা দেয়া মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে সরকার। হামলাকারীদের শাস্তি সরকার নিশ্চিত করবে বলে জানানো হয়েছে। 

বিবৃতিতে সরকার বলছে, গোপালগঞ্জে সহিংসতার ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। বিপ্লবী আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে তরুণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে বাধা দেয়া তাদের মৌলিক অধিকারের লজ্জাজনক লঙ্ঘন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যরা, পুলিশ এবং গণমাধ্যমের ওপর নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে, তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং মানুষের ওপর সহিংসভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের দ্বারা এই জঘন্য কাজটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যা শাস্তির বাইরে থাকবে না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ আছে।

সরকার বলছে, অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের সম্পূর্ণ জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রশংসা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা সেনাবাহিনী এবং পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের জন্য তাদের প্রশংসা করি এবং এই বিদ্বেষপূর্ণ হুমকি সত্ত্বেও যারা তাদের সমাবেশ চালিয়ে গেছেন তাদের স্থিতিস্থাপকতা এবং সাহসের প্রশংসা করি। এই বর্বরতার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

পরিস্থিতি ধৈর্যের সঙ্গে সামলানোর চেষ্টা করছে পুলিশ : পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, ধৈর্য ধরে তারা গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘উচ্ছৃঙ্খলতা যা হয়েছে, সেটা যতটুকু সম্ভব আমরা ধৈর্যের সঙ্গে প্রশমন করার চেষ্টা করছি, আমরা এখন রিইনফোর্সড (আরো পুলিশ সদস্য পাঠানো) করছি, পুরো জিনিসটা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। আমরা লিথ্যাল (প্রাণঘাতী অস্ত্র) কোনো কিছু ব্যবহার করছি না, তাই আমাদের একটু সময় লাগছে।’

Link copied!