ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
পরীক্ষায় প্রশ্ন-খাতা দেবে বিদ্যালয়

স্বাক্ষরবিহীন প্রজ্ঞাপনের ধোঁয়াশা কাটল

বেলাল হোসেন

নভেম্বর ২২, ২০২২, ১২:৫৯ এএম

স্বাক্ষরবিহীন প্রজ্ঞাপনের ধোঁয়াশা কাটল

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে ধোঁয়াশার অবসান ঘটল। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্বাক্ষরবিহীন এক প্রজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এতে বলা হয়, শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্ন লিখে দেয়া হবে, আর বাড়ি থেকে উত্তরপত্র নিয়ে আসবে শিশুরা।

এরপর বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেবে। অবশেষে এর অবসান হয়েছে। আগের মতই বিদ্যালয়ে প্রশ্ন ছাপানো এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতাও দেয়া হবে। গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভ্যন্তরীণ এক মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মিটিংয়ে অংশ নেয়া অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও অডিট) মো. মোশাররফ হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন ছাপাবে এবং পরীক্ষার খাতা সরবরাহ করবে। তিনি বলেন, আজকালের মধ্যেই সারা দেশের বিদ্যালয়গুলোতে অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে এ অতিরিক্ত সচিব বলেন, যাদের বাজেটে সমস্যা তাদের সমন্বয় করতে বলা হবে। এটা আগামী বছরের স্লিপ ফান্ডের টাকার সাথে এডজাস্ট করা হবে। কেন এমন প্রজ্ঞাপন সামাজিক মাধ্যমে আসল— এর উত্তরে তিনি বলেন, স্বাক্ষরবিহীন কাগজের তো কোনো ভিত্তি নেই। তবে এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি এ কর্মকর্তা।

দেশে ৬৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে তৃতীয় প্রান্তিকে (চূড়ান্ত) বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যার ভিত্তিতে বার্ষিক উন্নয়ন ফান্ড দেয়া হয়। স্কুল লেভেল ইম্প্রুভমেন্ট প্ল্যানের আওতায় ২০০ শিক্ষার্থীর বেশি স্কুলগুলোতে বছরে ৭০ হাজার টাকা, ২০০ শিক্ষার্থীর কম স্কুলে ৫০
হাজার টাকা এবং ৫০০ শিক্ষার্থীর অধিক স্কুলে ৮০ হাজার টাকা দেয়া হয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বছরে তিনটি সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হয়। বিগত বছরগুলোতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের সমন্বয়ে প্রশ্ন তৈরি, মডারেশন ও প্রশ্ন ছাপানো হয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্কুলগুলোতে প্রশ্ন পাঠায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষার উত্তরপত্রের খাতা বানায়।

এভাবেই দীর্ঘদিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। মূলত উন্নয়ন ফান্ড থেকেই এ ধরনের খরচ করা হয়। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন বিষয়ে বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানার পূর্ব আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রজত বসাক আমার সংবাদকে বলেন, আমরা ফেসবুকে অধিদপ্তরের একটা প্রজ্ঞাপন দেখেছি। তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।

তিনি বলেন, আমাদেরকে তো শিক্ষা অফিস থেকে ওইরকম কোনো নির্দেশনাও দেয়া হয়নি। এ শিক্ষক আরও বলেন, ্পরীক্ষার জন্য আমরা আগের মতই প্রস্তুতি নিয়েছি। বগুড়া জেলার ঠনঠনিয়া সরকারি বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জানি। আমরা পরীক্ষার ফি না নেয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছি। আর বাচ্চাদের খাতার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে বাসা থেকে আনার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষা অফিস থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের এ বছর বার্ষিক পরীক্ষার খাতা বাসা থেকে নিয়ে আসার কথা বলে দিয়েছি। এ শিক্ষক আরও বলেন, বোর্ডে তো প্রশ্ন লেখা সম্ভব না, এভাবে পরীক্ষা নেয়া যাবে না। প্রশ্নটা নিজেরাই বাজেট করে করব।  

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ‘শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্ন লিখে দেয়া হবে আর বাড়ি থেকে উত্তরপত্র নিয়ে আসবে শিশুরা’ এমন দিক-নির্দেশনা দিয়ে কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। এ নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সামালোচনার ঝড় বইতে থাকে। বিষয়টা নিয়ে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, অর্থের কৃচ্ছ্রসাধনের অনেক ক্ষেত্র আছে।

প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বয়স ও মানসিক অবস্থায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সবাই জানে। এ জন্যই অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা দিচ্ছে সরকার। বাড়ি থেকে কাগজ এনে পরীক্ষা শিশুর ওপর চাপ বাড়াবে। শিশুদের মধ্যে বৈষম্য বাড়বে। মানসিক অবস্থায় প্রভাব পড়বে।  

এদিকে বার্ষিক মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে গতকাল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেয়া হয়। এতে বলা হয় একটি মহল প্রাথমিক শিক্ষার বার্ষিক মূল্যায়ন নিয়ে অপ্রপাচার চালাচ্ছে। মূল্যায়ন পদ্ধতি সংক্রান্ত ভুয়া নির্দেশনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে এই অপ্রপ্রচার চালায়। ভুয়া নির্দেশনা বুঝতে না পেরে মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে কিছু গণমাধ্যম।

গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা এখনো দেয়নি। গণমাধ্যমে এ ধরনের সংবাদ প্রচারের আগে তথ্য যাচাই করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক মূল্যায়ন পদ্ধতির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় যে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, তা সঠিক নয়। অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে— এখনো পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে কোনো নিদের্শনা দেয়া হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে যে নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে, তা ভুয়া বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

ভুয়া নির্দেশনার একাংশে বলা হয়, ‘মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পদের জন্য শিক্ষার্থী অভিভাবকদের কাছ থেকে কোনো মূল্যায়ন ফি গ্রহণ করা যাবে না। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্নপত্র লিখে মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। কোনো শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অধিক হলে সে ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র হাতে লিখে ফটোকপি করা যেতে পারে। প্রশ্নপত্র ফটোকপির প্রয়োজন হলে বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক খাত থেকে ব্যয় করা যাবে। চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাদা কাগজ বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য আগেই শিক্ষার্থীকে অবহিত করতে হবে।’ মন্ত্রণালয় জানায়, এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

Link copied!