সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩, ১১:১৫ পিএম
সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩, ১১:১৫ পিএম
প্রচলিত আছে দেশের কোনো হাসপাতালে কোনো রোগের চিকিৎসা না পেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) এলে সে রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায়। মানুষের চিকিৎসাসেবায় বহু বছর ধরে হাসপাতালটি সেবা দিয়ে আসছে। দেশসেরা সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পাশাপাশি কম মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আস্থার যায়গা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রায় সারা দেশের রোগী দিয়ে সব সময় তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না এ সেবাকেন্দ্রে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পেলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গেলে বাধে বিপত্তি। কারণ হাসপাতালটির গুরুত্বপূর্ণ অনেক মেশিনই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
আমার সংবাদের হাতে পাওয়া তথ্য বলছে, হাসপাতালটির তিনটি এমআরআই মেশিনের একটিও চলছে না দীর্ঘদিন। সিটিস্ক্যান মেশিনগুলো ধুঁকছে রোগীর চাপ সামলাতে। ডায়াথার্মির ৫২টির মধ্যে অচল ২৪টি, ১৩টি আলট্রাসনোগ্রামের মধ্যে আটটি অচল, অ্যানেসথেসিয়ার ৩৭টির যন্ত্রের মধ্যে দুটি, এনজিওগ্রামের তিনটি মেশিনের মধ্যে একটি, ৯টি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে চারটি, ইসিজির ১২টির মধ্যে চারটি অচল রয়েছে। ৩৪টি ওটি টেবিলের মধ্যে অচল চারটি; ৩৬টি ওটি লাইটের (সিলিং) মধ্যে তিনটি অচল; চারটি পোর্টেবল ওটি লাইটের দুটি অচল। সাকার মেশিন ৬০টির মধ্যে অচল ২০টি। অটোক্লেভ মেশিন ৩৫টির মধ্যে অচল ১৯টি। ১২টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটি অচল।
মেশিন নষ্ট থাকার কারণে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। সুযোগ নিচ্ছে হাসপাতালের আশেপাশে গড়ে ওঠা নামে-বেনামে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল। এসব ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল থেকে কমিশনে নিয়োগ দেয়া আছে দালালচক্র। যারা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে সেম্পল কালেকশন থেকে রিপোর্ট পর্যন্ত সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া হাসপাতালটিতে কর্মরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের দ্বারা রোগী ও স্বজনদের হেনস্তার অভিযোগ আসছে প্রায় সময়ই। হুইলচেয়ার, ট্রলি— এসব বাহন দিয়ে রোগীদের বহন করলে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এ অতিরিক্ত টাকার নাম ‘বকশিশ’।
হাসপাতালটি চিকিৎসা নিতে এসেছেন— এমন কজনের সঙ্গে কথা বলেন আমার সংবাদের এ প্রতিনিধি।
মুন্সীগঞ্জ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছেলের চিকিৎসা নিতে এসেছেন আজগর মিয়া। তিনি এর আগে কখনও আসেননি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তিনি বলেন, তার ছেলে গাছ থেকে পড়ে মেরুদণ্ডের হাড়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। এখানে ডাক্তার দেখানোর পর ডাক্তার তার এমআরআই করাতে বলেছেন। কিন্তু হাসপাতালটিতে এমআরআই বন্ধ থাকায় তিনি এখন কী করবেন— এ নিয়ে দিশাহারা।
স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য এসেছেন সাভারের জয়নুল হক। ডাক্তারের পরামর্শে করাতে হবে এমআরআই। টিকিট কাউন্টারে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলা হলো এমআরআই হচ্ছে না, মেশিন নষ্ট। তাকে টার্গেট করে ঘুরছিলেন কয়েকজন। যারা তাকে বলেছেন সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ঁঁ
প্রচলিত আছে দেশের কোনো হাসপাতালে কোনো রোগের চিকিৎসা না পেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) এলে সে রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায়। মানুষের চিকিৎসাসেবায় বহু বছর ধরে হাসপাতালটি সেবা দিয়ে আসছে। দেশসেরা সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পাশাপাশি কম মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আস্থার যায়গা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রায় সারা দেশের রোগী দিয়ে সব সময় তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না এ সেবাকেন্দ্রে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পেলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গেলে বাধে বিপত্তি। কারণ হাসপাতালটির গুরুত্বপূর্ণ অনেক মেশিনই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
আমার সংবাদের হাতে পাওয়া তথ্য বলছে, হাসপাতালটির তিনটি এমআরআই মেশিনের একটিও চলছে না দীর্ঘদিন। সিটিস্ক্যান মেশিনগুলো ধুঁকছে রোগীর চাপ সামলাতে। ডায়াথার্মির ৫২টির মধ্যে অচল ২৪টি, ১৩টি আলট্রাসনোগ্রামের মধ্যে আটটি অচল, অ্যানেসথেসিয়ার ৩৭টির যন্ত্রের মধ্যে দুটি, এনজিওগ্রামের তিনটি মেশিনের মধ্যে একটি, ৯টি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে চারটি, ইসিজির ১২টির মধ্যে চারটি অচল রয়েছে। ৩৪টি ওটি টেবিলের মধ্যে অচল চারটি; ৩৬টি ওটি লাইটের (সিলিং) মধ্যে তিনটি অচল; চারটি পোর্টেবল ওটি লাইটের দুটি অচল। সাকার মেশিন ৬০টির মধ্যে অচল ২০টি। অটোক্লেভ মেশিন ৩৫টির মধ্যে অচল ১৯টি। ১২টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটি অচল।
মেশিন নষ্ট থাকার কারণে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। সুযোগ নিচ্ছে হাসপাতালের আশেপাশে গড়ে ওঠা নামে-বেনামে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল। এসব ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল থেকে কমিশনে নিয়োগ দেয়া আছে দালালচক্র। যারা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে সেম্পল কালেকশন থেকে রিপোর্ট পর্যন্ত সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া হাসপাতালটিতে কর্মরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের দ্বারা রোগী ও স্বজনদের হেনস্তার অভিযোগ আসছে প্রায় সময়ই। হুইলচেয়ার, ট্রলি— এসব বাহন দিয়ে রোগীদের বহন করলে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এ অতিরিক্ত টাকার নাম ‘বকশিশ’।
হাসপাতালটি চিকিৎসা নিতে এসেছেন— এমন কজনের সঙ্গে কথা বলেন আমার সংবাদের এ প্রতিনিধি।
মুন্সীগঞ্জ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছেলের চিকিৎসা নিতে এসেছেন আজগর মিয়া। তিনি এর আগে কখনও আসেননি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তিনি বলেন, তার ছেলে গাছ থেকে পড়ে মেরুদণ্ডের হাড়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। এখানে ডাক্তার দেখানোর পর ডাক্তার তার এমআরআই করাতে বলেছেন। কিন্তু হাসপাতালটিতে এমআরআই বন্ধ থাকায় তিনি এখন কী করবেন— এ নিয়ে দিশাহারা।
স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য এসেছেন সাভারের জয়নুল হক। ডাক্তারের পরামর্শে করাতে হবে এমআরআই। টিকিট কাউন্টারে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলা হলো এমআরআই হচ্ছে না, মেশিন নষ্ট। তাকে টার্গেট করে ঘুরছিলেন কয়েকজন। যারা তাকে বলেছেন পাশেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আছে, যাতে রয়েছে এমআরআই করার ব্যবস্থা। রোগীকে সেখানে নিয়ে যেতে হবে। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সেখানে যান। সেখানে সরকারি খরচের প্রায় দ্বিগুণ টাকায় এমআরআই করাতে হয়েছে তাকে। রিপোর্ট নিয়ে এখন ছুটছেন কর্তব্যরত ডাক্তারের কাছে।
মেয়ের এক্স-রে করাতে জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন হোসনে আরা বেগম। মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি বলেন, গরিব মানুষ বলে আমরা এখানে আসি কম টাকায় চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এখানে এলে যুদ্ধ করা লাগে চিকিৎসা নিতে।
হাসপাতালটিতে কর্তব্যরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাসেবায় সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার যায়গা। এখানে ২৪ ঘণ্টাই সারা দেশ থেকে রোগী আসেন। সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। কিছু মেশিন নষ্ট হওয়ায় রোগীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা সময়মতো করাতে পারছেন না। এতে জরুরি রোগীদের সেবা দেয়া জটিল হচ্ছে।
মেশিন সংকট, দালালচক্র ও সেবার মান নিয়ে আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক কথা বলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২১৭টি মেশিন অকার্যকর হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন মেশিন ক্রয় একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেসব মেশিন নষ্ট বা অকার্যকর হয়ে গেছে, সেগুলোর বিপরীতে নতুন মেশিন আসছে। ঢাকা মেডিকেলে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি। রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
হাসপাতালটির নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের দ্বারা রোগী হেনস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে আমরা তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে পারি। মৌখিক কোনো অভিযোগে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। দালাল ও কমিশনচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের এখানে কয়েক স্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে। মাঝে মাঝে আমরা এসব চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তারও করেছি। প্রয়োজনে আবারও অভিযান চালানো হবে।