Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

পাহাড় কেটে সুইমিংপুল তৈরিতে জড়িতদের বিচার দাবিতে রিট

আমার সংবাদ ডেস্ক:

আমার সংবাদ ডেস্ক:

এপ্রিল ২, ২০২৪, ১১:৪৪ এএম


পাহাড় কেটে সুইমিংপুল তৈরিতে জড়িতদের বিচার দাবিতে রিট

মেঘের রাজ্য সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে সুইমিংপুল। রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রুইলুই, হামারি এবং কংলাক এলাকায় পাহাড় কেটে করা সুইমিংপুল তৈরি বন্ধ এবং জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে আদালতে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিচ ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। রিটে পরিবেশ ও বন ও মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিটের বিষয়টি মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) নিশ্চিত করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১ হাজার ৮০০ ফুট উপরে পাহাড় কেটে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেঘপল্লী রিসোর্ট নির্মাণ করছে সুইমিংপুল। প্রকাশ্যে অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এতে সাজেকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে পাহাড় ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রুইলুই, হামারি এবং কংলাক এই তিনটি পাড়া নিয়ে সাজেক পর্যটনকেন্দ্র। নয়নাভিরাম প্রকৃতির সবুজে ঘেরা ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড় ও মেঘের অপূর্ব মিলনের জন্যই সাজেককে বলা হয়ে থাকে মেঘের রাজ্য।

এদিকে, দিনে দিনে সাজেকে বেড়েছে পর্যটক। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রিসোর্ট, কটেজ, হোটেলসহ রেস্তোরাঁ। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অপরিকল্পিত এসব স্থাপনায় ঢাকা পড়ছে প্রকৃতির সেই চেনা রূপ। দৃষ্টিপাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডজন ডজন কটেজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে সাজেকের পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণের কাজ করছে মেঘপল্লী রিসোর্ট। এতে যেমন সাজেকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তেমনি রয়েছে পাহাড় ধসের ঝুঁকি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সুইমিংপুল নির্মাণ করা হচ্ছে। সুইমিং পুলটির দৈর্ঘ্য ৩৪ ফুট, প্রস্থে ১৮ মিটার ও গভীরতা সাড়ে ৩ মিটার। যেখানে পানির ধারণ ক্ষমতা ৯০ হাজার লিটার।

রুইলুই পাড়ার এক কটেজ মালিক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, সাজেকে এখন অনেক রিসোর্ট রয়েছে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে একের পর এক কটেজ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সাজেকের সৌন্দর্য ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এদিকে সাজেকের উঁচু পাহাড়ের অংশ কেটে সুইমিং পুল নির্মাণে রয়েছে বড় ধরনের পাহাড় ধসের ঝুঁকি।

পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণের বিষয়ে মেঘপল্লী রিসোর্টের মালিক মাজহারুল জিয়নের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’ পরে তিনি ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে তাকে আবারও ফোন করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, ব্যবসায়িক কারণে পাহাড় কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে। ফলে পাহাড়ে প্রকৃতির ঝুঁকির আশঙ্কা বেশি রয়েছে। একে একে পাহাড় ধ্বংস করার কারণে প্রকৃতি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হচ্ছে।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, ‘সাজেকে মেঘপল্লী রিসোর্ট নির্মাণের কথা শুনছি। কিন্তু পাহাড় সুইমিংপুল নির্মাণের কথা শুনিনি। বিষয়টির খোঁজ নেবো।’

বিআরইউ

Link copied!