সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৮:৫৬ পিএম
দৈনিক আমার সংবাদ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রতিকূলতা পেরিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ফরিদপুরের সালথার মেধাবী শিক্ষার্থী সুব্রত কুমার কুন্ডুর পাশে দাঁড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘প্রভাতের হাসি’।
সংগঠনটির সহায়তায় সুব্রতের শিক্ষাজীবনের দায়িত্ব নিয়েছেন সংগঠনের উপদেষ্টা, ওয়ান গ্রুপের পরিচালক ও বিজিএমইএ-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোমান মিয়া।
‘প্রভাতের হাসি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ পিনু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে বল্লভদী ইউনিয়নের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে আসছি। সুব্রতের অসাধারণ ফলাফল এবং তার পরিবারের আর্থিক সংকট আমাদের হৃদয় ছুঁয়েছে। তাই তার ভর্তি, বই-খাতা, লেখাপড়াসহ সকল ব্যয় আমরা বহন করব ইনশাআল্লাহ। এই কাজে রোমান মিয়া সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।”
গত ১১ জুন বিকেলে আমার সংবাদসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সুব্রতকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এরপরই ‘প্রভাতের হাসি’ সংগঠনটি তার পাশে দাঁড়ায়।
দারিদ্র্যকে জয় করে জিপিএ-৫ অর্জনকারী সুব্রত ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদি গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা সুধীর কুন্ডু একজন ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার এবং মা একজন গৃহিণী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সুব্রত দ্বিতীয়। আর্থিক সঙ্কট সত্ত্বেও পড়ালেখার প্রতি অগাধ ভালোবাসাই তাকে এগিয়ে নিয়েছে সাফল্যের পথে।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় তিনি ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে অংশ নেন। স্কুলটির পাশের হার যেখানে মাত্র ৩৩.৩৩ শতাংশ, সেখানে সুব্রত একমাত্র শিক্ষার্থী হিসেবে জিপিএ-৫ অর্জন করে চমক সৃষ্টি করেন।
পরীক্ষার ঠিক আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়লেও, মায়ের স্নেহ ও বাবার সাহস তাকে পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়। সবগুলো পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে ফলাফল অর্জন করে সে।
সুব্রতের মা-বাবার একটাই আকুতি ছিল—“যদি কেউ এই মেধাবী ছেলেটার পাশে দাঁড়াত, তাহলে সে দেশের জন্য কিছু করে দেখাতে পারত।”
‘প্রভাতের হাসি’ ও ওয়ান গ্রুপ সে আকুতির জবাব দিয়েছে কাজের মাধ্যমে। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজের অন্যান্য বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ইএইচ