Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

সৈকতের সৌন্দর্য ও মাদকমুক্তে মুসার বিকল্প নেই

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো

আগস্ট ১৩, ২০২২, ০৪:৫৬ পিএম


সৈকতের সৌন্দর্য ও মাদকমুক্তে মুসার বিকল্প নেই

চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত বাসিন্দা ও বিভিন্ন পর্যটকদের একঘেয়েমি ভাব দূর করে মনে প্রশান্তি পেতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে বসে পর্যটকদের মিলন মেলা। বৃহস্পতি-শুক্র-শনিবার পর্যটকদের পদাচারণায় মুখরিত থাকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। আর এই সৈকতে সৌন্দর্য বিনষ্ট করার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে নাম সর্বস্ব সমিতি। সপ্তাহের মধ্যে তিন দিন শত শত ভাসমান দোকান বসে সৈকতে। এইসব দোকান থেকে টাকা আদায়সহ মাদক ও জুয়ার আসর বসায় ওই সব কথিত সমিতি। সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষা করা ও মাদক মুক্ত রাখতে কথিত সমিতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মুসা আলম প্রকাশ মুসা। তার প্রতিবাদ ও পজেটিভ কর্মকান্ড ম্লান করে দিতে সৈকতে বিভিন্নভাবে মুসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় ব্যক্তি বিভিন্ন ব্যানারে বাসমান দোকান বসিয়ে  চাঁদা আদায় করে আসছে । এতে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট এবং পর্যটকদের বিভিন্ন অসুবিধা সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব কিছুর বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো তার নামে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপবাদ দিচ্ছেন।

একই অভিযোগ স্থানীয় ব্যবসায়ী সাজ্জাদ রুবেল ও মামুন বলেন, বৃহস্পতি শুক্র ও শনিবার পর্যটকের চেয়ে দোকান বেশি গড়ে ওঠে। রাতে সৈকতের বিভিন্ন আলোকবাতি বন্ধ থাকে। এতে চিন্তায়  হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এসব কিছু বন্ধ  ও পর্যটকদের নির্বিঘ্নে আনন্দ উপভোগ করতে মুসা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমানে এটাই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরজমিন গিয়ে জানা যায়, টুরিস্ট পুলিশ ও পতেঙ্গা থানা পুলিশের চোখ এই পর্যটন কেন্দ্রে থাকার পরও বিভিন্নভাবে নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ঘটে।

এ ব্যাপারে মুসা জানান, শত বাধা বিপত্তি ও সমালোচনা করে তাকে থামানো যাবে না। আমি  জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। সৈকতের সৌন্দর্যের জন্য এবং শতভাগ মাদক মুক্ত করার জন্য জীবনের মায়া ত্যাগ করে লড়াই করে যাব।

তিনি আরো বলেন, তাকে হেয় করার জন্য যারা অপত্বরতা চালিয়েছেন খুব শীঘ্রই তাদের মুখোশ উন্মোচন হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে খুব দ্রুত সৈকতের সৌন্দর্য ফিরে আনা এবং সকল অসামাজিক কর্মকান্ড রোধ করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ওপারে সুন্দর প্রকৃতি পরিবেষ্টিত মেরিন একাডেমি। কর্ণফুলী নদীর মোহনায় সৃষ্টি হয়েছে মায়ার এই পর্যটন কেন্দ্র। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ঘাঁটি বিএনএস ঈসা খান পতেঙ্গার একেবারে সন্নিকটে অবস্থিত। পতেঙ্গা সৈকতে যাওয়ার পথে নৌবাহিনীর গল্ফ ক্লাব ও পাশের বোট ক্লাব পর্যটকদের চাহিদা মেটায়। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের অনেক জেটি এখানে অবস্থিত। ইতোমধ্যে এই সৈকত ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রাস্তা নির্মাণে পতেঙ্গা এলাকায় রাস্তা কাম বাঁধ নির্মিত হয়। এই প্রকল্পের আওতায় পতেঙ্গা এলাকায় অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয় অনন্য সৌন্দর্যের পতেঙ্গা বিচ।

আউটার রিং রোডের বিশাল একটি অংশ জুড়ে রয়েছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। এর মধ্যে সড়কের অংশ হিসাবে পতেঙ্গায় তিন স্তরের একটি পর্যটন স্পট’ও তৈরি হয়ে গেছে। যার আকর্ষণে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসে এখানে। সিডিএ’র নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সৈকতের সৌন্দর্য ধরে রাখার কাজও চলছে। সিডিএ’র এতো জনবল নেই বলে এটা বেসরকারি খাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হবে পুরো প্রকল্পের কাজ। যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যায়, নৌ বাহিনীর ওয়েস্ট পয়েন্টের পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে সাড়ে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হবে প্রথম জোন এবং সেখান থেকে ইপিজেডের পেছনের অংশ হবে দ্বিতীয় জোন। প্রথম জোন থেকে দ্বিতীয় জোনে যাওয়ার পথে দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে টয় ট্রেন এবং ক্যাবল কার। ওয়াটার ক্রুজে যাওয়ার জন্য থাকবে দর্শনীয় দু’টি জেটি। একাধিক থিম পার্কের ব্যবস্থাও থাকবে এখানে। দর্শনার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা প্রবেশমূল্য থেকে একটি অংশ পাবে সিডিএ।


ইএফ

Link copied!