জাবি প্রতিনিধি
আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নির্মিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’-এ ফুল না দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জাবি সংসদ। এতে ক্যাম্পাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
মঙ্গলবার সকালে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ‘জুলাই শহীদদের’ স্মরণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত।
ছাত্র ইউনিয়নের মতো একটি ঐতিহাসিক ও সচেতন সংগঠনের কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত ছিল না।
একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, “ছাত্র ইউনিয়ন যদি অদম্য ২৪ স্মৃতিস্তম্ভকে এড়িয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়, তাহলে এটি আন্দোলনের প্রতীকী স্থাপনার প্রতি অবমাননার শামিল। এমন সংস্কৃতি ভবিষ্যতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’-এর জাবি আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “২০২৪ সালের শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘অদম্য ২৪’ স্মৃতিস্তম্ভটি ইতোমধ্যে সরকারিভাবে স্বীকৃত। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা জনাব আদিলুর রহমান খান আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে এটি একমাত্র উপযুক্ত স্থান হওয়া উচিত। ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ যদি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়, তাহলে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হয়। এখনই যদি বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান না নেওয়া হয়, তাহলে আন্দোলনের মূল চেতনা ও অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।”
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রাব্বি হাসান বলেন, “অদম্য ২৪ কেবল একটি ভাস্কর্য নয়, এটি আমাদের আন্দোলনের ইতিহাসের প্রতীক। শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে হলে, সেটিই হওয়া উচিত ছিল প্রাথমিক ও প্রকৃত স্থান। ছাত্র ইউনিয়নের এমন সিদ্ধান্ত আমাদের হতাশ করেছে।”
অভিযোগ প্রসঙ্গে জাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অদ্রি অংকুর বলেন, “শহীদ মিনারের স্ট্রাকচার আমাদের জাতীয় ইতিহাসের বিভিন্ন আন্দোলনের প্রতীক। এর আটটি সিঁড়ি স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রাখা আটটি সংগ্রামকে নির্দেশ করে। আমরা ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-কে আওয়ামী স্বৈরাচার থেকে মুক্তির সংগ্রাম হিসেবে দেখি। সেক্ষেত্রে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো সাংঘর্ষিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে আমরা মুক্তির অভ্যুত্থানকেই শ্রদ্ধা জানিয়েছি।”
ইএইচ