Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪,

‘বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে’

বাসস

বাসস

আগস্ট ১৬, ২০২৩, ০৮:৪৩ পিএম


‘বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপিকে সন্ত্রাসি-বোমা হামলাকারিদের দল হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দলটি আগামীর নির্বাচন যেন সুষ্ঠুভাবে হতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার হত্যাকারি, সন্ত্রাসি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টিকারি, বোমা হামলাকারি, গ্রেনেড হামলাকারি বিএনপি, তারা জানে যে তারা নির্বাচন করে কোনদিন ক্ষমতায় যেতে পারবে না, জনগণের ভোটও পাবে না। তাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং ভোট যেন না হয় সেজন্য যতরকমের চক্রান্ত করা যায় সেই চক্রান্তে তারা লিপ্ত।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘স্মরণ সভা’য় সভাপতিত্বকালে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।

বিএনপি সেই ’৭৫ সাল থেকে এই চক্রান্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা চক্রান্ত করেছে আর দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলছে। এ দেশের মানুষ যখন নৌকায় ভোট দিয়েছে স্বাধীনতা পেয়েছে। আজকে তারা পেট ভরে খেতে পারছে, বিদ্যুৎ পাচ্ছে, রাস্তাঘাট পেয়েছে, কর্মসংস্থান পাচ্ছে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে- জাতির পিতা যা চেয়েছিলেন।

’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে সেদিন তিনি তাঁর পরিবারকে হারালেও বাঙালি জাতি তাঁর সকল সম্ভবনাকে হারিয়ে ফেলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছিলাম। কিন্তু একটাই প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছিলোম লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না।’

’৭৫-এর শোক-ব্যথাকে বুকে ধারণ করে দিনরাত কাজ করে গেলেও একের পর আঘাত, প্রাণসংহারের প্রচেষ্টা তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘আমারও সময় সীমিত, কত ভয়ানক মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমার নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়ে আমাকে ফিরিয়ে এনেছে। বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমার দলের নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়ে আমাকে রক্ষা করেছে।’

তিনি বলেন, আমার বাবা রক্ত দিয়ে গেছেন এদেশের মানুষের জন্য। রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা-আমার ভাইয়েরা। প্রতি নিয়ত হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে আমাদের দিনরাত প্রচেষ্টা এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শুরু করেছিলেন ভূমিহীন মানুষের জন্য ঘর করে দেওয়া। তিনি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। তাই মুজিববর্ষে আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল দেশে একটি মানুষও আর ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না।

তাঁর সরকার বিনে পয়সায় ২ কাঠা জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে প্রায় ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬৬০টি পরিবারকে বিনে পয়সায় জমিসহ ঘর দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর মাত্র সাড়ে ১১ হাজার বাকী আছে তাদেরও ঘর তৈরী হবে। এটা হয়ে গেলে পরে দেশের আর একটি মানুষও ভুমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকেরই একটা ঘর বা ঠিকানা হবে।

এভাবে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের যে কাজ করছে সেটাই ‘অনেকের অন্তজ্বালা’, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লুটে খেতে পারছে না, ক্ষমতা নাই, জনগণকে শোষণ করতে পারছে না। জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারছে না, তাই নির্বাচনে কারচুপির ধূয়া তুলছে। বিএনপির মুখে নির্বাচনে কারচুপির কথা আসে কোত্থেকে। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া দুই-দুইবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। তারপরেও তাদের মুখে আবার গণতন্ত্রের কথা।

তিনি বলেন, আসল কথা ওরাতো নির্বাচন চায় না। কারণ, তারা কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে তাদের দুইনেতার একজন এতিমের অর্থ আত্মস্বাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, আরেকজনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক এবং আর কোনদিন রাজনীতি করবে না বলে মুচলেখা দিয়ে দেশ থেকে চলে গিয়েছে।

দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ‘স্মরণ সভা’র প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং বর্ষিয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও এডভোকেট কামরুল ইসলাম সভায় বক্তৃতা করেন।

আরো বক্তৃতা করেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট তারানা হালিম, মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি ও হুমায়ুন কবীর।

দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম সভা সঞ্চালনা করেন ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদ, জেল হত্যাকান্ডের শিকার জাতীয় চারনেতা, ভাষা আন্দোলন এবং ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার শহীদসহ সকল গণআন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এআরএস

Link copied!