বরগুনা প্রতিনিধি
জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম
বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধাকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে যুবদল সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. ফিরোজ খাঁন তাপসের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী।
রোববার বেলা ১১টার দিকে খুরিয়া খেয়াঘাটসংলগ্ন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় হামলাকারীরা দুইটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ইউপি সদস্য সোহেল খাঁনসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ফিরোজ খাঁন তাপস ও রাসেল আকন নামে দুইজনকে আটক করেন।
জানা যায়, গত ১৬ জুন চেয়ারম্যান মিঠু মৃধাকে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশে বাধা দেন ফিরোজ খাঁন তাপস। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরে ১৯ জুন উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফিরোজ খাঁন ও তার অনুসারীরা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে ২১ দিনের জন্য দায়িত্ব হস্তান্তরের একটি কাগজে স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করেন।
রবিবার সেই দায়িত্বের মেয়াদ শেষে মিঠু মৃধা পুনরায় কার্যালয়ে গিয়ে কাজ শুরু করলে ফিরোজ খাঁনের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় পরিষদে সেবা নিতে আসা নারী-পুরুষ মানবপ্রাচীর তৈরি করে তাকে রক্ষা করেন। প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্য সোহেল খাঁনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আহতদের মধ্যে সোহেল খাঁন (৩৫), রাহাত মোল্লা (২৫), সজিব (২০), সাব্বির (২২), আল আমিন (২৮) ও কামরুল (৩৫) কে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সোহেল খাঁন ও রাহাত মোল্লাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. লুনা বিনতে হক জানান, আহতদের মধ্যে দু’জনকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) মো. তারিকুল ইসলাম মাসুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, নৌবাহিনীর সদস্যরা দুইজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছেন। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ঘটনাস্থলে ককটেল বিস্ফোরণের তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইএইচ