ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

মাংকিপক্সে আক্রান্ত হলে যৌনাঙ্গে যে ধরনের ঘা তৈরি হতে পারে

বিবিসি বাংলা

বিবিসি বাংলা

জুলাই ২৪, ২০২২, ০৭:৫৮ পিএম

মাংকিপক্সে আক্রান্ত হলে যৌনাঙ্গে যে ধরনের ঘা তৈরি হতে পারে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বলা হচ্ছে সারা বিশ্বে এবছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মাংকিপক্স ভাইরাসের প্রায় ১৪,০০০ সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

ব্রাজিলের থিয়াগো আক্রান্ত ব্যক্তিদের একজন। থাকেন সাও পাওলো শহরে। কিছু উপসর্গ নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে যাওয়ার পর জানতে পারলেন যে তিনিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পরিসংখ্যানের অংশ হয়ে গেছেন।

তার শরীরে যেসব উপসর্গ দেখা দিয়েছিল সেগুলো হচ্ছে: প্রচণ্ড জ্বর, ক্লান্তি, কাঁপুনি এবং সারা শরীরে ঘা।

কিন্তু যে সমস্যাটি তার কাছে তীব্র হয়ে ওঠে ছিল তা হচ্ছে যৌনাঙ্গ ও তার আশেপাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং জ্বালাপোড়া করা। তিনি বলছেন তার যৌনাঙ্গের ত্বকে কমপক্ষে ন'টি জায়গায় ঘা তৈরি হয়েছিল।

"এর ফলে ব্যথা করতো, এবং প্রচুর চুলকানি হতো," বিবিসি নিউজ ব্রাজিলের কাছে তিনি তার এই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন, "পুরো জায়গাটা ফুলে ওঠেছিল, কখনো কখনো মনে হতো ওখানে আগুন ধরে গেছে।"

যে ভাইরাসের কারণে স্মলপক্স হয়, সেই একই পরিবারের একটি ভাইরাস মাংকিপক্স সংক্রমণের জন্য দায়ী। তবে এটি অতোটা মারাত্মক নয়। আক্রান্ত প্রাণী যেমন বানর, ইঁদুর এবং কাঠবিড়ালের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

মানুষ থেকে মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ তেমন একটা দেখা যায় না। তবে কেউ যদি আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন, তাহলে তার দেহেও এই ভাইরাসটির সংক্রমণ হতে পারে।

ফেটে যাওয়া চামড়া, চোখ এবং মুখের পাশাপাশি এটি শ্বাসপ্রশ্বাস সংক্রান্ত যেসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ রয়েছে- যেমন ফুসফুস, শ্বাসনালী, এসবের মধ্য দিয়েও মানুষের দেহে প্রবেশ করে।

কেউ যদি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা কাপড়, বিছানা এবং তোয়ালে স্পর্শ করেন তাহলে এসবের মাধ্যমেও রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।


কী ধরনের উপসর্গ

থিয়াগোর দেহে উপসর্গগুলো দেখা দিতে শুরু করে ১০ই জুলাই।

"প্রথমে আমার খুব ঠাণ্ডা লাগতে শুরু করলো, এবং তার পর প্রচণ্ড জ্বর ওঠলো। মাথাব্যথা হচ্ছিল এবং খারাপ লাগছিল। আমার মনে হচ্ছিল সারা শরীর যেন ভেঙে পড়ছে," বলেন তিনি।

"আমি ভেবেছিলাম আমার হয়তো ঠাণ্ডা লেগেছে, এমনকি আমি হয়তো কোভিডেও আক্রান্ত হয়েছি। কিন্তু পরদিন গোসল করার সময় আমি প্রথমবারের মতো আমার পিঠে ও লিঙ্গে কিছু ক্ষত বা ঘা লক্ষ্য করলাম।"

এর পরে তার পা, উরু, বাহু, পেট, বুক, মুখ এবং যৌনাঙ্গে এই ঘা ছড়িয়ে পড়লো।

"এগুলো ছিল দেখতে ফুলে যাওয়া ফুসকুড়ির মতো, ব্যথা করতো," বলেন তিনি।

উপসর্গ দেখা দেওয়ার তিনদিন পর তিনি হাসপাতালে যান।

এর প্রায় সপ্তাহ-খানেক আগে তিনি তার একজন বন্ধুর সংস্পর্শে গিয়েছিলেন যার দেহে মাংকিপক্সের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।

রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেল যে তার দেহেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। তিনি যৌন-বাহিত সংক্রমণের পরীক্ষাগুলোও করালেন, কিন্তু সেগুলোর রিপোর্ট পাওয়া গেল নেগেটিভ।

"হাসপাতালে যেতে আমার কিছু সময় লেগে গিয়েছিল। কারণ তীব্র ব্যথার ফলে আমার পক্ষে কাপড় পরা অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। এমনকি গাড়িতে বসে কোথাও যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছিল ব্যথার কারণে। আর ফুলে যাওয়ার কারণে অবস্থার আরো অবনতি হয়েছিল।"

থিয়াগো জানিয়েছেন হাসপাতালে যাওয়ার পর ডাক্তাররা প্রদাহ দূর করার জন্য তাকে কিছু ওষুধ দেন। ব্যথা কমানোরও ওষুধ দেন। সাথে কিছু মলমও দেন যার ফলে তারা জ্বালাপোড়া কমে গিয়েছিল।

"মলমটা কাজ করছিল, কিন্তু চার ঘণ্টা পর এটা আর কাজ করছিল না এবং ব্যথা ফিরে এলো।"

থিয়াগো এবং তার বন্ধু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ব্রাজিলের বাইরে কোথাও যান নি।

"হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসার সাথে সাথেই আমি আমার বন্ধুকে ফোন করি, যার সাথে আগের ক'দিন আমি ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে গিয়েছিলাম। আমার যে এমন একটা রোগ ধরা পড়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেশীদেরও অবহিত করলাম," বলেন তিনি।

থিয়াগো জানান, ব্যথা এবং চুলকানি ছাড়াও হাসপাতালে তিনি কঠিন সময় পার করেছেন।

"ক্ষতস্থানগুলো কিভাবে পরিষ্কার করতে হবে সে বিষয়ে আমাকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নি। কতদিন অসুস্থ থাকবো এবং আমাকে কতদিন বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে এসব বিষয়েও কিছু বলা হয়নি। এসব বিষয়ে জানার জন্য আমাকে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করতে হলো এবং আমার যারা চিকিৎসক বন্ধু তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে হলো," বলেন তিনি।

"মাংকিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ কোনো জায়গা ছিল না। এই রোগীরা হাসপাতালে ঢুকতে পারতো এবং সারা হাসপাতালে মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করতে পারতো। আমার মনে হয়নি যে তারা এই ভাইরাসটির জন্য প্রস্তুত ছিল।"

তিনি বলেন এসময় তিনি ডাক্তার ও নার্সদের কাছ থেকে অমার্জিত এবং অসম্মানজনক আচরণের শিকার হয়েছিলেন।

বিভিন্ন ধাপে এই ঘা-এর পরিবর্তন ঘটে।

"হাসপাতালের যেখানেই আমি গিয়েছি, আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে যে আমি এইচআইভি পজিটিভ কি না অথবা আমার দেহে যৌন-বাহিত কোনো রোগের সংক্রমণ ঘটেছে কি না।"

"আমার এধরনের রোগ হয়েছে তা ভেবে আমি লজ্জা পেতাম," বলেন থিয়াগো।

কারণ এই রোগের প্রকোপের ব্যাপারে সমকামী লোকদের কথাই বলা হচ্ছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যৌন-স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্লিনিকগুলোতে সেসব পুরুষের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে, যারা পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেছেন।

তবে সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে এটিই সংক্রমণের একমাত্র কারণ নয়। কেউ যদি আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে যায় তাহলেও তিনি এতে আক্রান্ত হতে পারেন।

ব্রিটেনে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা বলেছে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপে যাদের দেহে মাংকিপক্সের সংক্রমণ ঘটেছে, দেখা গেছে তাদের "একটি উল্লেখযোগ্য অংশ" সমকামী এবং উভকামী পুরুষ।

একারণে সংস্থাটি তাদেরকে এই ভাইরাসের উপসর্গের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে।


মাংকিপক্স সম্পর্কে যা জানা যায়
মাংকিপক্স ভাইরাস সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকাতে, আরো সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে রেইনফরেস্ট এলাকায় দেখা যায়।

এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের দুটি প্রজাতি সম্পর্কে জানা যায়- পশ্চিম আফ্রিকান ও মধ্য আফ্রিকান।

এ-দুটো প্রজাতির মধ্যে মধ্য আফ্রিকান ধরনটি একটু মৃদু যা এখন পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে।

এখন যে আফ্রিকার বাইরেও অস্বাভাবিক হারে প্রচুর সংখ্যক মানুষ মাংকিপক্সে আক্রান্ত হচ্ছে এবং তারা কখনও ওই অঞ্চলে ভ্রমণও করেন নি, সেকারণে ধারণা করা হচ্ছে যে ভাইরাসটি এখন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা বলেছে কেউ যদি আশঙ্কা করে থাকেন যে তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তাহলে তিনি স্থানীয় স্বাস্থ্য ক্লিনিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

তবে সরাসরি ক্লিনিকে যাওয়ার আগে তাদেরকে ফোন কিম্বা ই-মেইল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও সংস্থাটি আক্রান্ত ব্যক্তিদের যৌন সম্পর্ক না করার পরামর্শ দিয়ে বলেছে, উপসর্গ থাকা অবস্থায় তারা যেন সেক্স পরিহার করে এবং সংক্রমণের আট সপ্তাহ পরে সতর্কতা হিসেবে কনডম ব্যবহার করেন।

,
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ১৯৯৬-৯৭ সালে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ভাইরাসটির প্রভাব মৃদু। কখনও কখনও চিকেনপক্সের সাথে এর মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও সংক্রমণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি আপনা আপনিই দূর হয়ে যায়।

তবে কখনও কখনও মাংকিপক্সের প্রভাব মারাত্মকও হতে পারে।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যেসব মৃত্যুর কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করেছে তার সবগুলোই হয়েছে আফ্রিকার দেশগুলোতে।

সংক্রমণের পর এর প্রথম উপসর্গ দেখা দিতে সাধারণত পাঁচ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

এই সময়ের মধ্যে চুলকানি হতে পারে।

সাধারণত মুখ থেকে এটি শুরু হয় এবং পরে শরীরের অন্যান্য জায়গায়, বিশেষ করে হাত, পা এবং পায়ের তলায় ছড়িয়ে পড়ে।

মাংকিপক্স ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে যে ধরনের চুলকানি হয় সেটা খুবই বিরক্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক। বিভিন্ন ধাপে এই চুলকানির ধরনে পরিবর্তন ঘটতে পারে।

এটা অনেকটা চিকেনপক্সের মতো।

গুটি বা পাঁচড়া তৈরি হওয়ার আগে চুলকানি হবে এবং পরে ওই গুটি খসে পড়বে।

সাধারণত ১৪ থেকে ২১ দিন পর মাংকিপক্সের সংক্রমণ থেকে আক্রান্ত ব্যক্তি সেরে ওঠেন।

Link copied!