Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মেরিনা

শুভ কুমার ঘোষ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

শুভ কুমার ঘোষ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

জানুয়ারি ২৩, ২০২৩, ০৬:৩৪ পিএম


দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মেরিনা

বাংলাদেশে এই প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে চলেছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশের যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুন। গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) থেকে মহাপরিচালক মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মেরিনা খাতুন কে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন। আর সে পত্রটি হাতে পেয়েছেন যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুন। এখন সেটি মন্ত্রনালায়ে অনুমোদনের অপেক্ষায়।

এর আগে তাড়াশের বীরঙ্গানা পচি বেওয়া (মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত) তার কন্যা মেরিনা খাতুনকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য ২০২২ সালের সেপ্টম্বর মাসের ৮ তারিখে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ৮২ তম সভায় মাননীয় মন্ত্রী বিষয়টি উথাপন করেন। সেখানে ৯.১৩ নং আলোচ্য সূচীতে আলোচনা আনন্তে সভায় যুদ্ধশিশু হিসেবে মেরিনা খাতুন কে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্থানীয় রাজাকাররা তাড়াশের উত্তর পাড়ার  মৃত ফাজিল আকন্দের বিধবা স্ত্রী পচি বেওয়াকে (বর্তমানে মৃত) তার বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় পাক বাহিনীর সামরিক ক্যাম্পে। তারপর সেখানে ওই নরপিশাচরা ওই বীরাঙ্গনার ওপর পাশবিক, শারিরীক ও মানসিক ভাবে নিমর্মভাবে নির্যাতন চালায়। আর পাক-হানাদার বাহিনীর পাশবিক নির্যাতনের ফলে জন্ম হয় যুদ্ধ শিশু মেরিনা খাতুনের। এর আগে দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরে ২০১৮ সালে পচি বেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে গেজেট ভুক্ত হন।

দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মেরিনা খাতুন বলেন, আমাকে স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্ত সম্বলিত একটি পত্র আমি হাতে পেয়েছি। এতে আমি দারুন আনন্দিত। যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের মতো যুদ্ধশিশুদের আর্থিকভাবে সম্মানী প্রদানের জন্যও দাবী জানান এই নারী।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী মো. আরশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা তাকে যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি পাইয়ে দেওয়ার জন্য ২০১২ সাল থেকে চেষ্টা করছি। অবশেষে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তাকে যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিধ্যান্ত নিয়েছে এবং মেরিনাকে স্বীকৃতি স্বরুপ এই সংক্রান্ত একটা চিঠি দিয়েছে। এছাড়াও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বিষয়টি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রনালয়েও পাঠিয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এটা মন্ত্রনালয়ে পাশ হবে।

আরএস

Link copied!