আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ
আগস্ট ১৭, ২০২৫, ১১:৩০ পিএম
ময়মনসিংহ নগরীতে অস্থায়ী নিউ হকার্স মার্কেটসহ রাস্তার দুপাশে ফুটপাতে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের যৌথ টাস্কফোর্স।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলা অভিযানে হকার্স মার্কেট ভেঙে দেওয়া হয় এবং পাঁচ দোকানিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ সময় তাজমহলের মোড় থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ফুটপাত দখলমুক্ত হওয়ায় পথচারীদের চলাচলে স্বস্তি ফেরে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু।
উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ নাহিয়ান ইসলাম, র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের ডিএডি রফিক, আনসার ও ভিডিপি জেলা কমান্ড্যান্ট রবিউল ইসলাম, ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা।
স্টেশন রোডে অভিযান শুরুর আগে ব্যবসায়ীদের মালামাল সরানোর জন্য ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। পরে এস্কাভেটরের মাধ্যমে অস্থায়ী হকার্স মার্কেট ভেঙে ফেলা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হকাররা পুনর্বাসনের দাবি জানায়। ব্যবসায়ী নূর আলম বলেন, “জেলা প্রশাসক নিজেই আমাদের অস্থায়ীভাবে বসার অনুমতি দিয়েছিলেন। এখন হঠাৎ ভাঙা হলো, বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কষ্ট হবে।” আরেক হকার বাচ্চু মিয়া বলেন, “আমরা যানজট কমানোর জন্য এখানে এসেছিলাম। কিন্তু এটাও স্থায়ী হলো না।”
অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা উচ্ছেদ অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। গাঙ্গিনারপাড়ের বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম বলেন, “ফুটপাত দখল হওয়ায় আগে যানজট ও ছিনতাই বেড়ে যেত। এখন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছি।” গাঙ্গিনারপাড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুজ্জামান ছোটন জানান, ২৫ জন আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা ফুটপাতে পুনরায় হকার বসা রোধ করবেন। এর ব্যয়ভার বহন করবে ব্যবসায়ীরা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু বলেন, “ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানপাটে পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়তেন এবং যানজট হতো। পূর্ব ঘোষণা দিয়েই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।” সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, “মানুষের চলাচলে স্বস্তি ফেরাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হকাররা চাইলে জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের দাবি জানাতে পারবেন।”
তবে সাধারণ মানুষ অভিযোগ করেছেন, “বছরের পর বছর ফুটপাত উচ্ছেদ হয়, কিন্তু কিছুদিন পরই নতুন করে বসে যায় হকাররা। ভাঙাগড়ার এই খেলায় শেষ পর্যন্ত দুর্ভোগে পড়ে পথচারীরাই।” তারা এর স্থায়ী সমাধান চান।
ইএইচ