স্পোর্টস ডেস্ক
জুলাই ৭, ২০২৫, ১০:৫০ এএম
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলার বাঘিনীরা। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের এই ঐতিহাসিক অর্জনের তাৎক্ষণিক সম্মান জানাতে অভিনব এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
রোববার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত আড়াইটায় রাজধানীর হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারে এই বিশেষ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।
গতরাত দেড়টায় মিয়ানমার জয় করে বীরের মতোই ফিরেছেন নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়েরা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আনা হয়েছে হাতিরঝিলে। গভীর রাতেও হাজার খানেক দর্শক অপেক্ষায় ছিলেন তাদের জন্য, মুখে ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ ধ্বনি নিয়ে। একে একে মঞ্চে ডাক হয় রুপণা চাকমা, শিউলি, শামসুন্নাহার, আফঈদা, তহুরা, কোহাতি, মনিকা, মারিয়া, ঋতু ও অন্যদের। বাফুফের সদস্যরা তাদের বরণ করেন ফুলের তোড়ায়। মেয়েরা মঞ্চে বসেন যেন মাথায় গর্বের অদৃশ্য মুকুট পরে।
মেয়েদের ছবি দিয়ে বানানো বড় বড় বিলবোর্ড, ব্যানারে সাজানো অনুষ্ঠানস্থলকে বর্নিল করতে চেষ্টার কসুর করেনি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। ডিজিটাল যুগে যাবতীয় ডিজিটাল রংই থাকল পুরোটা জুড়ে। বড় পর্দায় দেখানো হয়েছে মিয়ানমার-কীর্তির খন্ড ছবিগুলো। কখনো ঋতুপর্ণার গোল, কখনো রুপণার সেভ।
কিন্তু এতকিছুর মধ্যে অভাব ছিল চোখে লাগার মতো পুরস্কারের। কোনো প্রতীকী চেক, অর্থ পুরস্কার এমনকি একটি ঘোষণাও এল না। যেন আলো আর অভিনন্দন জানানোর সঙ্গে অনুষ্ঠানের চাকচিক্যই হয়ে উঠেছিল স্বীকৃতির প্রতীক।
ঝলমলে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বক্তব্যেও কোনো পুরস্কারের ঘোষণা আসেনি। যদিও বাফুফে সভাপতির কাছ থেকে নগদ কিছু চাইছিল দর্শকরাও।
এসময় তিনি মেয়েদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনারা দুটি কাজ করেছেন। নতুন করে ইতিহাস লিখছেন এবং আমাদের সমাজের মন মানসিকতা বদলানোর যাত্রায় এগিয়ে নিচ্ছেন।’
তাবিথ তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘যেভাবে আমরা নারী দলের পেছনে ছিলাম আগামীতেও থাকব। আমরা আপনাদের ওপর আস্থা রাখছি এবং প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের পেছনে আমরা আছি।’
এদিন দৃপ্ত বার্তায় ঋতুপর্ণা বলেন, ‘আজকের যে পর্যায়ে এসেছি আমরা এটা একটা টিম ওয়ার্ক। ফুটবল কোনো ব্যক্তিগত খেলা নয়। বাংলাদেশের মেয়েরা জানে কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই করতে হয়। আপনারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখবেন। আমরা আপনাদের নিরাশ করব না। আমরা শুধু এশিয়া না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই।’
এদিকে ঋতুর এই আত্মবিশ্বাস ছুঁয়ে গেল প্রধান অতিথি সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে, যিনি বললেন, যার কাছে এই মুহূর্তে দেশের সেরা অ্যাথলেট রাঙামাটির মেয়ে। ঋতুকে লক্ষ্য করে প্রকাশ করেন নিজের উচ্ছাসও, ‘আপনি একটি কথা বলেছেন, আপনারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখবেন বাংলাদেশের মেয়েরা জানে কীভাবে প্রতিকুল পরিস্থিতিতে দৌড়াতে হয়, এটা দারুণ কথা। বাংলাদেশ আপনার জন্য গর্বিত।’
বিআরইউ