জুলাই ৭, ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) পেশাজীবীদের জন্য নিজেদের আবাসন কর্মসূচির শর্ত শিথিল করে নতুন ধরনের ‘গোল্ডেন ভিসা’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য মনোনয়ন-ভিত্তিক এই গোল্ডেন ভিসা চালু করা হয়েছে। তবে ভিসা পেতে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। আগে যেখানে গোল্ডেন ভিসা পেতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের প্রয়োজন হতো, এবার তা ছাড়াই পেশাজীবীরা আবেদন করতে পারবেন।
পেশাজীবী ও ডিজিটাল নির্মাতারা অন্তর্ভুক্ত
নতুন এই ভিসা কর্মসূচিতে নার্স, শিক্ষক, অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, করপোরেট নির্বাহী, ইউটিউবার, পডকাস্টার, কনটেন্ট নির্মাতা, ২৫ বছরের বেশি বয়সী ই-স্পোর্টস পেশাজীবী, বিলাসবহুল ইয়টের মালিক এবং মেরিটাইম নির্বাহীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নার্সদের জন্য অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক।
এতে আগে শুধু উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, মেধাবী শিক্ষার্থী এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সীমিত গোল্ডেন ভিসা প্রাপ্তির সুযোগ থাকলেও এখন তা আরও বিস্তৃত হয়েছে।
মনোনয়ন ও যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া
এ কর্মসূচির আওতায় মনোনয়ন পাওয়া নাগরিকদের আবেদন যাচাই করবে আমিরাতের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রায়াদ গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব জানিয়েছেন, আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাইয়ের অংশ হিসেবে অর্থপাচার, অপরাধমূলক রেকর্ড এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সেই সঙ্গে আবেদনকারীর পেশাগত দক্ষতা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, স্টার্টআপ বা ব্যবসায়িক অবদান রাখার সম্ভাবনা যাচাই করা হবে। যাচাই শেষে আমিরাত সরকারের কাছে আবেদন পাঠানো হবে এবং সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রয়োজনে নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক অনুমোদন লাগতে পারে। তবে আবেদনকারীকে ভিসার জন্য দুবাইয়ে যেতে হবে না। আবেদন করা যাবে ওয়ান ভাস্কো সেন্টার, অনলাইন পোর্টাল, নিবন্ধিত অফিস অথবা কল সেন্টারের মাধ্যমে।
পরিবার ও কর্মী নেওয়ার সুযোগ
নতুন গোল্ডেন ভিসা পাওয়া ব্যক্তিরা তাঁদের পরিবারকে আমিরাতে নিয়ে যেতে পারবেন। একইসঙ্গে গৃহকর্মী ও চালক নিয়োগেরও অনুমতি থাকবে। ব্যবসা বা পেশাগত কাজের ক্ষেত্রেও পূর্ণ স্বাধীনতা মিলবে।
রায়াদ কামাল আরও বলেন, “সম্পত্তি-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা বিক্রি বা ভাগাভাগির কারণে বাতিল হলেও মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা স্থায়ী থাকবে।”
ভিসা ফি ও মেয়াদ
গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা)। ভারত ও বাংলাদেশে প্রথম ধাপে চালু হওয়া এই পরীক্ষামূলক কর্মসূচির আওতায় আগামী তিন মাসে শুধু ভারতেরই ৫ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিইপিএ অংশীদারদের জন্য প্রসারিত পরিকল্পনা
এই মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতের কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি (সিইপিএ) স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত দিয়ে শুরু হলেও ভবিষ্যতে এতে চীনসহ আরও দেশ যুক্ত হবে।
ইএইচ