ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
জাল সনদে বিদেশযাত্রা

ভয়ঙ্কর ঝুঁকিতে নারীরা

মো. মাসুম বিল্লাহ

জুন ৪, ২০২৩, ০১:৫১ এএম

ভয়ঙ্কর ঝুঁকিতে নারীরা
  • সরকারের নির্দেশিত রোডম্যাপ ছাড়া অবৈধ সার্টিফিকেটে বিদেশে গিয়ে অনিশ্চয়তায় বহু নারী

দক্ষতা ছাড়া বিদেশে যাওয়া নারীরা বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে
—শাহানা হুদা রঞ্জনা 
সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

প্রশিক্ষণ ছাড়া বিদেশে গেলে নারীদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে
—প্রকৌশলী লুৎফর রহমান 
অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

প্রশিক্ষণ ছাড়া বিদেশে নারীদের অবশ্যই হেনস্তার শিকার হতে হবে 
—শরিফুল ইসলাম হাসান
মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম প্রধান, ব্র্যাক

খাদিজা বেগম। নোয়াখালির হাতিয়া উপজেলায় বাড়ি। চার বছর সৌদিতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৮ সালে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসেন। এরপর রাজধানীর বাটা-সিগন্যাল এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করছেন। আবারও তিনি দেশের বাইরে যাচ্ছেন। অবৈধ উপায়ে তৈরি করেছেন প্রশিক্ষণের জাল সার্টিফিকেট। এর আগেও তিনি প্রশিক্ষণ ছাড়া এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ গিয়েছিলেন। এবারও হাঁটছেন পুরোনো পথে। গেলো কয়েক বছরে নদী, নাজমা, কুলসুম, ফরিদা, কেয়া বিদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশের মাটিতে ফিরেছেন। সংবাদমাধ্যমে খবরে এখনো সেগুলো ভেসে বেড়াচ্ছে। এরপরও বিদেশগামী নারীদের মধ্যে সতর্কতা নেই। নিজদের দক্ষতা তৈরিতে প্রশিক্ষণে আগ্রহ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমপ্রতি দেশে ফেরত আসা নারীদের প্রায় ৯৫ ভাগই সরকারের নির্দেশিত রোডম্যাপ ছাড়া অবৈধ পথ অনুসরণ করে বিদেশে গেছেন। নেননি প্রশিক্ষণ, বানান জাল সার্টিফিকেট। এতে করে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি নারী কর্মীদের মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। সম্মুখীন হতে হচ্ছে নানা রকম বিড়ম্বনার। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকার বিদেশে কর্মসংস্থানে আগ্রহী নারী কর্মীদের ট্রেনিং ও সার্টিফিকেট সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক কিছু নির্দেশিকা জারি করেছেন। সরকার প্রদত্ত প্রশিক্ষণসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দু’মাসব্যাপী গৃহপরিচারিকা প্রশিক্ষণ। মূলত বিদেশযাত্রার সব জটিলতা এড়াতেই এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেখা গেছে, কতিপয় অসৎ রিক্রুটিং এজেন্সি বাধ্যতামূলক এই ট্রেনিং সার্টিফিকেটটি জাল করার মাধ্যমে কার্যসিদ্ধির অসাধু প্রচেষ্টা করে থাকে।  এসব জাল ডকুমেন্ট প্রথাগত পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স বিএমইটিতে জমা হয়ে থাকে। পদ্ধতিটি ম্যানুয়াল হওয়ায় বিএমইটি কর্তৃক সঠিকতা যাচাই করার সুযোগ থাকে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিদেশগামী নারী কর্মীরা বেশির ভাগ সময়ই এর ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন এবং প্রবাসে অনিশ্চিত জীবন যাপন করেন।

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর এসব গর্হিত কার্যক্রম বন্ধ করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিএমইটি, নারী কর্মীদের জন্য অনলাইন ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স চালু করেছে। প্রথাগত ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পদ্ধতিতে দুর্নীতির সুযোগ থাকলেও অনলাইন ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পদ্ধতি সম্পূর্ণ ডিজিটাল হওয়ায় এতে দুর্নীতির সুযোগ নেই। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিতি গণনার ডিজিটাল যন্ত্র থাকায় সবাইকেই সশরীরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। এতে অসাধুতা অবলম্বনের সুযোগ কমেছে। সরকার কর্তৃক এমন অভাবনীয় উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং কার্যকরীও বটেও— মনে করছেন অভিজ্ঞরা।  কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের অসাধু কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে সরকারের এই উদ্যোগকে নানাভাবে প্ররোচিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে দেশের বাইরে বিপদে পড়ছেন নারীরা। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচি প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান আমার সংবাদকে বলেন, এখন আর কোনো নারীকে দুই মাসের প্রশিক্ষণ ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। তারা যদি অন্য কোনো পথ অনুসরণ করে বিদেশ যায় তাহলে অবশ্যই হেনস্তার শিকার হতে হবে। আমরা আবারো অনুরোধ জানাব, যে সমস্ত নারী বিদেশ যেতে আগ্রহী তাদেরকে অবশ্যই বিএমইটির অধীনে যে সব জায়গায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয় সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারপর যেন বিদেশ যায়। এতে করে তার সুরক্ষা ও যাবতীয় বিষয়ে অবশ্যই সরকারের নজর থাকবে। আর যদি সে গোপনীয়ভাবে যায় তাহলে নাগরিক হিসেবে তার দায়ভার বহন করা সরকারের জন্য অবশ্যই কঠিন হয়ে যাবে। ব্যক্তি নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে যেন নিজেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি করে এরপর বিদেশ যায়, এতে অবশ্যই তার জন্যই ভালো দিকগুলো অপেক্ষা করবে বলে মনে করছি। 

বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী লুৎফর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, ‘যারা বিদেশ যেতে আগ্রহী নারী-পুরুষ সবার জন্যই প্রশিক্ষণ আবশ্যক। এ ক্ষেত্র নারীদের প্রশিক্ষণ আরও বেশি জরুরি। নারীরা যদি প্রশিক্ষণ ছাড়া নিজেকে ডেভেলপমেন্ট না করে বিদেশের মাটিতে পা রাখে তাহলে তাকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। সে বিদেশ গিয়ে কী করবে, কোন জব করবে কোনটিকে অগ্রাধিকার দেবে সেই আলোকে বাংলাদেশে থাকতে তাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। তাকে জানতে হবে বুঝতে হবে ওই কাজ সম্পর্কে। এ জন্য প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সে যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে যায় তাহলে তার জন্য অবশ্যই মর্যাদাসহ ভালো কাজের সুযোগ-সুবিধা অনেকের চেয়ে বেশি থাকবে। অন্যথায় তার জন্য মহাবিপদ অপেক্ষা করছে।’

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর শাহানা হুদা রঞ্জনা আমার সংবাদকে বলেন, ‘প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে দক্ষ করা ছাড়া বিদেশে যাওয়া নারীদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি। এ ছাড়া আশা করব— নারী শ্রমিকদের বিদেশ পাঠানোর সময় সবচেয়ে আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত যেন সরকার করে। আমরা আমরা চাই আমাদের মেয়েরা কাজ নিয়ে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ুক। রেমিট্যান্স আয়ে পুরুষের পাশাপাশি তাদেরও ভূমিকা থাকুক। কিন্তু এর বিনিময়ে কোনোভাবেই নারীর অমর্যাদা আমাদের কাম্য নয়। নারী যেখানেই, যে দেশেই কাজ করুক, তাকে অবশ্যই নিরাপত্তা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীরাও যেন তাদের নিরাপত্তা ছাড়া নিজের দক্ষতা পরিচয় দিয়ে বিদেশের মাটিতে পা না দেয় সে জন্য আহ্বান থাকবে।’

আরএস
 

Link copied!