দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
আগস্ট ৮, ২০২৫, ০৬:০১ পিএম
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নে এক গৃহবধূর মুখে এসিড নিক্ষেপ করে বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মিঠু ইসলামের বিরুদ্ধে।
এসিডে দগ্ধ লিমা আক্তার (১৯) দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিমা আক্তার জানান, দেড় বছর আগে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক মো. মিঠু ইসলাম (২৫) এর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ চার লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের উসকানিতে স্বামী নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন এবং অতিরিক্ত পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকেন।
ভুক্তভোগীর ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২ আগস্ট রাত ১০টার দিকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যরা মিলে তাকে বেধড়ক মারধর করেন এবং হত্যার চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত ও গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করা হয়। পরে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে মিঠু ইসলাম এসিডভর্তি একটি ভ্যাসলিন (মেরিল) কৌটা ব্যবহার করে তার মুখে ঢেলে দেন। এতে ঠোঁট ও জিভের কিছু অংশ ঝলসে যায়। গৃহবধূর চিৎকারে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
পরদিন সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় লিমা পিত্রালয়ে ফিরে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান। প্রথমে স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি হলে ৪ আগস্ট তাকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
লিখিত অভিযোগে অভিযুক্তদের নাম— মো. মিঠু ইসলাম (২৫) – স্বামী, মো. মফিজুল ইসলাম (৫০) – শ্বশুর, মোছা. রুবি বেগম (৪৮) – শাশুড়ি ও মোছা. বিউটি আক্তার (৩০) – ননদ। সকলেই দেবীগঞ্জ থানার মোস্তফাপুর হাজিপ্রধানপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগীর পরিবারের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা ও এসিড হামলা। এর আগে স্থানীয়ভাবে আপোষের চেষ্টা চললেও নির্যাতন না থামায় তারা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইএইচ
