ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা

ক্যাম্পের সামনেই মারধর এগিয়ে আসেনি আনসাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১৫, ২০২৫, ১২:২৭ এএম

ক্যাম্পের সামনেই মারধর এগিয়ে আসেনি আনসাররা

পুরান ঢাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যার আগের দিন তার দোকানে গিয়ে হুমকি দেয়ার পাশাপাশি মারধর করেছিলেন ব্যবসায়িক অংশীদার মাহমুদুল হাসান মহিন। চোরাই তারের ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার জন্যও শাসানো হয় তাকে। কিন্তু সোহাগ চোরাই তার কেনাবেচা চালিয়ে যাওয়ায় পরদিন ফের দোকানে যান মহিন। ওইদিন তার সঙ্গে আরও অনেকেই ছিলেন। দোকান থেকে মারধর করতে করতে সোহাগকে আনা হয় মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে। সেখানকার আনসার ক্যাম্পের পাশেই তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অথচ তা প্রতিরোধে এগিয়ে আসেননি আনসার সদস্যরা। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, হামলাকারীদের হাসপাতালের ভেতরে থামানো গেলে এত বড় নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটত না। যদিও আনসার সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। 

এদিকে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রাজিব ব্যাপারী ও সজিব ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করে লালবাগ থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যাকাণ্ডে ওই দুজনের সম্পৃক্ত থাকার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো সোহাগ হত্যা মামলায়। 

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার রাজিব হত্যা মামলায় ১০ নম্বর এবং সজিব ৭ নম্বর আসামি। দুজনকে নেত্রকোণা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় এখনও জানা যায়নি। 

এর আগে এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন— প্রধান আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা (বড়) মনির ও টিটন গাজী। এদের মধ্যে রবিন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। টিটন গাজী, আলমগীর, লম্বা মনির ও মহিন পুলিশের রিমান্ডে আছেন। 

ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার মো. জসীম উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার রাজিব ব্যাপারী ও সজিব ব্যাপারীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে তাদের ভূমিকা কী ছিল তা জানতে দুজনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে। ইতোমধ্যে আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে কার কী ভূমিকা ছিল তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। তিনি আরও জানান, এ মামলার পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হত্যকাণ্ডের নেপথ্যের মূল কারণ তদন্ত করা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী রয়েছেন, যারা হত্যকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছেন। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সোহাগের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা ছিল মহিনের। আওয়ামী লীগের সময়ে সোহাগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পলাশের নিয়ন্ত্রণে থেকে ভাঙারি ব্যবসা শুরু করেন। শুরুতে বিভিন্ন চোরাই তার ও অন্যান্য ভাঙারি কিনে সেগুলো পলাশের কাছে বিক্রি করতেন। একপর্যায়ে অবস্থা ভালো হলে নিজেই আলাদা দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। 

অন্যদিকে মহিন আওয়ামী লীগ নেতা ও মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সংগঠনের সভাপতি মোজাফফর হোসেন বাবুলের ছত্রছায়ায় থেকে ভাঙারি ব্যবসা করতেন। ভাঙারি ব্যবসার সুবাদে রজনী বোস ৪ নম্বর লেনে সোহাগের দোকানে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। দোকানের পাশাপাশি মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে সোহাগ ও মহিন নিয়মিত আড্ডা দিতেন। 

সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার আগের রাতে সোহাগকে শাসাতে অস্ত্রসহ লোকজন নিয়ে দোকানে আসেন মহিন। সে সময় সোহাগকে মারধরও করা হয়। এ খবর স্থানীয় ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তবে সোহাগ কোনো অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করেননি। পরদিন দোকান থেকে সোহাগকে মারধর করতে করতে নিয়ে আসা হয় মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে। আনসার ক্যাম্পের পাশেই সোহাগকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। 

এর আগে দোকানে সোহাগের সঙ্গে মহিনের কথাকাটাকাটিও হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে মারধরের কারণে সোহাগ অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েন। তখন টেনে তাকে রাস্তায় আনা হয়। এরপরই পাথর দিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করে মাথা থেঁতলে দেয়া হয়। 

আশপাশের লোকজন জানিয়েছেন, মহিনের মা ও বাবা দুজনই মিটফোর্ড হাসপাতালে চাকরি করেন। সে সুবাদে মিটফোর্ড কেন্দ্রিক অপরাধ সাম্রাজের একটি চক্র গড়ে তোলেন মহিন। হাসপাতালের কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা তাকে ভালোভাবেই চেনেন। তাই সোহাগকে মারধর করার সময় তারা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেননি। 

এদিকে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনসার সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। 

গতকাল বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দেশিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই সময় সেখানে কোনো আনসার সদস্য কর্তব্যরত ছিলেন না। লোকবল সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরো হাসপাতালের নিরাপত্তায় সর্বমোট ৮০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত আছে। সাপ্তাহিক ছুটি ও শিফট অনুযায়ী একেক শিফটে মাত্র ৩০ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত থাকেন। দুপুর ২টার আগে গেটে এবং হাসপাতাল ভবনে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও দুপুর ২টার পর গেটে আর কোনো আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করেন না। কোন আনসার সদস্য কখন কোথায় দায়িত্ব পালন করবেন তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেয় বিধায় সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনসার সদস্যদের ওপর দায় চাপানোর কোনো সুযোগ দেখছেন না তিনি। 

এ সময় আনসার ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ আক্ষেপ করে বলেন, শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে ঘটনা দেখলেও বা ভিডিও করলেও কেউ আনসার ক্যাম্পে গিয়ে খবর পর্যন্ত দেয়নি। এমনকি মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেট এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরাও নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি।

Link copied!