Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ঘোড়ার ঘানিতে জীবিকা নির্বাহ

নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারী প্রতিনিধি

এপ্রিল ১৫, ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম


ঘোড়ার ঘানিতে জীবিকা নির্বাহ

নীলফামারী কিশোরগঞ্জে ঘোড়ার ঘানিতে পরিবারের হাল ধরেছেন ফজলে মামুদ নামে এক বৃদ্ধ। এক সময় খাঁটি ভোজ্যতেল উৎপাদনে একমাত্র অবলম্বন ছিল ঘানি। ঘানি টানার কাজে ব্যবহার করা হতো গরু। গরুর দাম বৃদ্ধির কারণে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘানি শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে।

ফজলে মামুদ (৭৫) নামের এক বৃদ্ধ স্বল্পমূল্যের ঘোড়াকে বেঁছে নিয়ে টিকিয়ে রেখেছেন বাপ-দাদার ঐতিহ্যের তেলিপেশা। তিনি উপজেলার বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরাকুটি তাঁতি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

জানা যায়, ঘোড়ার কদর ও চাহিদা না থাকায় বাজার মূল্যে খুব কম। আর গরুর সমকক্ষে ঘোড়া দিয়ে নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা যায়, এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি কয়েক বছর ধরে গরুর পরিবর্তে ঘোড়া দিয়ে ঘানি টেনে তেল বিক্রি করে ৫ সদস্যের সংসার চালান।

সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘানির ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দে খাঁটি সরিষা তেলের সুগন্ধে আশপাশ ছড়িয়ে গেছে। নরেবড়ে একটি ঘরে, কাতারের উপর বসে ভর দিচ্ছেন নিজে। এ সময় ঘোড়ার ঘুরপাকে পাতিলে চুয়ে চুয়ে পড়ছে তেল। স্থানীয়দের মাঝে ঘানির তেলের অনেক চাহিদা।

ফজলে মামুদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে আমি ৬০ বছর ধরে ঘানিতে তেল মাড়াই ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আগে গরু দিয়ে সরিষা মাড়াই করতাম, কিন্তু ঘানি টানার জন্য বর্তমান বাজারে গরুর দাম প্রায় লক্ষাধিক টাকা। এতো টাকা না থাকায়, কয়েক বছর আগে ৮ হাজার টাকা দিয়ে একটি ঘোড়া ক্রয় করি। দৈনন্দিন এ ঘোড়া দিয়ে ১২ কেজি সরিষা মাড়াই করে ৪ কেজি তেল ৪৮০ টাকা দরে বিক্রি করি। যাবতীয় ব্যয় বাদে প্রতিদিন ৫০০ টাকার মত আয় হয় তা দিয়ে কোন রকমে ৫ সদস্যের সংসার চালাই।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, প্রযুক্তির যুগে মানুষ অধিক উৎপাদনশীল যন্ত্রের দিকে ঝুঁকছে। এতে স্বল্প উৎপাদন যোগ্য ঘানি শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় ঘোড়ার ব্যবহারও হারিয়ে যাচ্ছে। তবে দামি গরুর পরিবর্তে ফজলে মামুদ কম দামের ঘোড়া দিয়ে খাঁটি সরিষার তেল উৎপাদন করে ভোক্তাদের মাঝে সরবরাহের পাশাপাশি গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। আমরা সরেজমিনে গিয়ে তার ঘানিটি পরিদর্শন করবো।

ইএইচ

Link copied!