Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪,

হোম টেক্সটাইলে রপ্তানি কমেছে ২৫ ভাগ

জাহাঙ্গীর আলম আনসারী

জাহাঙ্গীর আলম আনসারী

মে ২১, ২০২৪, ১১:৩০ পিএম


হোম টেক্সটাইলে রপ্তানি কমেছে ২৫ ভাগ
  • গত বছর ছিল ৯৪ কোটি ডলার
  • চলতি বছর ৭০ কোটি ডলার
  • গ্যাস ও ডলার সংকটের প্রভাব পড়েছে : বিটিএমএর প্রধান মুখ্য কর্মকর্তা

ডলার সংকটের কারণে চাহিদামতো হোম টেক্সটাইল পণ্য তৈরির কাঁচামাল আমদানি করতে পারছেন না টেক্সটাইল মালিকরা। অপরদিকে গ্যাস সংকটের কারণে কমছে উৎপাদন। ফলে প্রতি মাসেই নেতিবাচক ধারায় যাচ্ছে এ খাতের রপ্তানি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে আগের বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ রপ্তানি কমেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোম টেক্সটাইল ফাস্ট ফ্যাশনের দ্রুত পরিবর্তনশীল আইটেমের মতো কোনো আইটেম নয়। যেমন- অনেক পরিবার সারা বছর শুধু একটি বিছানার চাদর দিয়েই চলে। তাই হোম টেক্সটাইলের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের কেনাকাটার গতি হয় ধীর। এছাড়া, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি রাসায়নিক দ্রব্যের দাম, সুতার দাম, পরিবহন ও জ্বালানি খরচের মতো অন্যান্য কারণে হোম টেক্সটাইল পণ্যের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। হোম টেক্সটাইল পণ্যের মধ্যে বিছানার চাদর, দরজা-জানালার পর্দা ও বিভিন্ন ধরনের টেরিটাওয়েল থাকে। 

ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) হোম টেক্সটাইল খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৭০ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে হোম টেক্সটাইল খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছিল ৯৪ কোটি আট লাখ ডলার। সে হিসাবে ১০ মাসে এই খাতে রপ্তানি আয় কমেছে ২৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার বা ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। 

ইপিবির তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০৯ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। আর এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১৬২ কোটি ৯৩ লাখ ডলারের। এরও আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে হোম টেক্সটাইল রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১১৩ কোটি ডলার। 

ধারাবাহিকভাবে হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি কমার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রধান মুখ্য কর্মকর্তা ও সেক্রেটারি জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাকির হোসাইন দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘মূলত তিনটি কারণে হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি কমেছে। প্রথমত, হোম টেক্সটাইলের পণ্য তৈরিতে স্টিম বয়লার ও কাপড় রঙ করার জন্য প্রচুর গ্যাস দরকার হয়। কিন্তু সে অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ নাই। গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন কমছে। দ্বিতীয়ত, হোম টেক্সটাইল পণ্য তৈরির জন্য মিল মালিকদের বাইরে থেকে কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। কিন্তু চলমান ডলার ক্রাইসিসের কারণে চাহিদামতো এলসি খোলা যাচ্ছে না। এ কারণেও উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। আর তৃতীয়ত, কোভিড-১৯ এর প্রভাবটা এখনো রয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘এসব কারণে হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানিতেও প্রভাব পড়েছে। সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা কথা বলছি।’ ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে গত বছরের তুলনায় পাট এবং পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এ সময় পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৭১ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের। আর আগের অর্থবছরের একই সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৭৭ কোটি ৮২ লাখ ডলারের। সে হিসাবে ১০ মাসে পাট ও পাটজাত রপ্তানি কমেছে পাঁচ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের।

এছাড়া, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে আগের বছরের তুলনায় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। এই সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৮৭ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের। আর আগের বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১০০ কোটি ডলারের। সে হিসাবে ১০ মাসে রপ্তানি কম হয়েছে ১৩ কোটি ডলার।অপরদিকে, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছের রপ্তানিও কমেছে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানি হয়েছে ৩২ কোটি ৯৩ লাখ ডলারের। আর আগের বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৩৭ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। সেই ১০ মাসে রপ্তানি কমেছে চার কোটি ডলার।
 

Link copied!