ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

ওয়ানডেতে টাইগারদের রেকর্ড জয়

আহমেদ হৃদয়

আহমেদ হৃদয়

মার্চ ১৯, ২০২৩, ০১:১৩ এএম

ওয়ানডেতে টাইগারদের রেকর্ড জয়

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি-টুয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করার রেশ এখনো কাটেনি। ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ এবার উড়িয়ে দিলো আয়ারল্যান্ডকে। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আইরিশদের ১৮৩ রানে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। বাংলাদেশের রান পাহাড়ে রীতিমতো চাপা পড়ে আয়ারল্যান্ড। বড় লক্ষ্য তাড়ায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেছে আইরিশদের ব্যাটিং লাইনআপ। তাসকিন-এবাদতদের তোপের মুখে ১৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা। এর ফলে ১৮৩ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যা নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আট উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

আগের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৯ বিশ্বকাপে। ওই ম্যাচে আট উইকেটে ৩৩৩ রান তুলেছিল টাইগাররা। গতকাল সিলেটে বাংলাদেশের দেয়া ৩৩৯ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ধীরেসুস্থে শুরু করেন আইরিশ দুই ওপেনার স্টেফেন ধোয়েনি ও পল স্টার্লিং। দুই আইরিশ  ওপেনার স্টিফেন ধোয়েনি ও পল স্টার্লিংকে দুই প্রান্ত থেকেই চেপে ধরেন তাসকিন-মুস্তাফিজরা। প্রথম ছয় ওভারে সফরকারীরা কোনো উইকেট না হারালেও স্কোরবোর্ডে তুলে ২৩ রান। আর তাতে আইরিশদের প্রয়োজনীয় রান রেট বেড়ে দাঁড়ায় সাতের ওপরে। শুরুর সেই চাপ কমাতে এরপর আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন দুই আইরিশ ওপেনার। কাউন্টার অ্যাটাকে কিছুটা হলেও সাফল্য পেয়েছেন তারা। পাওয়ার প্লের শেষের চার ওভারে ২৮ রান তোলে আইরিশরা। তাতে শুরুর পাওয়ার-প্লে শেষে বিনা উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৫১ রান যোগ করেছে আয়ারল্যান্ড। এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারেনি আইরিশদের উদ্বোধনী জুটি। বিপজ্জনক হয়ে উঠার আগেই ধোয়েনিকে সাজঘরে ফেরান সাকিব আল হাসান। 

এই স্পিনারের করা ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেছেন তিনি। ধোয়েনি ফেরার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেলেন না পল স্টার্লিং। একটি করে চার ও ছক্কায় ২২ রানে থেমেছেন এই ওপেনার। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি খানিকটা শর্ট লেংথে রেখেছিলেন এবাদত হোসেন। সেটি আগে থেকেই বুঝতে পেরে পুল করতে যান স্টার্লিং কিন্তু বলে বাড়তি বাউন্স থাকায় ঠিকমতো টাইমিং করতে পাররেননি এই ওপেনার। তাতে বল তার ব্যাটের কানা ছুঁঁয়ে মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়ে। এদিন উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিক। আগের ওভারে স্টার্লিংকে ফেরানোর পর নিজের পরের ওভারেই হ্যারি ট্যাক্টরকেও ফেরান এবাদত। এবারও ওভারের দ্বিতীয় বলটি শট লেংথে ছিল তাতে ব্যাটার পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে ট্যাক্টরের ব্যাট থেকে এসেছে আট বলে তিন রান। এবাদত পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নেয়ার পর দুই প্রান্ত থেকেই পেস আক্রমণে যান তামিম। আর বোলিংয়ে ফিরেই অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন তাসকিন। 

১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে বার্লবির্নিকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন এই পেসার। তার আগে পাঁচ রান এসেছে আইরিশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে। তাসকিনের এই ওভারের কোনো বল থেকেই রান নিতে পারেনি আইরিশরা, ফলে উইকেট মেডেন পান তিনি। নিজের পরের ওভারে আক্রমণে ফিরে আবারও উইকেটের দেখা পান তাসকিন। ওভারের প্রথম বলটি শট লেংথে ফেলে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে রেখেছিলেন এই পেসার, সেখানে অন সাইডে টেনে খেলতে গিয়ে ইয়াসির রাব্বির হাতে ধরা পড়েন আইরিশ এই উইকেটকিপার ব্যাটার। তার ব্যাট থেকে এসেছে ছয় রান। ওভারের বাকি বলগুলোতেও কোনো রান দেননি তাসকিন, ফলে পরপর দুটি উইকেট মেইডেন পেয়েছেন এই পেসার। ৬০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ৭৬ রান তুলতেই সাজঘরে টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটার। ১৬ রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে আইরিশরা যখন ধুঁকছে তখন দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলার চেষ্টা করেন জর্জ ডকরেল ও কুর্টিস ক্যাম্ফার। 

ষষ্ঠ উইকেটে এই দুজনে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। তবে অসহায় ছিলেন বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের সামনে। তাদের জুটিতে একশ পার হয় সফরকারীরা। কিন্তু দলীয় রান তিন অঙ্ক স্পর্শ করার পর আর বেশি দূর এগোয়নি এই জুটি। ১৬ রান করা ক্যাম্পারকে ফিরিয়ে ৩৩ রানের এই জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। ২৪তম ওভারের চতুর্থ বলটি অফ ও মিডল স্ট্যাম্পের ওপর রেখে ফুল লেংথে করেছিলেন নাসুম। বলে সামান্য টার্ন থাকায় ডিফেন্স করতে গিয়ে লাইন মিস করেন ক্যাম্পার। তাতে বল সরাসরি পায়ে আঘাত হানলে নাসুমের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এই আইরিশ অলরাউন্ডার। ফলে রিভিও নেন তিনি। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। নিজের পরের ওভারে বোলিংয়ে ফিরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন নাসুম। ওভারের পঞ্চম বলে এক রান করা গেরেথ ডেলানিকে লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলানোর পরের বলেই অ্যান্ড্রি ম্যাকব্রাইনকেও ফিরিয়েছেন এই স্পিনার। মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে রানের খাতা খুলতে পারেননি ম্যাকব্রাইন। ইনিংসে এটি নাসুমের তৃতীয় শিকার। ব্যাটারদের এমন আসা-যাওয়ার মিছিলেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ডকরেল। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। তার ৪৫ রান শুধুই হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৩০ ওভার পাঁচ বল খেলে ১৫৫ রান তুলে অলআউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড।

এর আগে সিলেটে আইরিশদের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি তামিমদের। ব্যক্তিগত তিন রানের মাথায় আইরিশ পেসার মার্ক অ্যাডায়ারের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর শুরুর সেই চাপ কিছুটা সামলে নেন লিটন দাস এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দলীয় ৪৯ রানের সময় সাজঘরে ফেরেন লিটন। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে পল স্টার্লিংয়ের হাতে তালুবন্দি হন এই ওপেনার। আউট হওয়ার আগে লিটনের ব্যাট আসে ৩১ বলে ২৬ রান। এরপর দলেকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নেন সাকিব আল হাসান; তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন শান্ত। তবে বেশিদূর এই জুটি এগোতে পারেনি। দলীয় ৮১ রানে সাজঘরে ফেরেন শান্ত। তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। এরপর ক্রিজে আসেন অভিষিক্ত তৌহিদ হূদয়। সাকিবকে নিয়ে গড়েন বড় জুটি। এদিনই সাকিব ওয়ানডেতে নিজের সাত হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। 

অন্যপ্রান্তে অভিষিক্ত হূদয়ও দারুণ খেলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধ-শতক। যদিও দুজনের সামনেই সেঞ্চুরির সুযোগ থাকলেও কেউই পারেননি ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে। ৯৩ রানের মাথায় বিদায় নেন সাকিব। অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে ইয়র্কার ধরনের ডেলিভারি করেছিলেন গ্রাহাম হিউম। দূর থেকেই খেলার চেষ্টা করলেন সাকিব। তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে গেল কিপার লরকান টাকারের হাতে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানাতেই ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা ধরলেন সাকিব। এই অলরাউন্ডারের বিদায়ের পরই মারমুখী হতে থাকেন হূদয়। অন্যপ্রান্তে মুশফুিকর রহিম খেলেন টর্নেডো এক ইনিংস। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকান অভিজ্ঞ এই টাইগার ক্রিকেটার। যদিও শেষ পর্যন্ত অর্ধ-শতক তোলার আগেই বিদায় নেন মুশফিক। ২৫ বলে ৪১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার। তখনো ব্যাট হাতে লড়ছিলেন হূদয়। 

অবশ্য অভিষেকে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তা আর পাওয়া হলো না। নেহায়েত কপাল মন্দ! সাকিবের মতো নার্ভাস নাইন্টিতে কাটা পড়েন তরুণ এ ব্যাটারও। গ্রাহাম হিউমের করা ৪৬তম ওভাররের পঞ্চম বলটি গুড লেন্থে পড়ে লেগ স্ট্যাম্প বরাবর আসছিল, সেখানে ঘুরে দাঁড়িয়ে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে লফটেট শট খেলতে চেয়েছিলেন হূদয়। কিন্তু ব্যাটে-বলে কোনোরকম সংযোগই হয়নি, তাতে বল সরাসরি তার উইকেটে আঘাত হানে। শেষ পর্যন্ত ৯২ রানে বোল্ড হয়েই থেমে যায় হূদয়ের ইনিংস, দলের রান তখন ২৯৭।

এরপর দলের হয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন ইয়াসির আলি রাব্বি। যদিও অন্যপ্রান্তে তাসিকন আহমেদ ফিরে যান ১১ রান। এরপর রান আউটে কাটা পড়ে রাব্বি ফেরেন ১৭ রান করে। নাসুম আহমেদ থাকেন ১১ রানে অপরাজিত। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আট উইকেট হারিয়ে তামিম ইকবালের দল সংগ্রহ করে ৩৩৮ রান। আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট সংগ্রহ করেন গ্রাহাম হিউম।

Link copied!