ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

চিকিৎসা ব্যয়ে দিশাহারা মানুষ

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

এপ্রিল ৭, ২০২৪, ০১:২৮ এএম

চিকিৎসা ব্যয়ে দিশাহারা মানুষ
  • স্বাস্থ্য খাতে বাজেট ধারাবাহিকভাবেই কমছে

চিকিৎসায় ব্যক্তি ব্যয়ের বেশিরভাগই ওষুধ ক্রয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করতে পারলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। স্বাস্থ্য খাতে সরকারের বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন।
—অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, ঢাবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাসিন্দা মিরাজ আহমেদ। দুই মাস আগে ক্যানসার আক্রান্ত আট বছর বয়সি ছেলেকে নিয়ে আসেন রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। তার ছেলে বর্তমানে শিশু ক্যানসার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। ছেলের সঙ্গে নিজেও আছেন হাসপাতালে। তার ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়। ছেলের চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয় আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের। 

তিনি বলেন, আমার ছেলের ক্যানসার শনাক্ত হয় তিন মাস আগে। জেলা সরকারি হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসা নেয়ার পর চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন ঢাকায় নিয়ে আসতে। ক্যানসার হাসপাতালে দুই মাস চিকিৎসায় কিছু উন্নতি হয়েছে। ছেলের চিকিৎসা করাতে এসে আমার সঞ্চয়ের পাঁচ লাখ টাকা শেষ হয়ে গেছে। আর্থিক সমস্যার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এক সপ্তাহ পর ছেলেকে নিয়ে গ্রামে ফিরে যাবেন বলে ঠিক করেছেন। দেশে চিকিৎসা ব্যয়ের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণের গল্প শুধুমাত্র মিরাজ আহমেদের নয়। ব্যয়বহুল চিকিৎসায় এমন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় বিশ্বজুড়ে আজ  রোববার ‘স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতে, কাজ করি একসাথে’ প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের ব্যাপারে বৈশ্বিক অঙ্গীকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ে অপ্রতুল উন্নত চিকিৎসা, ব্যয়বহুল চিকিৎসাসেবা, ওষুধের ঊর্ধ্বমুখী দাম, স্বাস্থ্য খাতে অপর্যাপ্ত বাজেট, জনবল ও অবকাঠামো সংকটের মতো সমস্যা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

সর্বশেষ সরকারি সংস্থা স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণা বলছে, স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির নিজের ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলেছে। চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৮ দশমিক ছয় শতাংশ ব্যক্তি নিজেই বহন করেন। আর এ ব্যয় করতে গিয়ে বছরে ৮৬ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দেশে মানুষের চিকিৎসা খাতে ব্যক্তিগত ব্যয় আরও বেড়েছে। এ অতিরিক্ত ব্যয় ২০১৫ সালে ছিল ৬৭ শতাংশ, যা ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশে। ২০২০ সালে বাংলাদেশে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৮ দশমিক পাঁচ শতাংশ ব্যয় হয়েছে ব্যক্তির নিজ খরচে। গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে ওষুধ কিনতে। এতে ব্যয় ৬৪ দশমিক ছয় শতাংশ। 

এ ছাড়া রোগ শনাক্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ১১ দশমিক সাত শতাংশ, বিকল্প চিকিৎসাসেবায় ১৩ দশমিক দুই শতাংশ এবং হাসপাতালে খরচ ১০ দশমিক এক শতাংশ। ২০১৯ সালের তুলনায় এ বছর হাসপাতাল ও বিকল্প চিকিৎসাসেবা নেয়ায় ব্যয় বেড়েছে। এসব ব্যয়ের মধ্যে সরকার ও দাতা সংস্থা থেকে আসে ৩১ শতাংশ। শুধু সরকার বহন করে ২৩ দশমিক এক শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতের আর্থিক বিবরণ নিয়ে এ প্রতিবেদনে ১৯৯৭ থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮, ১৯ ও ২০ সালে সরকারের অংশ ছিল যথাক্রমে মোট ব্যয়ের ২৮, ২৬ ও ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ সরকারের অংশ ক্রমান্বয়ে কমছে। আবার ওই বছরগুলোতে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬৪, ৬৬ ও ৬৯ শতাংশ। অর্থাৎ চিকিৎসা করাতে গিয়ে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জাতীয় বাজেটের অন্তত ১৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দিলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে এ খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র পাঁচ শতাংশ।

দেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসাসেবা ও সর্বজনীন চিকিৎসাসেবা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল ও জনবহুল দেশ। এখানে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট সন্তোষজনক নয়। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট না বাড়ালে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমাদের দেশে নগরকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যসেবা আগাচ্ছে। এতে প্রান্তিক মানুষ নগরে আসছে সেবা নিতে। সেবা নিতে এসে নিজেদের ব্যয় বাড়াচ্ছে। একজন রোগীর সঙ্গে কমপক্ষে একজন মানুষ নগরে আসছে। এতে দুজনের ব্যয় হচ্ছে। প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হলে মানুষ নগরমুখী হবে কম। এতে ব্যয় সংকোচন হবে। দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় ওষুধ ক্রয়ে। ওষুধের দাম কিছুদিন পরপরই বাড়ে। ওষুধের দামের ওপর ওষুধ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া ওষুধের দাম বাড়ানো যাবে না। সামগ্রিক স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলাই পারে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে। 
 

Link copied!