Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

গোপন বদলি আদেশ বাতিলের নির্দেশ

মো. মাসুম বিল্লাহ

জুন ২২, ২০২২, ১২:৫৭ এএম


গোপন বদলি আদেশ বাতিলের নির্দেশ

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের চাকরির শেষ কর্মদিবসে দেয়া গোপন বদলি আদেশ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সারা দিন মন্ত্রণালয়ে আলোচনা-সমালোচনা ছিল তুঙ্গে। 

করোনা মহামারির কারণে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ ছিল প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি। সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয় গত ১৩ জুন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম তার চাকরির শেষ দিনে তড়িঘড়ি করে ঊর্ধ্বতন কাউকে অবগত না করেই গোপনে ১৯ জনের বদলির আদেশ দেন। 

বিষয়টি নিয়ে গত ২১ জুন দৈনিক আমার সংবাদে ‘গোপনে প্রাথমিকের শিক্ষক বদলির আদেশ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দিনভর বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। 

পরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদে চলতি দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদকে ১৯ জনের বদলির আদেশ বাতিল করতে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আমার সংবাদকে বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব মহোদয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন এবং দ্রুত বদলি আদেশ বাতিল করে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালককে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’ 

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গতকাল দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে সমালোচনার ঝড়। এর কিছু অংশ আমার সংবাদ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো— একজন শিক্ষক আক্ষেপ করে ফেসবুকে লিখেন, ‘এভাবেই চলছে আমাদের অধিদপ্তর। আর হাজার হাজার শিক্ষক বদলির জন্য বেঁচে থেকেও মরার মতো জীবনযাপন করছেন।’ 

আরেকজন লিখেন ‘একেই বলে ক্ষ্যামতা রে ক্ষ্যামতা। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এমন ধরনের সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ 

একজন শিক্ষিকা লিখেন ‘এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যবহারে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমার হাজবেন্ডের দুইটি কিডনিই ড্যামেজন হয়ে গেছে। ঢাকায় তাকে সপ্তাহে তিনদিন ডায়ালাইসিস করতে হয় এবং ঢাকায় একা থাকে। আমি এসব ব্যাপারে বিস্তারিতসহ একটি এপ্লিকেশন করেছিলাম যে আমাকে অনতিবিলম্বে ঢাকায় ডেপুটেশন দেয়া হোক। মাননীয় প্রতিমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন আমাকে অনুমোদন দিয়েছিলেন কিন্তু এই ডিজি সাহেব আমাকে অনুমোদন দেননি, বলেছিলেন আমাকে ছুটি নিয়ে ঢাকায় থাকতে। আমার হাজবেন্ডের এই চিকিৎসাটা দীর্ঘমেয়াদি। যতদিন বেঁচে থাকবে তাকে এই ডায়ালাইসিস চালিয়ে যেতে হবে। আপনারাই বলেন আমি কতদিন ছুটি নিয়ে আমার হাজবেন্ডের কাছে থাকব?’

কেউ লিখেছেন ‘স্যার, আমাদের কি অপরাধ ছিল? আমরাতো আপনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বসে আছি। কেন আমাদের সাথে এত ছলচাতুরি? আপনি তো আমাদের অভিভাবক’। বদলিতে অনিয়ম হয় বলে বদলি বন্ধ রেখেছে। অনলাইনে বদলি চালু করবে করবে বলে তিন বছর গেলেও আলোর মুখ দেখেনি, গোপনে বদলির আদেশ তার মানে উনি নিজেই তো অনিয়মের সাথে জড়িত। যে সরিষা দিয়ে ভূত দৌড়াবে সেই সরিষার ভিতরেই ভূত।’

আরেকজন লিখেন, ‘ব্যাপারটা হলো এই ভাবে মহাপরিচালক মহোদয়ের শেষ কর্মদিবসে স্থগিত বদলি চালু করেছিলেন, পরে আবার নতুন ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মহোদয় আবার স্থগিত করেছেন। এর মধ্যে যে সকল সুবিধাবাদী সুবিধা নেয়ার তারা নিয়েছেন। এতে বিদায়ী মহাপরিচালকের করার কিছুই নাই।’

Link copied!