জুলাই ৮, ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
মাগুরার মাঠে এখন কৃষকদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। চলতি আমন মৌসুমে ধানের চারা রোপণের পর শুরু হয়েছে নিবিড় পরিচর্যার কাজ। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা পানি সেচ, আগাছা পরিষ্কার, পোকামাকড় দমন এবং সার প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সদর উপজেলার কৃষক ইদুল বলেন, “আমন মৌসুম আমাদের প্রধান ধানচাষের সময়। এখন চারা সঠিকভাবে বেড়ে উঠছে কি না, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিন মাঠে গিয়ে পরিচর্যা করতে হয়।”
মাগুরা জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের আমন মৌসুমে জেলায় প্রায় ৬২ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার হেক্টরে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উপযুক্ত সময়ে চারা রোপণ করা হলেও সঠিক পরিচর্যা ছাড়া কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া সম্ভব নয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে কৃষকরা জমিতে পানি জমে থাকা, পোকামাকড় ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ এবং সুষম সার প্রয়োগে ব্যস্ত। আমরা মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।”
অবিরাম বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় অতিরিক্ত পানি জমে থাকায় চারা পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, শ্রমিক সংকটও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শালিখা উপজেলার কৃষক রমজান আলী বলেন, “এখন পরিচর্যার সময় শ্রমিক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নিজে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যতটুকু পারি কাজ চালিয়ে নিচ্ছি।”
কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চারা ভালোভাবে বেড়ে তোলার জন্য জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, নিয়মিত নিড়ানি দেওয়া এবং সময়মতো ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার প্রয়োগ জরুরি। এছাড়া মাজরা পোকা ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে কীটনাশক ব্যবহারে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মাগুরার কৃষকরা আমন ধানের পরিচর্যায় আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। কৃষি সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী—এই পরিশ্রমের সুফল হিসেবে এবার আমন মৌসুমে ভালো ফলন মিলবে।
ইএইচ