মো. মাছুম বিল্লাহ, ঢাকা আলিয়া
জুলাই ১৪, ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা—এর পূর্ব পাশে, কাশগরী হলের প্রবেশপথসংলগ্ন রাস্তায় প্রতিদিন জমা হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ময়লা-আবর্জনা। এতে পুরো মাদ্রাসা ক্যাম্পাস ও দুটি আবাসিক হলে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র দুর্গন্ধ। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির মধ্যে থাকলেও বিষয়টির কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বকশীবাজার এলাকার বিভিন্ন আবাসিক ভবনের ময়লা পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এনে ফেলে দিচ্ছেন মাদ্রাসার সামনে নির্ধারিত এক জায়গায়। অথচ দেয়ালে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে: “এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ”। এরপরও নিয়মিতভাবে সেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা মাদ্রাসার স্বাস্থ্যকর পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তারা পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের একাধিকবার অনুরোধ করেছেন ময়লা না ফেলতে। কিন্তু সেই অনুরোধে কোনো কর্ণপাত করা হয়নি।
একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,“সিটি কর্পোরেশন আমাদের যেখানে ময়লা ফেলতে বলে, আমরা সেখানে ফেলি। রাতে ট্রাক এসে নিয়ে যায়। যদি সমস্যা থাকে, আপনারা কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা শুধু দায়িত্ব পালন করি।”
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আরাফাত বলেন,“দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশেই এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় ক্লাসে মন বসে না, ঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়াও করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন এই দুর্গন্ধ সহ্য করতে হচ্ছে। এটা কি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ হতে পারে? প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
নূর আহমেদ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন,“দিনের পর দিন মাদ্রাসার গেটে ময়লা ফেলা হচ্ছে—এটা এক ধরনের চরম অবহেলা। কতবার বলার পরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এটা তো আবর্জনা ফেলার জায়গা নয়।”
শিক্ষার্থী আশিক বলেন,“দেয়ালে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন ময়লার স্তূপ জমছে। বহুবার বাধা দিয়েছি, বলেছি এখানে শিক্ষার্থীরা বসবাস করে। কিন্তু কর্মীরা কোনো কথা শোনে না। শুধু বিরক্তিকর নয়, স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে। স্থায়ী সমাধান না হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।”
দ্রুত সমাধানের দাবি
শিক্ষার্থীরা সিটি কর্পোরেশনের কাছে দ্রুত এই অমানবিক পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান চান। তারা বলছেন, এটি শুধু তাদের স্বাস্থ্য নয়, শিক্ষা-পরিবেশকেও নষ্ট করছে। বিষয়টি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হওয়া জরুরি।
তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষায় অবিলম্বে ময়লা ফেলা বন্ধ করে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
ইএইচ