ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ

গ্রেস মার্কের অবসানে ভরাডুবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ১১, ২০২৫, ১২:৩৮ এএম

গ্রেস মার্কের অবসানে ভরাডুবি
  • পাস কমেছে ১৫ শতাংশ গণিতে ভরাডুবি
  • কৃতকার্য হয়েছে ১৩ লাখ, অকৃতকার্য ৬ লাখ, জিপিএ-৫ কমেছে ৪৪ হাজার
  • অসদুপায় রোধে সাফল্য স্বচ্ছতার পরীক্ষায় মান যাচাইয়ের দৃষ্টান্ত
  • ফল প্রকাশে ছিল না কোনো আনুষ্ঠানিকতা স্বচ্ছতার বার্তা

‘গ্রেস মার্ক’-এর নামে নম্বর বাড়িয়ে গ্রেড উন্নতির যুগ শেষ হলো ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মাধ্যমে। এবারের ফলাফলে কোনো ধরনের নম্বর বাড়ানো হয়নি। ৭৯ নম্বর পেলে ৮০ কিংবা ৩৩ নম্বর পেলে ৩৪-এ উন্নীত করার প্রচলিত রেওয়াজ থেকেও সরে এসেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। যার ফলে এবার পাসের হার নেমে এসেছে ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশে, যা গত বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে এই হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির। 

তিনি বলেন, আমরা যে ফল প্রকাশ করেছি, সেটিই খাঁটি ফলাফল। উত্তরপত্রে যা আছে, কেবল সেটুকুই নম্বর হিসেবে দেয়া হয়েছে। কোনো গ্রেস মার্কস, বাড়তি নম্বর কিংবা গ্রেড উন্নয়নের সুযোগ রাখা হয়নি।

‘৭৯ পেলেও ৮০ দেয়া হয়নি’ : বিগত বছরগুলোতে নম্বর কিছুটা কম হলে ফলাফলে পাস দেখাতে বা গ্রেড উন্নত করতে ১ থেকে ৫ পর্যন্ত ‘গ্রেস মার্ক’ দেয়া হতো। এবার থেকে সেই সুযোগ বাতিল করেছে শিক্ষা বোর্ড। ‘৭৯ নম্বর পেলে ৮০ দেয়া হয়নি, এটি এবার হয়নি,’ এ কথা স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সত্যিকারের মেধার মূল্যায়ন হোক। যদি কেউ বলেন যে তারা ক্ষুব্ধ, তাহলে বলব এই ফলে কোনো সংশয় থাকার কথা নয়। এটি খাঁটি ফলাফল। 

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, এবার পরীক্ষা ছিল শতভাগ নকলমুক্ত। কেন্দ্র পর্যায়ে কড়াকড়ি ছিল, জেলা প্রশাসনও সক্রিয় ছিল। এমনকি আমি নিজে কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। তিনি জানান, সরকার এবার স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে— শিক্ষার প্রকৃত মান যাচাইয়ে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। সেই অনুযায়ী পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে কঠোরতা অবলম্বন করা হয়েছে।

৬ লাখ শিক্ষার্থী ফেল, গণিতে সর্বাধিক ব্যর্থতা : এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। অর্থাৎ, পাস করতে পারেনি ৬ লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ। গণিতেই সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১১টি বোর্ডের মধ্যে সবগুলোতেই গণিতে পাসের হার তুলনামূলকভাবে কম। 

বিশেষ করে বরিশাল (৬৪.৬২%), ময়মনসিংহ (৬৪.২৭%) ও দিনাজপুর (৭১.৩৫%) বোর্ডে ভরাডুবি আরও স্পষ্ট। রাজশাহী (৮৬.৫২%) ও যশোর (৮৫.০২%) বোর্ডে গণিতে তুলনামূলকভাবে ভালো ফল হলেও ঢাকা বোর্ডেও পাসের হার ৭৫.১৪%। চট্টগ্রামে ৮১.৫৩% এবং সিলেটে ৮৩.১৭% শিক্ষার্থী গণিতে পাস করেছে। সবচেয়ে ভালো ফল করেছে কারিগরি বোর্ড, যেখানে গণিতে পাস করেছে ৮৮.৭২% শিক্ষার্থী।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, স্কুলে গণিত শিক্ষকের সংকট, অনুশীলনমূলক প্রশ্নের অভাব, মানসম্মত পাঠদানের ঘাটতি এবং কোচিং-গাইড নির্ভরতা বাড়ার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বোর্ডের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গণিত শেখানোর পদ্ধতিগত পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতেও ভরাডুবি এড়ানো কঠিন হবে। 

জিপিএ-৫ কমেছে প্রায় ৪৪ হাজার : ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী পেয়েছে জিপিএ-৫। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯। অর্থাৎ কমেছে ৪৩ হাজার ৯৭ জন। এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৭৩ হাজার ৬১৬ জন, ছাত্র ৬৫ হাজার ৪১৬ জন। সংখ্যার বিচারে মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও সামগ্রিক ফলাফলে পাসের হারে ছেলেরা কিছুটা এগিয়েছে।

বোর্ডভিত্তিক ফলাফল : সর্বোচ্চ পাসের হার রাজশাহী বোর্ডে— ৭৭.৬৩%। এরপর যশোরে ৭৩.৬৯%, চট্টগ্রামে ৭২.০৭%, সিলেটে ৬৮.৫৭%, ঢাকায় ৬৭.৫১%, দিনাজপুরে ৬৭.০৩%, কুমিল্লায় ৬৩.৬০%, ময়মনসিংহে ৫৮.২২% এবং সবচেয়ে কম বরিশাল বোর্ডে— ৫৬.৩৮%। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬৮.০৯% এবং কারিগরি বোর্ডে ৭৩.৬৩%।

নকলের কারণে বহিষ্কার ৭২১ শিক্ষার্থী : ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় নকলসহ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দেশজুড়ে বহিষ্কার হয়েছে ৭২১ শিক্ষার্থী। তবে গত ছয় বছরের তুলনায় এটি সবচেয়ে কম সংখ্যা। সবচেয়ে বেশি বহিষ্কৃত হয়েছে মাদ্রাসা বোর্ডে- ৩২৫ জন। এরপর রয়েছে কারিগরি বোর্ডে ১৩১ জন। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহে ৬৪, দিনাজপুরে ৫৯, কুমিল্লায় ৪৮, ঢাকায় ৪১, বরিশালে ২৮, যশোরে ১৫, রাজশাহীতে ৭, সিলেটে ২ এবং চট্টগ্রামে মাত্র ১ জন বহিষ্কার হয়েছে। 

শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এবার কেন্দ্রভিত্তিক কড়াকড়ি, জেলা প্রশাসনের তৎপরতা এবং অভিভাবকদের সচেতনতামূলক পদক্ষেপের ফলে অসদুপায় রোধে সাফল্য এসেছে।

ফল প্রকাশে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়, স্বচ্ছতার বার্তা : এবার ফল প্রকাশে কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি। শিক্ষা উপদেষ্টা ও বোর্ড চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, এবার ছিল স্বচ্ছতার পরীক্ষাও। বাহুল্য ও গোঁজামিলের পথ ছেড়ে প্রকৃত মান যাচাইয়ের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে এই এসএসসি ফলাফল।

Link copied!