শিবচর প্রতিনিধি:
মে ২৭, ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম
শিবচর প্রতিনিধি:
মে ২৭, ২০২৫, ০৩:৫১ পিএম
এক সময়ের গ্রীষ্মকালীন তৃষ্ণা মেটানোর অন্যতম উপকরণ ছিল তালের শাঁস। কাঁচা তালের শাঁস খেয়ে জুড়িয়ে যেত শরীর, তৃপ্তি পেত মন। এখন সেই তালশাঁস পৌঁছে গেছে শহরের অলিতে-গলিতে, কিন্তু কদর হারিয়ে ফেলেছে আগের মতো।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কালিকাপুর, ছোট কুতুবপুর, সন্নাসীর হাটসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, তালশাঁসের সরবরাহ ঠিক থাকলেও ক্রেতা খুব কম। দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বেশিরভাগ মানুষ। ফলে হতাশ বিক্রেতারা।
ভ্যানগাড়িতে শাঁস বিক্রি করা আসিফ বলেন, ‘তিন আটি বিক্রি করছি ১৫ টাকায়, দুই আটি ১০ টাকায়। খরচ বাদ দিয়ে যা থাকে, তা দিয়েই কোনো মতে চলি। কিন্তু বিক্রির হার আগের চেয়ে অনেক কম।’
বাজারে এখন অনেকেই ‘কানি ধরে’ তালশাঁস কেনেন—অর্থাৎ একবারে ৫০–১০০টি শাঁস একসঙ্গে নিয়ে যান পাইকাররা। কিন্তু তারা অভিযোগ করছেন, আগের মতো খুচরা ক্রেতা নেই, ফলে লাভও কমে গেছে।
শিবচরের কুতুবপুর হাটের বিক্রেতা কাওসার বলেন, ‘তাল গাছে উঠে শাঁস পারা অনেক কষ্টের কাজ। জীবনঝুঁকি নিয়েই কাজটা করতে হয়। তারপরও মানুষ আগের মতো কিনছে না।’
এক সময় গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় শোভা পেত তালগাছ। এখন তালগাছ কমে যাওয়ায় শাঁসের উৎপাদনও কমেছে। তবে যেটুকু মিলছে, তা শহরের বাজারে পৌঁছাচ্ছে দ্রুত। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় তা জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাঁচা তালের শাঁসে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা, পানি ও খনিজ পদার্থ, যা গ্রীষ্মে শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়ক। তবু এ উপকারী খাদ্যদ্রব্য আজকের প্রজন্মের কাছে ক্রমেই হারাচ্ছে গুরুত্ব।
মাদারীপুরের এক প্রবীণ বাসিন্দা আফজাল হোসেন বললেন, ‘আগে গ্রীষ্মকালে দুপুরের পর তালশাঁস না খেলে যেন জমতোই না দিনটা। এখন তো হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া কেউ কিনেই না।’
সচেতন মহলের মতে, তালশাঁসের উৎপাদন বাড়াতে তালগাছ রোপণের উদ্যোগ এবং শহুরে মানুষের মধ্যে এর উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজন রয়েছে।
বিআরইউ