মাগুরা প্রতিনিধি:
মে ২৫, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
মাগুরা প্রতিনিধি:
মে ২৫, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
মাগুরায় সরকারি নজরদারির ঘাটতির কারণে দিন দিন ভয়াবহ আকার নিচ্ছে তামাক চাষ। ক্ষতিকর এই ফসলের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশ ও পুষ্টিকর খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। তামাক চাষে ঝুঁকিতে পড়া কৃষকদের পাশে দাড়াতে দ্রুত ও কঠোর সরকারি তদারকির প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ঢাকা ট্যোবাকো, জাপান ট্যোবাকো, আবুল খায়ের, নাসির ও আকিজ ট্যোবাকোসহ বিভিন্ন কোম্পানি কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক এবং অগ্রিম ঋণ দিয়ে তামাক চাষে প্ররোচিত করছে। পাশাপাশি তারা তামাক ক্রয়ের নিশ্চয়তাও প্রদান করছে, যা কৃষকদের স্বাভাবিক খাদ্যশস্যের পরিবর্তে ক্ষতিকর তামাক চাষে উত্সাহিত করছে।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক চাষের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করার কাজ চলছে, তবে কোম্পানির প্রলোভনের কারণে এটি কঠিন হয়ে পড়েছে।’
অতিরিক্ত উপপরিচালক বিষ্ণু পদ সাহা জানালেন, জেলায় এ বছর প্রায় আট হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
আলাইপুর, আলোমখালী, ফুলবাড়ীসহ মাগুরার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন। সদরের আলাইপুর এলাকার কৃষক জীবন বলেন, আবুল খায়ের কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে আমি দুই হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করেছি।
তামাক চাষ জমির উর্বরতা কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে তামাক শুকানোর জন্য শত শত টন কাঠ পুড়ানো হচ্ছে, যা বনাঞ্চল ধ্বংস ও পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া তামাক চাষ ও পাতা শুকানোর কাজে নিয়োজিত নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছেন।
সচেতন মহল সরকারকে আবেদন জানিয়েছেন— তামাক চাষের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে কৃষকদের আরও বেশি সচেতন করতে হবে, বিকল্প পুষ্টিকর ফসল চাষে উৎসাহ দিতে হবে এবং কোম্পানিগুলোর অবৈধ প্রলোভনের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিআরইউ