আল-আমিন, নীলফামারী
জুলাই ৯, ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের জঙ্গলী পাড়ায় নাবালিকার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হেনস্তা ও ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায়।
ঘটনার সূত্রপাত ৬ জুলাই, ওই এলাকার হরেন রায়ের ছেলে নিপেনের আশীর্বাদের দিনে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক কিশোরী সেখানে হাজির হয়ে নিজেকে নিপেনের প্রেমিকা বলে দাবি করেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে মেয়ের পক্ষ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তী তিনদিন না খেয়ে পাশের একটি বাড়িতে অবস্থান করে মেয়েটি।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা সাংবাদিকদের জানালে, ঘটনাস্থলে পৌঁছান নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি স্বপ্না আকতার স্বর্ণালি শাহ, গ্লোবাল টিভির প্রতিনিধি সোহেল রানা এবং স্বদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি নুরুল আমিন।
সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখেন, ছেলের সঙ্গে মেয়েটির কোনও গভীর সম্পর্ক ছিল না—শুধু মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে সামান্য যোগাযোগ ছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার একটি প্রভাবশালী পক্ষ মেয়েটিকে ছেলের পাশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়লে সাংবাদিক স্বপ্না আকতার স্বর্ণালি শাহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন এবং থানায়ও বিষয়টি জানান। তবে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত কোনো সহায়তা না আসায় সাংবাদিকরা স্থানীয় ইউপি সদস্য জগদীশের বাড়িতে মেয়েটিকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিয়ে যান।
এ সময় সেখানে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান স্বপ্না আকতার স্বর্ণালি শাহকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দেন—“তুমি কীভাবে সাংবাদিকতা করো তা দেখে নেবো।” এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাঙচুর ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে নীলফামারী জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ইসলাম কালু, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাসরীন আক্তার এবং জেলা এনপিসি’র সমন্বয়ক আক্তারুজ্জামান খান ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষিতিশ বাবু বলেন, “এখানে যারা একটু সচেতন বা সামর্থ্যবান, তাদের নানা উপায়ে হয়রানি করে একটি চক্র অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে।”
ঘটনার পর স্বপ্না শাহের স্বামী ও গ্লোবাল টিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল রানা বাদী হয়ে নীলফামারী সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এমআর সাঈদ জানান, “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ইএইচ