ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট

১৩ লাখ কোটি টাকা ধারের রেকর্ড

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২৪, ২০২৪, ১২:৫৬ এএম

১৩ লাখ কোটি টাকা ধারের রেকর্ড
  • এক বছরে বেড়েছে সাত গুণ
  • মুদ্রাবাজারের অস্থিরতাকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা
  • গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার
  • শরিয়াহ ব্যাংকের তারল্য কমেছে ২০ হাজার কোটি টাকা

আস্থার সংকটসহ নানামুখী চাপের কারণে তীব্র তারল্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে প্রতিনিয়তই অন্তঃব্যাংক থেকে ধার করছে ব্যাংকগুলো। এরপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে  হাত পাততে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে রেকর্ড ১৩ দশমিক শূন্য ৮ লাখ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের অর্থবছরের চেয়ে যা সাড়ে সাত গুণের মতো বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এক লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেয়া হয়। বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের আঁটসাঁট অবস্থার কারণেই নজিরবিহীন মাত্রায় এ সহায়তা দেয়ার প্রয়োজন হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। 

জানা গেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর ডলার সংকটের চাপ কমাতে, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। তবে এই পদক্ষেপে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা কিছুটা পূরণ হলেও এতে ব্যাংকগুলোর স্থানীয় মুদ্রার (টাকা) তারল্য একইসঙ্গে সঙ্কুচিত হয়েছে। এজন্যই তাদের বিপুল তারল্য সহায়তা দিতে হয়েছে। যার মধ্যে রেপোর মাধ্যমে ছয় লাখ ১১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর অ্যাসিউরড লিক্যুইডিটি সাপোর্টের (এএলএস) মাধ্যমে প্রাথমিক ডিলার ব্যাংকগুলোকে দেয়া হয়েছে ছয় লাখ ৯৭ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। তারল্য সহায়তার তুলনামূলক  ষ এরপর পৃষ্ঠা ১১ একটি পর্যালোচনায় তা ব্যাপকভাবে বাড়ার চিত্র উঠে এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ দুটি চ্যানেলের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। 

২০২০ সালে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ বেঁধে দেয়ার কারণে এই প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, স্বল্প সুদের কারণে ব্যাংকে আমানত রাখার আগ্রহ হারিয়েছিলেন সাধারণ গ্রাহক। ফলে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে  বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে টাকা ধার করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এএলএস ও রেপোর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া সহায়তা আগের অর্থবছরগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের আঁটসাঁট সরবরাহ পরিস্থিতি এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাজারে ডলার বিক্রির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সমর্থন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটি তাদের টাকায় তারল্যে সংকোচনমূলক প্রভাব ফেলে থাকতে পারে, যে কারণে রেপোতে ধারের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়ে। রেপো হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকগুলোকে স্বল্পমেয়াদি ধার দেয়ার উপায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে থাকা সিকিউরিটিজের বিপরীতে ধার দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক হচ্ছে ব্যাংকগুলোর ধার নেয়ার অন্যতম উৎস। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর ব্যাপক ডলারের প্রয়োজন আমদানি দায় মেটাতে। সে সময়ে ব্যাংকগুলো প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কেনায় তাদের তারল্যের সংকট দেখা দেয়। এ কারণে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট কাটাতে ব্যাপক পরিমাণে রেপো ও এএলএসের মধ্যেও টাকার ফান্ড সাপোর্ট দেয়া হয়। 

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত তিন বছরে ব্যাংকগুলোর কাছে রিজার্ভ থেকে ক্রমাগত ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১-২২ অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার এবং চলতি অর্থবছরের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিক্রি করেছে ৬.৭ বিলিয়ন ডলার। মূলত, খাদ্য, সার ও জ্বালানিসহ পাঁচ থেকে ছয় ধরনের পণ্য আমদানির দায় মেটাতে এসব ডলার বিক্রি করা হয়। গত ১৭ জানুয়ারি নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ব্যাংকে তারল্য সংকটের প্রধান কারণ ডলারের স্বল্পতা। 

গত তিন বছরে ব্যাংকগুলোর কাছে ২৮.৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার মাধ্যমে দুই লাখ ৮৪ হাজার টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে গেছে। কিন্তু, একই পরিমাণ টাকা বাজারে ঢোকানো হয়নি, যে কারণে তারল্য সংকট তৈরি হয়। 

তাছাড়া, গত বছরের আগস্টেই সরকারকে অর্থায়নের জন্য টাকা তৈরি করা বন্ধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে সরকারকে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ করতে হচ্ছে, যা তারল্যের ওপর চাপ তৈরি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান জানান, গত এক বছরে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য কমেছে সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালের জুনে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য ছিল ২৬ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। কিন্তু এক বছর পর ২০২৩ সালের জুনে তা কমে ১১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকায় নেমে আসে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এসব ব্যাংকের অতিরিক্ত তারল্য আরও কমে পাঁচ হাজার ৪৩০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টে দেখা যায়, গত ১১ বছরের মধ্যে ব্যাংক খাতের আমানতে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০২২ সালে। বছরটিতে ব্যাংকের আমানত বেড়েছে মাত্র ৫.৭ শতাংশ। ২০২১ সালেও ১০ শতাংশ হারে আমানত বেড়েছিল। সে হিসাবে এক বছরের মধ্যে আমানতের প্রবৃদ্ধি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। যদিও ২০১৩ সালে আমানতে ১৬.০৮ শতাংশ এবং তার আগের বছর ২০.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

 

Link copied!