ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স দখলের ষড়যন্ত্র

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ১১:৩০ পিএম

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স দখলের ষড়যন্ত্র

নেপথ্যে নাম এসেছে বিমা কোম্পানিটির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সিইও মীর রাশেদ বিন আমান, সাবেক চেয়ারম্যান নুর-এ-হাফসা এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান জয়নুল বারীর

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স দখলের ষড়যন্ত্র চলছে। এর নেপথ্যে নাম এসেছে বিমা কোম্পানিটির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সিইও মীর রাশেদ বিন আমান, সাবেক চেয়ারম্যান নুর-এ-হাফসা এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান জয়নুল বারী।

তথ্য মতে, আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষের দিকে ইন্স্যুরেন্সটির অন্যতম শেয়ারহোল্ডার ও পৃষ্ঠপোষক গোলাম কুদ্দুসকে সরিয়ে দিয়ে কোম্পানিটি দখলে নিতে ষড়যন্ত্র শুরু করেন কোম্পানির সাবেক সিইও রাশেদ বিন আমান, যিনি আবার মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বড় মেয়ের সাবেক জামাতাও। আর শ্বশুরের বিরুদ্ধে জামাইকে এই ষড়যন্ত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সোনালী লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান নূর-ই-হাফছা, সাবেক আইডিআরএ চেয়ারম্যান মো. জয়নুল বারী, তার ছেলে মহসিনুল বারী শাকির এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার একজন নিকট আত্মীয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানির একজন কর্মকর্তা বলেন, একটি আন্তর্জাতিক অডিট সংস্থা কর্তৃক সম্পাদিত অডিটে গোলাম কুদ্দুসকে ক্ষমতাচ্যুত করার এবং কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণ লাভের একটি চক্রান্ত সম্পূর্ণ উন্মোচিত হয়। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স যা সাত দিনের মধ্যে গ্রাহকের দাবি মিটিয়ে দিতে সক্ষম এবং উদ্যোক্তা কুদ্দুসের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠানটি ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে দেখিয়েছিল প্রতিষ্ঠা হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০২৩ সালে রাশেদ আমান, নূর-ই-হাফসা, জয়নুল বারী, শাকির এবং তোফাজ্জল মিয়ার একজন আত্মীয় মিলে একটি গোপন আঁতাতের মাধ্যমে কুদ্দুসকে সরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কিভাবে হাতিয়ে নেয়া যায় সেই ষড়যন্ত্র শুরু করেন। 

এছাড়া সিএফও থেকে সিইও হওয়া রাশেদ বিন আমান কোম্পানিটির অনেক তহবিল আত্মসাৎ করেছেন বলেও সাম্প্রতিক বিভিন্ন তথ্যে জানা গেছে। তিনি গোপনে ডামি বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোম্পানির ১২ শতাংশ শেয়ার নামে-বেনামে অধিগ্রহণ করেছিলেন। জাল আর্থিক রেকর্ড তৈরি করে কোম্পানিটি টেকওভার করার সব কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। রাশেদের সন্দেহজনক কার্যক্রম অবলোকন করে সোনালী লাইফ একটি ফরেনসিক অডিট করার জন্য ২০২৩-এর নভেম্বরে একটি আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম নিয়োগ করে। তাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাশেদ তার সহযোগীদের নামে তহবিল আত্মসাৎ এবং শেয়ার অর্জনের জন্য ডিজিটাল স্বাক্ষর নকল এবং আর্থিক তথ্য কারসাজি করেছিলেন। এই পুরো সময়জুড়ে নূর-ই-হাফসা রাশেদের কাজকে সমর্থন করেছিলেন বলে জানা গেছে। আইডিআরএর সাবেক চেয়ারম্যান বারী কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হোদা ভাসি চৌ অ্যান্ড কোংকে নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলে পরিস্থিতির অবনতি হয়। ওই নিরীক্ষায় মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের প্রাপ্য বাড়িভাড়াসহ আরও এমন সব বিষয়কে ওই অডিটের পরিধির বাইরে রাখা হয়, যাতে কুদ্দুসকে ইচ্ছাকৃতভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও দায়ী প্রতিপন্ন করা যায়। রাশেদ এবং নূর-এ-হাফসাকে পরিত্রাণ দেয়া যায়। ফলে কুদ্দুস এবং এসএলআইসিএল-এর বোর্ডের আপত্তি জানানো সত্ত্বেও জয়নুল বারী কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানি দিয়েই অডিট করায়।  
চলতি বছরের এপ্রিলে আইডিআরএ চেয়ারম্যান কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের ভিত্তিতে একতরফাভাবে সোনালী লাইফের বোর্ড ভেঙে দিয়ে একজন প্রশাসক নিয়োগ দেন। 

সোনালী লাইফ কর্মকর্তারা জানান, ওই পদক্ষেপটি ছিল কোম্পানিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে এবং কোম্পানির স্টক মূল্য হ্রাস করার জন্য হয়েছিল, যা টেকওভারের জন্য পরিস্থিতি অনুকূল করে।

জয়নুল বারীর নিয়োগ দেয়া প্রশাসক ১৩ জন সিনিয়র এক্সিকিউটিভকে বরখাস্ত করেন এবং বেতন কমিয়ে দেন। যার ফলে দুই মাসের মধ্যে ব্যবসায় প্রায় ৬০-৮০ শতাংশ হ্রাস পায়। যদিও পরে আদালত নির্বাহীদের পুনর্বহাল করেছিল, কিন্তু যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। ওই পরিস্থিতির থেকে উত্তরণে সোনালী লাইফ এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

আগস্ট বিপ্লবের পর কিছুদিন চুপ থাকলেও এখন আবারও বিভ্রান্তিমূলক প্রচার-প্রচারণ শুরু করেছে বারীর সেই চক্রটি। এমনকি কুদ্দুসের নাতি-নাতনিদের পর্যন্ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন সাবেক আইডিআরএ চেয়ারম্যানের পুত্র শাকির। ইতোমধ্যে শাকির প্রহেলিকা ডিজাইন লিমিটেডের ডিরেক্টর তাবিব রায়হানকে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এসএলআইসিএলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রাশেদ বিন আমান শাকিরকে প্রায় ২২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন টেক ওভারে সাহায্য করার জন্য।

এদিকে সোনালী লাইফের উদ্যোক্তা কুদ্দুস, সাবেক আইডিআরএ চেয়ারম্যান এবং রাশেদের ভূমিকা নিয়ে একটি স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তিনি কোম্পানির আর্থিক পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য একটি স্বনামধন্য অডিট ফার্ম নিয়োগের জন্য আহ্বান জানান। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের অভিযোগ প্রসঙ্গে আইডিআরএর সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল বারী সোনালীর সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছেলের কর্মকাণ্ডকে তিনি সচেতন নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলে দাবি করেন।

দেশে বাইরে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে রাশেদ বিন আমানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া নূর-ই-হাফসার পরিবার জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ। এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না। সোনালী লাইফে শাকির তার বিনিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, তার উদ্যোগে অনেক অংশীদার জড়িত আর এত টাকার বিষয় সত্য নয়, সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ সময় রাশেদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানান। 

আইডিআরএর তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনালী লাইফের সারা দেশে ২৬ হাজার ৬৯৩ জন বিমা এজেন্টসহ ২০৪টি শাখা রয়েছে। এটি ২০২০ সালে মোট বিমা দাবির ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০২১ সালে ৯৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৯৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ১২২ কোটি ২৬ লাখ টাকার প্রায় সব বিমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে।
 

Link copied!