Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪,

ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩, ০৪:০৭ পিএম


ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী

রংপুরের মিঠাপুকুরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। কে এই অনাগত সন্তানের বাবা? আর প্রকৃত অপরাধী কে! তা শনাক্ত হওয়ার পূর্বেই স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার যোগসাজশে রাতারাতি গোপনীয়তা রক্ষা করে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের উপর দায় চাপিয়ে মসজিদের ইমাম দিয়ে বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ওই এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

সরেজমিনে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার ৮নং চেংমারী ইউনিয়নের ফরমুদের পাড়া গ্রামের মো. ওয়াহেদুল ইসলামের কন্যা (১২) স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তেন। বেশ কয়েকদিন থেকে শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের লোকজন, শিশুটির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে শিশুটি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মান সম্মান এবং স্থানীয়দের ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে শিশুটির পরিবার।

ঘটনার দিন, শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত্রি আনুমানিক ৯টার সময় শিশুটির পিতা-ওয়াজেদুল ইসলাম, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুর হক মজনুসহ কয়েকজন একই এলাকার সাজেদুল (রাশেদুল) মিয়ার মানসিক ভারসাম্যহীন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে সাব্বির হোসেনের উপর উক্ত ঘটনার দায় চাপিয়ে বিচারের নামে তাদের একত্রিত করে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামকে ডেকে নাবালিকা শিশুটির সঙ্গে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সাব্বিরের (১৬) জোরপূর্বক বিয়ে দেন। এরপর থেকে বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পারেন।

শিশুটি ও তার পরিবারের অভিযোগ- ৭ থেকে ৮ মাস পূর্বে শিশুটির বাবা মা বাড়িতে না থাকায় মানসিক প্রতবন্ধী সাব্বির শিশুটির ঘরে প্রবেশ করে এবং  শিশুটিকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। শিশুটির পিতার দাবি, সাব্বির সব শিকার করেছে। এর জন্য ওই দায়ি। তাই বিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সাব্বিরের মা দুলালী বেগম বলেন, আমার মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেটা এ কাজ করতে পারেনা। একদিন বের হয়ে গেলে ১৫ দিন বাড়িতে আসেনা৷ তার এসব চাহিদা থাকার কথা নয়৷ নিশ্চয়ই এই ঘটনাটা অন্য কেউ ঘটিয়েছে। সেটার দায় আমার মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেটার উপর চাপিয়ে বিয়ে দিয়েছে। আমাদের ছেলে যেহেতু মানসিক প্রতিবন্ধী, স্বাভাবিকভাবে কেউ হয়তোবা মেয়ে দিতে চাইতোনা। তাই আমরা এ বিষয়ে বাধা দেইনি।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন জানান, প্রকৃত অপরাধীকে বাঁচাতে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটার উপর দায় চাপানো হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধীর কাছ থেকে কেউ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এমনটা করে থাকতে পারে। তাদের দাবি, স্থানীয় আ.লীগের এক নেতার ভয়ে ভিকটিমের পরিবার থানায় যেতে পারেনি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করলে প্রকৃত অপরাধী সনাক্ত করা সম্ভব হতো।

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর ইসলাম মজনু, সাব্বিরের সঙ্গে বিয়ের দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সাব্বির এ ঘটনার জন্য দায়ী। আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। তবে তিনি স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান আমার সংবাদকে বলেন, এখন পর্যন্ত থানায় এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাব্বির বাড়িতে না থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এআরএস

Link copied!