ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

বিশ্বকে বদলে দিতে শিক্ষার্থীদের বড় স্বপ্ন দেখার আহ্বান মুহাম্মদ ইউনূসের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৩০, ২০২৫, ১২:৪৮ এএম

বিশ্বকে বদলে দিতে শিক্ষার্থীদের বড় স্বপ্ন দেখার আহ্বান মুহাম্মদ ইউনূসের
  • দেশের উদ্দেশে বেইজিং ত্যাগ প্রধান উপদেষ্টার

  • সম্মানসূচক ডক্টরেট দিল পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বিশ্বকে বদলে দিতে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি শনিবার বেইজিংয়ে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণে এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র শেখার জায়গা নয়, এটি স্বপ্ন দেখারও জায়গা।’ স্বপ্ন দেখতে পারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শক্তি উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনি যদি স্বপ্ন দেখেন, তবে তা ঘটবেই। আপনি যদি স্বপ্ন না দেখেন, তবে তা কখনো ঘটবে না।’ শিক্ষার্থীদের অতীতের দিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে, কেউ না কেউ আগে তা কল্পনা করেছিল।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,‘কল্পনা যে কোনো কিছু থেকে বেশি শক্তিশালী।’ তিনি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে অদ্ভুত এবং অকল্পনীয় বিষয়ে স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করেন, যদিও অনেক সময় এটি অসম্ভব মনে হতে পারে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘কিন্তু, মানবসভ্যতার যাত্রা হলো অসম্ভবকে সম্ভব করা। সেটাই আমাদের কাজ। আর আমরাই তা করতে পারি।’ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিলের সভাপতি হে গুয়াংচাই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট গং চিহুয়াং অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে বলেন, ‘তিনি পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের ঘর মনে করেন, কারণ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সম্মানসূচক অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।’ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, উদ্ভাবন ও উৎকর্ষতার কেন্দ্র হিসেবে অভিহিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করতে পেরে তিনি গর্বিত।’

তিনি বলেন, ‘এই সম্মাননা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার সেই প্রতিশ্রুতির কথা, যা তিনি গত বছর বাংলাদেশে রূপান্তরকারী পরিবর্তনের অগ্রভাগে থাকা লক্ষ লক্ষ যুবকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য করেছিলেন।’ অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তাঁদের স্বপ্ন ছিল একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার, যে দেশটি দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত হবে। প্রধান উপদেষ্টা তার সরকারের সংস্কার কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যেখানে উদ্যোক্তা বিকাশকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মানুষ জন্মগতভাবে দরিদ্র নয়, বরং ভুল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে দরিদ্র হয়ে পড়ে, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকে না।’

তিনি বলেন, সমাজে প্রচলিত অনেক ভুল ধারণার কারণেই মানুষ কষ্ট ভোগ করে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মানুষ জন্মগ্রহণ করে চাকরি খোঁজার জন্য নয়, বরং তারা সৃষ্টিশীল। মানুষকে চাকরিপ্রার্থী না হয়ে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করতে হবে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘সকল মানুষই উদ্যোক্তা।’

নারীদের বিপুল সম্ভাবনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, এমনকি বাংলাদেশের দরিদ্রতম নারীও মাত্র ২০ মার্কিন ডলার ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, নারীরা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় উদ্যোক্তা হতে পারেন।

শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘শিক্ষার উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত? শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে পরিবর্তন করা।’

বিশ্বকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে কার্বনমুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা তার ‘তিন শূন্য তত্ত্ব’- শূন্য কার্বন নির্গমন, শূন্য দারিদ্র্য এবং শূন্য বেকারত্ব - ও সামাজিক ব্যবসার ওপরও আলোকপাত করেন, যা সমাজের সমস্যাগুলো সমাধান করে।

তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান যাতে তারা কার্বন নির্গমনে অবদান না রাখে।

তিনি বলেন, সকলেরই নিজেদেরকে ‘তিন শূন্য’ ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলা উচিত।

সম্মানসূচক ডক্টরেট দিল পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়:

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধি দিয়েছে চীনের ঐতিহ্যবাহী পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। আজ শনিবার এক জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে এই উপাধি দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ শনিবার পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেন। সেখানে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়।’

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় (পিকেইউ) চীনের বেইজিংয়ের হাইদিয়ান ডিস্ট্রিক্টে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮৯৮ সালের ৩ জুলাই সম্রাট গুয়াংসুর রাজকীয় সনদে এটি ‘ইম্পিরিয়াল ইউনিভার্সিটি অব? পিকিং’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি চীনের দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত।

এরপর, ১৯১২ সালের ৩ মে চীন প্রজাতন্ত্রের সরকার এটির নাম পরিবর্তন করে ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখে। ১৯৫২ সালে চীনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় ইয়েনচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত হয় এবং বর্তমান ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়। পরে ২০০০ সালের এপ্রিলে এটি বেইজিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত হয়।

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এখানে মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসা বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণা পরিচালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ৩০টি কলেজ ও ১২টি বিভাগের মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় এটির অবস্থান ১৪ নম্বরে।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত ২৬ মার্চ চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এরপর তিনি চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও ফোরামে কি-নোট স্পিকার হিসেবে ভাষণ দেন। পরে তিনি চীনের নির্বাহী ভাইস-প্রিমিয়ার ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট দেওয়ার বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত ছিল।

Link copied!