মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
চার দশক ধরে একই জমিতে ধান আর নানা ফসল ফলিয়ে সংসার চালিয়ে আসছেন কৃষক আব্দুল জলিল। কিন্তু গত দুই বছর ধরে সেই জমিতে ধান নয়, জমছে শুধু পানি।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সামন্তা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে একমাত্র আয়ের উৎস। জমি ছাড়া আর কোনো উপার্জনের পথ নেই আমার। তাই স্থায়ী জলাবদ্ধতার কাছে হার মেনেছি।
শুধু জলিল নন, একই দুর্দশায় পড়েছেন সামন্তা গ্রামের শতাধিক কৃষক।অভিযোগ, গ্রামের পাশের খালের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছের খামার বানিয়েছেন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় জমির পানি বের হওয়ার কোনো পথ নেই। বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। ফলে ডুবে গেছে সবজি ক্ষেত, আমনের বীজতলা আর সদ্য রোপণ করা ধান।
স্থানীয় কৃষক লাল্টু মিয়া জানান, এমন পরিস্থিতিতে তাদের সামনে বেঁচে থাকার লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠছে। বছরের পর বছর কৃষি কাজ করে পরিবার চালালেও এখন সেই জমি থেকে কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। বরং প্রতি মৌসুমে লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। পুকুর মালিকদের সঙ্গে কথা বললে তারা দায় এড়িয়ে চলেন। একে অপরের দিকে আঙুল তোলেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
এদিকে সময় চলে যাচ্ছে, আর জমির পানি নামছে না। ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে কৃষকদের জন্য। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্টের মুখ উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে, না হলে এই জমিগুলো সারা বছর পানির নিচে থাকবে। কৃষকদের দাবি, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ক্ষতির হিসাব আর থামবে না। শুধু ফসল হারানো নয়, জীবিকার একমাত্র ভরসাটুকুও হাতছাড়া হয়ে যাবে তাদের।
জেএইচআর