ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

টাঙ্গাইলে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

এপ্রিল ৬, ২০২৪, ০২:৫০ পিএম

টাঙ্গাইলে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস

টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়া ও মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে।

গ্রাম কিংবা শহরে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের সরবরাহ অর্ধেকে নেমে আসায় প্রচণ্ড দাবদাহে সাধারণ মানুষ হাঁসফাঁস করছেন। শিল্পকারখানায় ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন।

চাষের জমিতে পানি দিতে না পারায় চিন্তিত কৃষক। ব্যবসায়ীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। ঈদ ও বৈশাখের আগে প্রচণ্ড গরম ও দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় বিকিকিনিতে ধস নেমে এসেছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলায় আবাসিক ও শিল্পকারখানাসহ প্রায় ১১ লাখ গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট। চাহিদার বিপরীতে মাত্র ১৩০ থেকে ১৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার মধ্যে টাঙ্গাইল জোনে ৭টি উপজেলা ও ময়মনসিংহ জোনে ৫টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

টাঙ্গাইল জোনের জোনাল অফিসের আওতাধীন ৬ লাখের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে এবং ময়মনসিংহ জোনাল অফিসের আওতায় ৪ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। জেলার ছোট বড় ৮ শতাধিক শিল্পকারখানায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এসব শিল্পকারখায় পাঁচ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করে থাকেন।

এদিকে আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে টাঙ্গাইল জেলায় গত কয়েকদিন যাবত ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় ব্যাপক দাবদাহ বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে মানুষের ভোগান্তি চরমে। তীব্র দাবদাহে প্রাণিকূলের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। জমিন শীতল হওয়ার আশায় প্রকৃতির দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকছে প্রাণিকূল। ঈদকে সামনে রেখে রোজার শেষ সময়ে সেহরি ও ইফতারের সময়ও লোডশেডিং হচ্ছে যথেচ্ছ। ইফতারের সময় এরমাত্রা কিছুটা কম হলেও সেহরির সময় প্রায় নিয়মিত লোডশেডিং হচ্ছে।

তারা জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টার পর থেকে সূর্যের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। দুপুরে তীব্রতা আরও বেশি। রোজাদারের জন্য কষ্ট বেড়েছে কয়েকগুণ। এরমধ্যে শহর এলাকায় দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পালা করে এলাকা ভিত্তিক দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিং দেওয়া হয়। গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। গ্রাম এলাকায় কখন বিদ্যুৎ আসে সেই হিসাব রাখেন ভুক্তভোগীরা। সেখানে প্রায় সময়ই বিদ্যুৎ থাকেনা- যদিওবা আসে কয়েক মিনিট পরেই চলে যায়। চলতি বোরো মৌসুমে চাষের জমিতে পানি সেচ দিতে না পারায় ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। দাবদাহে খেটে খাওয়া মানুষগুলো সবচেয়ে বিপদে রয়েছেন।

অনেকেই জানায়, রোদে তাকালেই চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। টানা গরম আর অনাবৃষ্টিতে মানুষের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। গরম বাতাস আগুনের হলকা হয়ে শরীরে লাগছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রকৃতির এমন বৈরী আচরণের মধ্যে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হিসেবে আবির্ভাব হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং।

জেলা শহরের রেজিস্ট্রি পাড়ার ইমাম হোসেন, আকুর টাকুর পাড়ার শহিদুল ইসলাম রুমি, বটতলার আনিছুর রহমান, তালতলার মঞ্জুরুল ইসলাম, আদি টাঙ্গাইলের গৃহবধূ রহিমা রহমান, থানাপাড়ার জোবায়ের হোসেন, আদালত পাড়ার শিবলীসহ অনেকেই জানান, প্রচণ্ড দাবদাহে বাসায় থাকা যায় না। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ। শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

শহরের হীরা মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন, শাহালম মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান, জয়নাল আবেদীনসহ অনেকেই জানান, ক্রেতার চাপ থাকলেও প্রচণ্ড গরমে দোকানে বসে থাকা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে লোডশেডিং চলছে। লোডশেডিং হলে এক থেকে দেড় ঘণ্টার আগে বিদ্যুৎ আসে না। ফলে আইপিএস লাগিয়েও সমাধান পাওয়া যায় না। বিদ্যুৎ না থাকায় আইপিএসও চার্জ হয় না।

টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন জানান, টাঙ্গাইল শহর এলাকায়ও প্রতিদিন ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবার এক থেকে দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না।

টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, সম্প্রতি তিনি টাঙ্গাইল জোনে যোগদান করেছেন। টাঙ্গাইল জোনে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৬ লাখের বেশি। এ এলাকায় ছোট বড় মিলে ৪৫০টি শিল্পকারখানাসহ ও আবাসিক গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ১০০ থেকে ১০৫ মেগাওয়াট। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে লোডশেডিং বেড়েছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ময়মনসিংহ জোনের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মো. শহীদ উদ্দিন জানান, প্রচণ্ড দাবদাহে সারাদেশে লোড বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সর্বোচ্চ লোডশেডিং চলছে। এ জোনের আওতায় ৪ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। বিদ্যুতের চাহিদা ৫৫ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ মেগাওয়াট।

বিউবো টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার কামরুজ্জামান জানান, টাঙ্গাইল পৌরসভায় ৪৭ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদা ২০ মেগাওয়াট। গত সপ্তাহ পর্যন্ত গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক ছিল। ৪-৫ দিন ধরে তারা ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন। ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। এই ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন কম পাওয়া যাচ্ছে তা তিনি জানেন না। ফলে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন  অব্যাহত রাখা হচ্ছে।

ইএইচ

Link copied!