ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান

রোগীর চাপ সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

জুন ১৩, ২০২৪, ১২:২২ এএম

রোগীর চাপ সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা
  • ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাড়ে রোগীর চাপ
  • জরুরি বিভাগে সার্বক্ষণিক অতিরিক্ত চিকিৎসক
  • সংকোচন করা হয়েছে চিকিৎসক-নার্সদের ছুটি

ঈদের ছুটিতে রোগীদের সেবায় কোনো ঘাটতি থাকবে না। যে কোনো জরুরি মুহূর্তে চিকিৎসাসেবা দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে আমাদের

—অধ্যাপক ডা. কাজী শামীমউজ্জামান
পরিচালক, নিটোর

ঈদ শব্দের সমার্থক যেন ‘আনন্দ’। ঈদে নাড়ির টানে অনেকে ফেরেন প্রিয়জনের কাছে। কখনো কখনো যাত্রাপথে সড়ক দুর্ঘটনায় আনন্দের যাত্রা বিষাদে রূপ নেয়। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের প্রয়োজন পড়ে জরুরি চিকিৎসার। দুর্ঘটনায় আহত বেশিরভাগ রোগীই হাড় ভাঙা অথবা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। সারা দেশের হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোয় তখন চিকিৎসকসংখ্যা কিছু কম থাকলেও বিপরীত চিত্র পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর)। ঈদযাত্রাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত জটিল রোগীদের চিকিৎসার সবশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত হাসপাতালটি। গত ঈদুল ফিতরের আগে ও পরের এক সপ্তাহে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৫০০’রওবেশি অতিরিক্ত রোগী। যাদের বেশিরভাগই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। 

কোরবানির ঈদে সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয় গরুর আঘাতে আহত রোগী এবং কোরবানির কাজ করার সময় অনেকে বিভিন্নভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঈদে চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগ রোগীই আসেন ঢাকার বাইরে থেকে। দুর্ঘটনার পর প্রথমে তারা স্থানীয় হাসপাতালগুলোয় যাওয়ার পর সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়। অনেকে আবার স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে ঢাকায় রওনা দেন। ফলে পঙ্গু হাসপাতালে পৌঁছাতে রাত হয়ে যায়। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেরোগীর চাপও বাড়তে থাকে এ হাসপাতালে। এ সময় হাসপাতালটির চিকিৎসক-নার্সদের দম ফেলার সুযোগ থাকে না। 

রোজার ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিয়েছেন— এমন বেশ কজনের সঙ্গে কথা হয় আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের। তাদের মধ্যে একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব আহমেদ। তিনি বলেন, ঈদের দিন আমি বন্ধুদের সঙ্গে মাওয়া ফেরিঘাট গিয়েছিলাম ঘুরতে। আসার সময় ট্রাকের ধাক্কায় বাম পায়ে আঘাত পাই। দুর্ঘটনায় অজ্ঞান হয়ে গেলে বন্ধুরা হাসপাতালটিতে নিয়ে আসেন। এখানে যখন আমাকে নিয়ে আসা হয়, তখন রাত প্রায় ৩টা। ঈদের ছুটির মাঝে এসেও এখানে আমি তাৎক্ষণিক ভালো চিকিৎসা পেয়েছি।

হাসপাতালটিতে প্রতিদিন শুধু বহির্বিভাগেই সেবা নিতে আসেন প্রায় ৪০০-৫০০ রোগী। হাসপাতালটির বর্তমান বেডসংখ্যা এক হাজার। এক হাজার বেডের হাসপাতাল হলেও রোগী ভর্তি থাকছেন ধারণক্ষমতার দেড় থেকে দ্বিগুণ। কখনো কখনো রোগীর চাপ এত বেশি বাড়ে যে, অনেকে বেড খালি না পেয়ে আশ্রয় নেন হাসপাতাল বারান্দায়। এতসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা রোগীর সেবাকে দেখছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। হাসপাতালটির সেবা নিয়ে ইতিবাচক ধারণাও পাওয়া যায় রোগী ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে। 
হাসপাতালটিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন কিশোরগঞ্জ থেকে আসা হোসেন আলীর ছেলে। তিনি বলেন, আমার ১২ বছর বয়সি ছেলে মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পায়। স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু তারা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেছেন। এখানের চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছেন তার পায়ের হাড়ে কয়েকটি ফাটল দেখা দিয়েছে। সারতে সময় লাগবে। হাসপাতালের চিকিৎসা সম্পর্কে তিনি বলেন, এখানে সব মিলিয়ে চিকিৎসা ভালো। সারা দেশের রোগী আসে বলে বাড়তি চাপ থাকে। চিকিৎসকরা নিয়মিত ওয়ার্ডে এসে আমার ছেলেকে দেখে যান। তারা বলছেন, আর এক সপ্তাহ পর ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারব।

হাসপাতালটির একজন চিকিৎসক আমার সংবাদকে বলেন, হাড় ভাঙার চিকিৎসা বেশ দীর্ঘ। হাড়ের কন্টিনিউটিতে যখন ছেদ পড়ে, তখনই তাকে হাড় ভাঙা বলে। পুরোপুরি ভাঙলে বলা হয় কমপ্লিট ফ্র্যাকচার আর ইনকমপ্লিট ফ্র্যাকচারে একটা দিক ভাঙে, আরেকটা দিক ঠিক থাকে। তারপর আছে ক্লোজড ফ্র্যাকচার। এতে বাইরের ত্বক ঠিক থাকে; কিন্তু ভেতরের হাড় ভেঙে যায়। ওপেন ফ্র্যাকচারও আছে। তাতে হাড় ত্বক ফুটো করে বেরিয়ে আসে। আর ডিসপ্লেসড ফ্র্যাকচারে হাড়ের দুটো টুকরো ভেঙে আলাদা হয়ে যায় এবং আনডিসপ্লেসড ফ্র্যাকচার হলে হাড় নিজের জায়গায় থেকেই ভাঙে। মানুষের শরীরে হাড় এমন জিনিস, যার আলাদা যত্নআত্তি লাগে না; তাই এর মর্মও বোঝা হয় না সহসা। তবে ভাঙলে বা চিড় ধরলে রক্ষা পেতে সময় লাগে অনেক। হাড় ভাঙার প্রাথমিক চিকিৎসা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হাত বা পায়ের ক্ষেত্রে হাড় মোটামুটি সোজা করে কোনো শক্ত কাঠ, লাঠি বা কার্ডবোর্ডের সঙ্গে কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হয়, যেন জায়গাটা সোজা থাকে। অনেক ভাঙার পর হাত বা পা বেঁকে যায়, তাকে সোজা অবস্থায় আনাটাই প্রাথমিক চিকিৎসা। আমাদের হাসপাতালে সব জটিল রোগীরা আসেন। দেখা গেছে, অনেকেই স্থানীয় পর্যায়ে ভুল চিকিৎসা করে অবস্থা আরও জটিল করে ফেলেন। এতে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন, তাই আমাদের পরামর্শ হাড়ে আঘাত পেলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিন। এতে পঙ্গুত্ব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

ঈদে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালটিতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এ বিষয়ে নিটোর পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী শামীমউজ্জামানের সঙ্গে কথা হয় আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ঈদে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আমাদের হাসপাতালে সাধারণ সময়ের চেয়ে বাড়তি রোগীর চাপ থাকে। এ সময়ে আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা ঈদের আনন্দ রোগীদের সঙ্গেই ভাগাভাগি করে নেন। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষেও আমরা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি। চিকিৎসকদের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে তাদের অবহিত করা হয়েছে। অনেকের ছুটি সংকোচন করা হয়েছে। হাসপাতালের সব বিভাগ খোলা থাকবে। বিশেষ করে জরুরি বিভাগের জন্য বাড়তি জনবল রাখা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য ঈদের দিন বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসামগ্রী মজুত রয়েছে। জরুরি মুহূর্তে যে কোনো প্রয়োজনে রয়েছে বিশেষ টিম। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও বর্তমানে ভর্তি থাকা রোগীদের সেবায় কোনো ঘাটতি থাকবে না আশা করি।
 

Link copied!